প্রতীকী ছবি।
দ্বিতীয় দফায় পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্যে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে অক্সিজেনের চাহিদাও। যার ঘাটতির জেরে চিকিৎসা বিভ্রাটের নিদারুণ ছবিও দেখছে দেশ। এই পরিস্থিতিতে এ রাজ্যের অক্সিজেন সরবরাহকারী সংস্থাগুলির দাবি, চিকিৎসার জন্য অক্সিজেন জোগানোর ব্যবস্থা করতে তাদের উৎপাদন কেন্দ্রে এই মুহূর্তে পুরোদমে কাজ চালাচ্ছে তারা। ওই সব সংস্থার কর্তারা জানাচ্ছেন, নিরবচ্ছিন্ন ভাবে অক্সিজেন উৎপাদন চালানোর বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলে এ দিন রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির কাছে কেন্দ্রের কড়া নির্দেশ আসার আগে থেকেই শিল্প সংস্থার সরবরাহ একটু একটু করে কমিয়ে চিকিৎসার জন্য জোগান বাড়াতে শুরু করেছিলেন তাঁরা। এখন শিল্প আপাতত তা পাবেই না। উৎপাদনের সঙ্গে ২৪ ঘণ্টা বিপণন ও জোগান ব্যবস্থাও চালু থাকছে।
চিকিৎসার পাশাপাশি শিল্পেও অক্সিজেন লাগে। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় লিন্ডে ইন্ডিয়া, এলেনবেরি ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্যাসেস, আইনক্স এয়ার প্রোডাক্টস, এয়ার ওয়াটারের মতো কিছু সংস্থার উৎপাদন কেন্দ্র রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, তরল অক্সিজেনের পাঁচটি কেন্দ্র রয়েছে। এ ছাড়া রান্নার গ্যাসের মতোই সিলিন্ডারের অক্সিজেন ভরার মতো ডজনখানেকের বেশি বটলিং কারখানাও আছে।
বৃহস্পতিবার কিছু সংস্থা সূত্রের খবর, কেন্দ্রের নির্দেশ আসার আগেই শিল্পের ভাগ ছেঁটে চিকিৎসার অক্সিজেন জোগান বাড়াতে শুরু করেছিল তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্তার
কথায়, ‘‘দেশের এমন সঙ্কটে পাশে থাকা জরুরি। আগে রবিবার শুধু উৎপাদন কেন্দ্র চালু থাকত। এখন রবিবার ও ছুটির দিনে অন্যান্য বিভাগও টানা খোলা থাকছে। তবে সূত্রের খবর, অক্সিজেন কোথায় সরবরাহ হবে, তা সব রাজ্যের মুখ্যসচিব-সহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি যাচাই করে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রকের অধীন শিল্পোন্নয়ন ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য দফতর।
এ দিন সংস্থাগুলির সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। সূত্র জানাচ্ছে, আপাতত রাজ্যে দৈনিক অক্সিজেনের চাহিদা ১৫০ টনের মতো। তবে চাহিদা দ্বিগুণ হলে তার আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রশাসন। অক্সিজেন বহনকারী ট্রাক যাতে সব সময় চলাচল করতে পারে, সে জন্য ছাড়পত্রের সঙ্গে ‘গ্রিন করিডর’ করার কথা ভাবা হচ্ছে।
করোনার চিকিৎসায় অক্সিজেনের ঘাটতি মেটাতে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও বাণিজ্য মন্ত্রক সংস্থাগুলিকে শিল্পের বদলে (ওষুধ-সহ কয়েকটি শিল্প বাদে) চিকিৎসার অক্সিজেন জোগানোর কথা বলে। যদিও এতে সার্বিক শিল্পমহলের একাংশের আপত্তি রয়েছে। তবে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বার্তা, চিকিৎসার চাহিদা মেটানোর পরেই অক্সিজেন পাবে শিল্প।