কৃষিতে বিনিয়োগের প্রশ্নে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ যে রয়ে গিয়েছে, তা মেনেছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রতীকী ছবি।
ফের চাপান উতোর।
গত ১০ বছরে দেশের কৃষি ক্ষেত্রে বাজেট বরাদ্দের আয়তন অন্তত পাঁচ গুণ বেড়েছে বলে শুক্রবার দাবি করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জানালেন, ‘‘২০১৪-তে এই খাতে বরাদ্দ ছিল ২৫ হাজার কোটি টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে ১.২৫ লক্ষ কোটি।’’ যা শুনে বিরোধীদের পাল্টা প্রশ্ন, কৃষি ক্ষেত্রে বরাদ্দ বাড়লেও, কৃষকদের আয় বেড়েছে কি? তাদের একাংশের কটাক্ষ, প্রথমে ২০১৯ এবং তার পরে ২০২২ সালের মধ্যে কৃষকদের রোজগার দ্বিগুণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল মোদী সরকার। তা কতটা বাস্তবায়িত হল সেটা বরং স্পষ্ট করুন প্রধানমন্ত্রী।
পয়লা ফেব্রুয়ারি ঘোষিত কেন্দ্রীয় বাজেটের মূলত ১২টি বিষয় নিয়ে গতকাল থেকে নেট মারফত বক্তব্য রাখা শুরু করেছেন মোদী। আজ ছিল কৃষি এবং সমবায়। সেখানেই তিনি বলেন, তাঁর আমলে কৃষিতে বরাদ্দ অর্থ বেড়েছে প্রায় পাঁচ গুণ। বেড়েছে ভোজ্য তেলের চাষ। ফলে বিদেশ থেকে সেটির আমদানি কমেছে। অতীতে কৃষি-প্রযুক্তি সংক্রান্ত নতুন সংস্থার (স্টার্ট আপ) সংখ্যা নগণ্য ছিল দাবি করে কেন্দ্রের প্রযুক্তিবান্ধব নীতিকেও তুলে ধরেন তিনি। বার্তা দেন, এতে ভর করেই এই ক্ষেত্রে দেশে নতুন উদ্যোগ এখন প্রায় ৩০০০।
যদিও কৃষিতে বিনিয়োগের প্রশ্নে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ যে রয়ে গিয়েছে, তা মেনেছেন প্রধানমন্ত্রী। যার অন্যতম বেসরকারি লগ্নি টানার ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা। যে কারণে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের নিরিখেও অন্যান্য ক্ষেত্রগুলিতে যে অগ্রগতি চোখে পড়ে, তার ছিঁটেফোঁটাও নেই কৃষিতে। তবে মোদীর দাবি, এ বারের বাজেটে নেওয়া একাধিক সিদ্ধান্ত সেই খামতিগুলিকে দূর করতে সক্ষম।
তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘২০১৪ সালে মোদীর দল নির্বাচনী ইস্তাহারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সরকারে আসলে ২০১৯-এর মধ্যে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ হবে। ২০১৭ সালে তারা জানায়, ২০১৯ নয়, এই লক্ষ্য পূরণ হবে ২০২২-এর মধ্যে। কিন্তু তা হয়নি। উল্টে কৃষকদের অবস্থা আরও শোচনীয় হয়েছে। এখন আর ওই প্রসঙ্গে কোনও উচ্চবাচ্য করেন না প্রধানমন্ত্রী বা তাঁর মন্ত্রীরা। কৃষকদের আয় দ্বিগুণের দাবি পূরণে সরকার কতটা সক্ষম হয়েছে, সেই তথ্য বরং দেশবাসীকে জানান প্রধানমন্ত্রী।’’
উল্লেখ্য, বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহারের সময়ে সংসদে সরকার বলেছিল, ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের প্রশ্নে আইনি প্রতিশ্রুতিদেবে তারা। সুখেন্দুশেখরের কথায়, ‘‘সেই ঘোষণার পরে সংসদের চারটি অধিবেশন পেরিয়েছে। সহায়ক মূল্য নিয়ে কোনও বিল আসেনি। আসলে এই সরকার কৃষি বিরোধী। ছাড় দেয় শুধু কর্পোরেটদের।’’