অমিত মিত্র
গত সপ্তাহে দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক সেরে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিএসটি প্রসঙ্গে জানিয়েছিলেন, সংবিধান সংশোধন হয়ে গিয়েছে। সব রাজ্যকেই তা মানতে হবে। তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে মঙ্গলবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র জানিয়ে দিলেন যে, আগামী ৩ জুন জিএসটি পরিষদের বৈঠকে সামিল হবেন তিনি।
হাতে গোনা কিছু পণ্য ও পরিষেবা ছাড়া বাকি সমস্ত কিছুর করের হার ঠিক হয়ে গিয়েছে গত ১৮ ও ১৯ মে শ্রীনগরে পরিষদের বৈঠকে। কিন্তু সেখানে গরহাজির ছিলেন অমিতবাবু। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি ছিল, তাঁরা জিএসটি-বিরোধী না-হলেও, এখনই ওই কর চালুর জন্য তৈরি নয় রাজ্য। তাই সেই অর্থে এ বার পরিষদের বৈঠকে তাঁর যোগ দিতে যাওয়া যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
অনেকে বলছেন, যে-সমস্ত পণ্য-পরিষেবায় কর ঠিক হওয়া বাকি, তার মধ্যে রয়েছে সোনার গয়না ও বিড়ি। দু’টি শিল্পের সঙ্গেই এ রাজ্যের বহু মানুষের রুজি-রোজগার জড়িত। তাই তা ঠিক হওয়ার বৈঠকে অনুপস্থিত থাকার ঝুঁকি নিতে চায় না রাজ্য।
অমিতবাবু বলেন, রাজ্যের দাবি ছিল, সমস্ত খাদ্যশস্য করমুক্ত করতে হবে। কাঁচা আনাজে কর বসানো চলবে না। তাঁর দাবি, ‘‘ছানা, মুড়ি, চিঁড়ে, খই, সিঁদুর, আলতা, চুড়ি, এমনকী, চা পাতার উপরেও কর বসাতে চেয়েছিল কেন্দ্র। আমরা প্রতিবাদ করেছি। জুতো-চটির উপরে ১২% কর বসানোর প্রস্তাব ছিল। আমরা মানিনি।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘চর্মশিল্প, বইয়েও ২৮% কর বসানোর প্রস্তাব রয়েছে। সংবাদপত্রকে ছাড় দিলেও কেন্দ্র নিউজপ্রিন্টের উপরে কর বসাতে চাইছে। আমরা তা নিয়ে লড়ছি।’’
জিএসটি চালু হওয়ার অন্যতম শর্ত, বিধানসভায় রাজ্য-জিএসটি (স্টেট জিএসটি) বিল পাশ করানো। অন্য অনেক রাজ্যে তা পাশ হয়ে গেলেও, এ রাজ্যে এখনও হয়নি। সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘বিধানসভায় আসার আগে জট কাটতে হবে।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্র কেন এত তাড়াহুড়ো করছে, বুঝতে পারছি না।’’ তবে সূত্রের খবর, বিধানসভায় বিশেষ অধিবেশন ডেকে ওই বিল পাশ করাবে সরকার। তার আগে কেন্দ্রের সঙ্গে খানিকটা দর কষাকষির রাস্তা খোলা রাখা হচ্ছে।
এ দিন কেন্দ্রীয় রাজস্ব সচিব হাসমুখ অঢিয়াও বলেছেন, ১ জুলাই থেকেই জিএসটি চালু হবে বলে আশা। তবে পরে প্রয়োজনে করের হার কিছুটা অদলবদলের রাস্তা খোলা থাকছে বলে জানিয়েছেন তিনি।