Construction

পেশকে পুরনো চা গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ

প্রশাসনিক সূত্রের বক্তব্য, চা বাগান পর্যটন নীতি অনেক আগেই চালু করেছে রাজ্য সরকার। তার অধীনে ওই পরিকাঠামো গড়া হচ্ছে কি না, তা নিয়ে চলছে চর্চা। যদিও রাজ্যের তরফে কোনও বক্তব্য মেলেনি।

Advertisement

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ০৯:৩৬
Share:

অভিযোগ, কংক্রিটের পরিকাঠামো তৈরির জন্যই পুরনো চা গাছগুলি কাটা হয়েছে। —ফাইল চিত্র।

চা বাগানে নতুন পরিকাঠামো তৈরি করতে গিয়ে পুরনো শতাধিক চা গাছ উপড়ে ফেলার অভিযোগ ঘিরে শোরগোল পড়েছে। একগুচ্ছ অভিযোগ পেয়েছে কেন্দ্রও। সেগুলি রাজ্যকে লিখিত ভাবে জানিয়েছে তারা। প্রশাসনিক সূত্রের বক্তব্য, চা বাগান পর্যটন নীতি অনেক আগেই চালু করেছে রাজ্য সরকার। তার অধীনে ওই পরিকাঠামো গড়া হচ্ছে কি না, তা নিয়ে চলছে চর্চা। যদিও রাজ্যের তরফে কোনও বক্তব্য মেলেনি।

Advertisement

অভিযোগ, দার্জিলিংয়ের পেশক চা বাগানে কংক্রিটের পরিকাঠামো তৈরির জন্যই পুরনো চা গাছগুলি কাটা হয়েছে। প্রশাসনের একাংশের বক্তব্য, সাধারণত রাজ্য এই ধরনের জমি লিজ়ে দেয়। রাজ্য ও লিজ়প্রাপকের চুক্তি হয়। তাতে বলা থাকে— রাজ্য তথা লিজ়দাতার অনুমতি ছাড়া লিজ়প্রাপক চাষের এলাকা অন্য কাজে ব্যবহার করতে পারবে না। কাটতে পারবে না গাছ। তা করতে গেলে সরকারের সায় লাগবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র এটা-ও মনে করাচ্ছেন, চা পর্যটন নীতিতে যেখানে চা গাছ নেই, সেখানেই ১৫% জমি পর্যটনের কাজে লাগানো যায়। দার্জিলিং জেলার এক প্রশাসনিক কর্তার কথায়, “বন এবং চায়ের জমিগুলি আলাদা শাখার আওতাভুক্ত। সেই শাখা দার্জিলিং জেলাশাসকের আওতায়। অর্থাৎ, রাজ্যের তরফে লিজ়দাতা সেই জেলাশাসকই।” তার পরেও কী ভাবে কয়েকশো চা গাছ কাটা পড়ল, উঠছে প্রশ্ন। যদিও পেশক চা বাগান নিয়ে দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক প্রীতি গোয়েল কিছুই বলতে চাননি। জবাব দেননি মোবাইল বার্তারও।

এ মাসেই গোয়েলকে চিঠি দিয়ে কেন্দ্র জানিয়েছে, ওই বাগানে পার্কিং এলাকা গড়তে শতাধিক গাছ উপড়ে ফেলা হয়েছে। অথচ দার্জিলিং জিআই নথিভুক্ত (ভৌগোলিক ভাবে চিহ্নিত)। সেখানকার ৮৭টি চা বাগানের একটি পেশক। বিকল্প গাছ না বসিয়ে স্থায়ী ও পুরনোগুলি কেটে ফেলা জিআই-এর নীতি বিরুদ্ধ। তা সরকারি লিজ়-বিধিরও পরিপন্থী। তা ছাড়া, বিকল্প গাছ রোপণ না হলে পাহাড়ে মাটির বাঁধুনি নষ্ট হতে পারে। তাতে ভূমিক্ষয়ের আশঙ্কা। এমন দৃষ্টান্ত বাকি জায়গাগুলি অনুসরণ করলে, তা চা চাষ-সহ গোটা প্রকৃতিতে খারাপ প্রভাব ফেলবে। তাই জেলা প্রশাসনকে কেন্দ্রের পরামর্শ, বিকল্প গাছ রোপণ করা হোক। রাজ্যের শ্রম দফতর এবং পিএফ কমিশনারকেও সংশ্লিষ্ট চা বাগানে শ্রমিকদের মজরি, গ্র্যাচুইটি নিয়ে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বলেছে তারা। এই ব্যাপারে রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী তথা চা বাগান নিয়ে ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র মলয় ঘটককে ফোন করা হলে তিনি তা ধরেননি। জবাব মেলেনি তাঁকে পাঠানো মোবাইল বার্তারও।

Advertisement

সম্প্রতি রাজ্যের ছ’টি উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছে শাসকদল তৃণমূল। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে মাদারিহাট আসনটিও ছিনিয়ে নিয়েছে তারা। যা আগে ছিল সিপিএমের দখলে। পরে বিজেপির হাতে যায়। ২০১১-এ ক্ষমতায় আসার প্রায় ১৩ বছর পরে চা বাগান অধ্যুষিত ওই এলাকার উপনির্বাচনে তৃণমূল জয়লাভ করেছে অনেকটা ব্যবধানে। বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, এ বার চা বাগান সংক্রান্ত বিষয়গুলিতে নজর দেওয়ার বাড়তি দায়িত্ব চাপবে তাদের উপরে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement