Digital Rupee

ই-টাকা কী? ক্রিপ্টোকারেন্সির সঙ্গে এর পার্থক্য কোথায়?

আপনার টাকা আপনি ই-টাকায় বদলে এই ওয়ালেটে রাখতে পারবেন এবং তা ব্যবহার করতে পারবেন প্রথাগত টাকা লেনদেন যে ভাবে করেন সে ভাবেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২২ ১৪:৪৯
Share:

ই-টাকা দেওয়ার বৃত্তে ঢুকবে ব্যাঙ্ক অফ বরোদা, ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক, এইচডিএফসি এবং কোটাক মহীন্দ্রা ব্যাঙ্ক। প্রতীকী ছবি।

অবশেষে আপনার আমার মোবাইলে ই-টাকা। ডিসেম্বরের প্রথম দিন থেকেই দিল্লি, মুম্বই, ভুবনেশ্বর এবং বেঙ্গালুরুতে পরীক্ষামূলক ভাবে চালু হতে চলেছে ই-টাকার ব্যবহার। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক প্রথম পর্যায়ে এই ডিজিটাল টাকার খুচরো ব্যবহারের জন্য যে চারটি ব্যাঙ্ককে বেছে নিয়েছে তার হল স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক, ইয়েস ব্যাঙ্ক এবং আইডিএফসি ফার্স্ট।

Advertisement

দ্বিতীয় পর্যায়ে এই পরীক্ষার সামিল হবে আমদাবাদ, গ্যাংটক, গুয়াহাটি, হায়দরাবাদ, ইনদউর, কোচি, লখনউ, পটনা এবং সিমলা। ই-টাকা দেওয়ার বৃত্তে ঢুকবে ব্যাঙ্ক অফ বরোদা, ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক, এইচডিএফসি এবং কোটাক মহীন্দ্রা ব্যাঙ্ক।

প্রথম দুই তালিকায় অবশ্য কলকাতা নেই।

Advertisement

ই-টাকা কী

  • ই-টাকা হল আমরা যে নোট লেনদেনের জন্য ব্যবহার করি তার ডিজিটাল রূপ
  • এর জন্য ব্যবহারকারীর ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট থাকা জরুরি নয়
  • এই টাকা ম্যানিব্যাগের বদলে থাকবে আপনার মোবাইলের ডিজিটাল ওয়ালেটে।
  • নির্দিষ্ট ব্যাঙ্কগুলির ই-টাকার ওয়ালেট আপনাকে মোবাইলে ডাউনলোড করতে হবে।
  • আপনার টাকা আপনি ই-টাকায় বদলে এই ওয়ালেটে রাখতে পারবেন এবং তা ব্যবহার করতে পারবেন প্রথাগত টাকা লেনদেন যে ভাবে করেন সে ভাবেই। শুধু ম্যানিব্যাগ থেকে নোট না বার করে আপনার ওয়ালেট থেকে অন্যের ওয়ালেটে তা পাঠিয়ে দিতে হবে।
  • ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টেও নোটের বদলে ই-টাকা জমা দিতে পারবেন।
  • এখন যে ভাবে কিউআর কোড স্ক্যান করে আপনি ওয়ালেট থেকে টাকা দেন, ঠিক সে ভাবেই লেনদেন করতে পারবেন। অথবা প্রাপকের ওয়ালেট আইডি-তে পাঠাতে পারবেন ই-টাকা। সুবিধাটা হল এই লেনদেন ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট নির্ভর নয়। নগদে যে ভাবে বাজার করেন, সে ভাবেই ব্যবহার করবেন এই ওয়ালেট। ফারাক হবে শুধু মাধ্যমের।
  • এর ফলে দেশের টাকা ছাপার খরচ কমবে। কিন্তু টাকার উপর শীর্ষ ব্যাঙ্কের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকবে।
  • এর ফলে নগদ বয়ে বেরানোর ঝক্কিও থাকবে না।
  • প্রথাগত নগদের লেনদেনের উপর সরকারের নজরদারি যেমন কঠিন, তা কিন্তু এই লেনদেনে থাকবে না।

ই-টাকা ক্রিপ্টো নয়

ক্রিপ্টোকারেন্সি আর ই-টাকা কিন্তু এক নয়। ক্রিপ্টোকারেন্সির উপর সরকারের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। ক্রিপ্টো তৈরি হয় এক জটিল পদ্ধতির মাধ্যমে যার পুরোটাই বেসরকারি উদ্যোগে। একে মাইনিং বলে। নানান গাণিতিক সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে তৈরি হয় ক্রিপ্টো। তাই ক্রিপ্টোর সংখ্যা চাইলেই বাড়ানো সম্ভব নয়। যে হেতু এর জোগান চাহিদার উপর নির্ভর করে না, তাই এর দামও চাহিদা বাড়া বা কমার নির্ভর করে ওঠাপড়া করে। কিছুটা সোনার মতোই।

কিন্তু ই-টাকার সরবরাহ নির্ভর করবে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মুদ্রানীতির উপর। বাজারে কত টাকা ছাড়া হবে তা নির্ভর করবে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের উপর। তার কত অংশ ই-টাকা হিসাবে লেনদেনের মাধ্যম হবে তা আবার নির্ভর করবে আমাদের চাহিদার উপর। কিন্তু বাজারে নগদের জোগান কমানো বা বাড়ানোর উপর শীর্ষ ব্যাঙ্কের পূ্র্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকবে এখনকার মতোই।

কোন কোন দেশে ই-মুদ্রা চালু আছে

বাহামাস, সেন্ট কিটস, গ্রেনাডা, অ্যান্টিগার মতো কয়েকটি দেশে ইতিমধ্যেই চালু হয়ে গিয়েছে ই-মুদ্রা। রাশিয়ায় পরীক্ষামূলক ব্যবহার শেষ হয়ে সবার ব্যবহারের জন্য চালু হওয়ার রাস্তা। চিনও তৈরি। বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলিও এ নিয়ে ভাবনা চিন্তা করছে।

কয়েকটি সুবিধা

  • ডিজিটাল লেনদেনের বর্তমান ব্যবস্থায় প্রতিটি লেনদেনের জন্য আপনাকে একটা কমিশন দিতে হয় যার ওয়ালেট ব্যবহার করছেন তাকে।
  • ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড ব্যবহার করলেও একই ভাবে আপনাকে কিছু দাম দিতে হয় যার কার্ড ব্যবহার করছেন তাকে।
  • ই-টাকার লেনদেনে এই খরচ থাকবে না বলে শীর্ষ ব্যাঙ্কের দাবি।
  • ই-টাকায় আপনি তাৎক্ষণিক দাম চোকানোর সুবিধা পাবেন এবং কোনও তৃতীয় মাধ্যম দিয়ে সেই লেনদেন পরিচালিত হবে না। ঠিক যে ভাবে নগদ লেনদেন পরিচালিত হয় সে ভাবেই চলবে গোটা প্রক্রিয়াটি।
  • প্রয়োজনে লেনদেনের উপর সরকার নজরও রাখতে পারবে সহজে।
  • আপনার মানিব্যাগে নগদ ফুরানোর চাপও থাকবে না। ঘন ঘন এটিএমে দৌড়নোর চাপও কমে যাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement