ফাইল চিত্র।
করোনায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে আমজনতার জীবন যখন দুর্বিষহ, তখন পেট্রল-ডিজেলের চড়তে থাকা দাম দুর্দশা আরও বাড়িয়েছে। অথচ সেই দামের বড় অংশ উৎপাদন শুল্ক
হিসেবে রাজকোষে ঢুকে অতিমারি-জনিত বাড়তি খরচের চাপ থেকে অনেকটাই বাঁচিয়েছে কেন্দ্রকে। সোমবার সংসদে একাধিক প্রশ্নের উত্তরে সরকারের দেওয়া তথ্য বলছে, গত অর্থবর্ষে তেলের শুল্ক খাতে আয় হয়েছে ৩.৩৫ লক্ষ কোটি টাকা। যেখানে এক বছর আগে হয়েছিল ১.৭৮ লক্ষ কোটি। বৃদ্ধির হার ৮৮%। এ বছর এপ্রিল-জুনেও এই বাবদ রাজস্ব আয় হয়েছে ৯৪,১৮১ কোটি।
তার পরেই তোপ দেগেছেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। পেট্রোপণ্যের চড়া দাম, তা থেকে কেন্দ্রের বিপুল শুল্ক আদায় এবং গ্যাসে ভর্তুকি ছাঁটার পদক্ষেপকে ‘নিষ্ঠুর’ তকমা দিয়ে আক্রমণ শানিয়েছেন।
এ দিন তৃণমূলের মালা রায়-সহ বিরোধী সাংসদদের একগুচ্ছ প্রশ্নের প্রেক্ষিতে তেলমন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী এবং প্রতিমন্ত্রী রামেশ্বর তেলির লিখিত উত্তরেই স্পষ্ট হয়, কী বিপুল হারে শুল্ক বাড়িয়ে আয় করেছে কেন্দ্র। এমনকি দেখা যায়, যে অশোধিত তেলের ‘চড়া’ দরকে পেট্রল-ডিজেলের দাম বৃদ্ধির জন্য দায়ী করা হয়, সেটিও গত বছর এপ্রিলে ব্যারেলে মাত্র ১৯.৯০ ডলারে কিনেছিল তারা। পরের ক’মাস তা ছিল ৩০-৫০ ডলারের মধ্যে। যদিও তার প্রতিফলন ভারতবাসী দেখেনি।
তেলের দাম কমাতে বার বার উৎপাদন শুল্ক কমানোর আর্জি উঠেছে। কিন্তু বরাবর মন্ত্রীরা দাবি করেছেন, ওই শুল্কের টাকা করোনা মোকাবিলার অন্যতম তহবিল। এ দিনও তেলি বলেন, পরিকাঠামো ও উন্নয়নমূলক কাজে খরচের জন্যই পেট্রল-ডিজেলের শুল্ক ধার্য হয়। আর তেল মন্ত্রকের দাবি, অশোধিত তেলের দর, ডলার-টাকার বিনিময়মূল্য, কর কাঠামো— এ সব খতিয়ে দেখে সেই অনুযায়ীই দাম স্থির করে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি।