—প্রতীকী চিত্র।
উৎসবের আনন্দকে অনেকটাই ম্লান করেছে বহু মানুষের হাতে কাজ না থাকা— দেশে চড়া বেকারত্বের সাম্প্রতিকতম পরিসংখ্যান তুলে ধরে বুধবার এই মন্তব্য করলেন রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী এবং বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান মুখ্য উপদেষ্টা অমিত মিত্র। এক্স হ্যান্ডেলে এ নিয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণও শানিয়েছেন তিনি। এক্স-এই কেন্দ্রের প্রাক্তন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কৌশিক বসু লিখেছেন, ভারতীয় অর্থনীতির মৌলিক উাপাদনগুলি ক্ষয়ে যাচ্ছে। দেশের মানুষের মধ্যে বেড়ে ওঠা আর্থিক বৈষম্যকে স্বাধীনতা-পূর্ব সময়ের সঙ্গেও তুলনা করেছেন তিনি।
অমিতবাবু বেসরকারি উপদেষ্টা সিএমআইইয়ের দেওয়া তথ্য তুলে বলেন, অক্টোবরে উৎসবের মরসুমের মধ্যেই কর্মহীন মানুষের সংখ্যা ৪.৭০ কোটি ছুঁয়েছিল। যা নজিরবিহীন। বেশির ভাগই অল্প বয়সি। তাঁর দাবি, স্পেনের জনসংখ্যার সমান ভারতে বেকারদের সংখ্যা। বিশ্ব ব্যাঙ্কের এক রিপোর্টের কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি। যেখানে বলা হয়, ২০২২-এ দেশে যুব সমাজে বেকারত্ব ছুঁয়েছিল ২৩.২২%। অমিতের কথায়, ‘‘ভারতে বেকারত্ব যখন সর্বকালীন রেকর্ড ২৩.২২ শতাংশে ঠেকেছে, তখন বাংলাদেশে তা ১২.৯% শতাংশ এবং ভূটানে ১৪.৪%।’’
কেন্দ্রকে দুষে অমিতবাবুর মন্তব্য, মোদী সরকার বিরক্তিকর ভাবে ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ (সকলের পাশে, সকলের উন্নয়নে) স্লোগান দেয়। কিন্তু তিক্ত বাস্তব চড়া বেকারত্বই। তাঁর প্রশ্ন, “দেশে আর্থিক বৈষম্য যে ভাবে বেড়েছে, তাতে ওই স্লোগান প্রহসন নয় কি? কার সঙ্গে থাকা, কারই বা উন্নয়ন? প্রধানমন্ত্রীর ভেবে দেখা উচিত, কোন ভারতকে নিয়ে তিনি ‘অমৃত কালের’ দিকে এগোচ্ছেন।’’
কৌশিকের দাবি, প্রকৃত তথ্যে চোখ রাখলে স্পষ্ট, দেশের মৌলিক ভিতটা ক্ষয়ে যাচ্ছে। তরুণদের মধ্যে বেকারত্ব রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। সঞ্চয়, লগ্নির হার নেমেছে ২০ বছরের তলানিতে। তিনি বলেন, ১৯৪৭-এ দেশ স্বাধীন হওয়ার আগের মতো শীর্ষে থাকা মুষ্টিমেয় কিছু বিত্তবানের হাতে সম্পদ পুঞ্জীভূত হয়েছে।
অমিতবাবুর আক্ষেপ, বেকারত্বের জ্বালায় শুধু কাজ না পাওয়া ছেলেমেয়েরা ভুগছেন না। আনন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁদের পরিবারের সদস্যেরাও। তাঁর দাবি, অক্টোবর উৎসবের মরসুম। জিনিসপত্রের চাহিদা বাড়ে। বেড়ে যায় কাজের জোগানও। অথচ এই সময়েই বেকারত্ব রেকর্ড গড়েছে। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘কেন্দ্র, বিশেষত তার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বড় গলা করে বলছেন ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হিসাবে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে। অথচ আর্থিক বৃদ্ধির সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সিংহভাগ মানুষ। লাভবান শুধু উপরের সারির হাতে গোনা কয়েক শতাংশ বিত্তবান।