মাস ছয়েক আগে গেল-এর পাইপলাইন মারফত রাজ্যে প্রাকৃতিক গ্যাস জোগান প্রকল্পের প্রথম ধাপ সম্পূর্ণ হওয়ার পরেই ফের যাত্রা শুরুর অপেক্ষায় দিন গুনছিল ম্যাটিক্স গোষ্ঠী। এক যুগ আগে পশ্চিমবঙ্গে সার কারখানা গড়ার প্রস্তাব দিয়েছিল যারা। তবে কারখানা চালু করেও সে বার থমকে গিয়েছিল উৎপাদনের জ্বালানি নিয়মিত না-পেয়ে। এ বার গেল-এর প্রাকৃতিক গ্যাস দিয়ে পানাগড়ে ম্যাটিক্সের সার কারখানায় প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে সম্প্রতি। আশা, এ মাসের শেষেই উৎপাদন শুরু হবে।
সংস্থা সূত্রের খবর, গত ১৫ অগস্ট সার তৈরির প্রধান উপাদান অ্যামোনিয়া তৈরির প্রক্রিয়া চালু হয়েছে। সব ঠিকঠাক থাকলে উৎপাদন শুরু হবে চার-পাঁচ দিনের মধ্যেই। তার দিন দুয়েকের মধ্যে ইউরিয়া তৈরি করবে ম্যাটিক্স।
রাজ্যে প্রাকৃতিক গ্যাস দিয়ে সার তৈরির জন্য বাম আমলের মন্ত্রিসভা ম্যাটিক্সের লগ্নি-প্রস্তাবে সায় দেয়। সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনকে ঘিরে শিল্পায়নে কিছুটা জটিলতা তৈরি হলেও, ম্যাটিক্স-কে কেন্দ্র করে পরে আরও ১৫০০ একর জমি অধিগ্রহণ করে পানাগড় শিল্প তালুক গড়ে রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগম।
২০১০-এ কাজ শুরু করে ম্যাটিক্স। কারখানার প্রথম পর্যায় শেষ হয় ২০১৪ সালে। ‘কোল বেড মিথেন’ (সিবিএম) গ্যাস দিয়ে ২০১৭ সালে কিছু দিন প্রায় ১৩ হাজার টন সার তৈরি করে। কিন্তু পর্যাপ্ত গ্যাসের অভাবে ঝাঁপ বন্ধ হয়। ২০০৬ সাল থেকে রাজ্যে গেল-এর যে প্রাকৃতিক গ্যাস জোগানোর পাইপলাইন তৈরি নিয়ে কথা শুরু হয়েছিল, তা-ও ছিল কারখানাটির বড় ভরসা। কিন্তু জমি জটে গেল-এর প্রকল্প শ্লথ হয়ে পড়ায় সেই পথও অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। রাজ্যের উদ্যোগে গেল-এর পাইপলাইন অবশ্য এগোচ্ছে। গত ফেব্রুয়ারিতে প্রথম পর্যায়ের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অতীতের আর্থিক সঙ্কট থেকে বেরিয়ে কার্যকরী মূলধন জোগাড়ে ম্যাটিক্সের বাড়তি সময় লেগেছে। সূত্রের দাবি, তার পরেই কাজ শুরু হয়েছে। সরকারি নিয়মে তারা পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, পূর্ব উত্তরপ্রদেশ ও ছত্তীসগঢ়ের চাষিদের সার বেচতে ৫০০ জন ডিলার নিয়োগ করেছে।
মাস ছয়েকের মধ্যে প্রথম পর্যায়ের উৎপাদন স্বাভাবিক হলে দ্বিতীয় পর্যায়ের (বার্ষিক আরও ১৫ লক্ষ টন) নির্মাণ শুরুর পরিকল্পনা সংস্থাটির। দেড় বছরে তা সম্পূর্ণ হবে। ম্যাটিক্সের দাবি, কারখানা চালু হলে দেশের সার আমদানি ১৫% কমবে। বছরে ৪০-৫০ কোটি ডলার সাশ্রয় হবে।