প্রতীকী ছবি।
এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার অভিযোগ তুলছেন, করোনা যুঝতে কেন্দ্রের থেকে যথেষ্ট সাহায্য মিলছে না। তারা রাজ্যের আর্থিক পাওনাও মেটাচ্ছে না। এই অভিযোগকে সামনে রেখেই এ বার রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এককাট্টা হচ্ছেন। এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে সব রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা বৈঠকে বসতে পারেন।
অর্থ মন্ত্রক রাজ্যের জিএসটি ক্ষতিপূরণ মেটাচ্ছে না বলে পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, পঞ্জাবের মতো বিরোধী শাসিত রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা সরব। কেরলের বাম সরকার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলাও করবে। কেরলের অর্থমন্ত্রী টমাস আইজ়্যাক চাইছেন, অন্য রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা তাঁর সঙ্গে যোগ দিন। এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহের বৈঠক ডেকে তিনি এই প্রস্তাব দিতে চাইছেন। পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে জানিয়েছেন, জানুয়ারি পর্যন্ত জিএসটি ক্ষতিপূরণ বাবদ রাজ্যের ১৭৭৫ কোটি টাকা মেলেনি। ফেব্রুয়ারি-মার্চের পাওনা যোগ হলে ২৮৭৫ কোটি বকেয়া। রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের অভিযোগ, করোনা যুঝতে বাড়তি সাহায্য দূরে থাক, কেন্দ্র প্রাপ্য অর্থই মেটাচ্ছে না।
রাজ্যের কোষাগারগুলির যে হাঁড়ির হাল, তা নিয়ে আজ পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের বৈঠকেও কথা হয়েছে।
আজ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক রাজ্যগুলির সুবিধার্থে ১৪ দিনের বদলে ২১ দিনের জন্য ওভারড্রাফ্ট করার অনুমতি দিয়েছে। একটি ত্রৈমাসিকে ৩৬ দিনের বদলে ৫০ দিন ওভারড্রাফ্টে থাকতে পারবে রাজ্য। এর আগে রাজ্যের দাবি মেনে নগদের অভাব মেটাতে ৩০% অগ্রিম ঋণের অনুমতি দিয়েছিল কেন্দ্র। কিন্তু রাজ্যগুলি মনে করছে, এটা যথেষ্ট নয়। রাজ্যের রাজকোষ ঘাটতি বাড়ানোর অনুমতি প্রয়োজন।
মমতা প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে দাবি তুলেছিলেন, রাজ্যের রাজকোষ ঘাটতি ৩% থেকে বাড়িয়ে ৫% করার অনুমতি দেওয়া হোক। এ বিষয়ে অমিতবাবু নির্মলার সঙ্গে কথা বলেছেন। কেরল ও অন্যান্য রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরাও এই যুক্তির সঙ্গে একমত।
আইজ়্যাকের মতে, কেন্দ্রের নিজের রাজস্ব আয় কমে যাওয়ায়, কেন্দ্রীয় করের ভাগ হিসেবে রাজ্যের প্রাপ্যও কমছে। এ দিকে করোনার মোকাবিলায় খরচ করা ছাড়া উপায় নেই। ফলে উন্নয়নের খরচ কাটছাঁট করতে হচ্ছে। কিন্তু আর্থিক সঙ্কটের সময় উন্নয়নের খরচ কমালে অর্থনীতির আরও ক্ষতি হবে। এই অবস্থায় অর্থবর্ষের শুরুতেই অনেকখানি ধার করতে হচ্ছে। আইজ়্যাকের দাবি, রাজ্যের রাজকোষ ঘাটতি অন্তত ১ শতাংশ বিন্দু বাড়াতে দিতে হবে।