ঋণে সুদ নিয়ে নতুন করে ভাবা জরুরি বলে সওয়াল করল আমেরিকা।
পরিকাঠামোয় ঋণ চাওয়ার এক বছরের মধ্যে তা হাতে পাওয়ার বন্দোবস্ত হোক। ভারত-সহ এশিয়ায় এখন দারিদ্র দূরীকরণকেই পাখির চোখ করুক এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক (এডিবি)। সেই সঙ্গে জোর দিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা নতুন সংস্থা, ডিজিটাল প্রযুক্তি ইত্যাদিকে টাকা জোগানোর উপরে। এডিবি-র বার্ষিক বৈঠকের ফাঁকে এমনই সওয়াল করলেন কেন্দ্রীয় আর্থিক বিষয়ক সচিব সুভাষ চন্দ্র গর্গ। কিন্তু দিনের শেষে সেই সমস্ত কিছু ছাপিয়ে সম্ভবত শুল্ক যুদ্ধের ছায়াই লম্বা হল সেখানে। যার দরুন ঋণে সুদ নিয়ে নতুন করে ভাবা জরুরি বলে সওয়াল করল আমেরিকা। আর তার উল্টো দিকে কার্যত এক সুরে কথা বলতে দেখা গেল ভারত এবং চিনকে।
এডিবির মঞ্চে সুদ নিয়ে এই তাল ঠোকাঠুকি ও দুই পড়শি মুলুকের মতের মিলের সমীকরণ চোখ টেনেছে কূটনৈতিক মহলের। অনেকে বলছেন, বাণিজ্য যুদ্ধের এই আবহে আর্থিক বিষয়ে অনেকটাই কাছাকাছি এসেছে দিল্লি ও বেজিং। ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক-চ্যালেঞ্জই সুদের মতো আপাত নিরীহ বিষয়েও তাদের কিছুটা এককাট্টা করেছে বলে তাঁদের ধারণা।
এডিবির মূলধনের অন্যতম জোগানদার আমেরিকার মতে, নানা দেশের জন্য ওই আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সুদও পৃথক হওয়া উচিত। তাদের প্রশ্ন, মাঝারি আয়ের অর্থনীতির দেশগুলি বেশি মূলধন জোগানোর দায় নেবে না কেন? অর্থাৎ ইঙ্গিত, তাদের কাছ থেকে বেশি সুদ নেওয়ার দিকে।
অনেকে আবার বলছেন, চিন যে ভাবে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্ক তৈরিতে উৎসাহ দেখিয়েছে, তাতে এডিবির গুরুত্ব ক্ষুণ্ণ হয়েছে বলে মত আমেরিকা ও জাপানের। তার উপর শুল্ক যুদ্ধের টানাপড়েন তো আছেই। এই সবেরই ফলশ্রুতি আমেরিকার সুদ-সওয়াল।
কিন্তু উল্টো দিকে, চিন এবং ভারত উভয়েরই দাবি, বাড়তি সুদের ভাবনা অযৌক্তিক। বেজিংয়ের মতে, এডিবির উচিত উচ্চ-মধ্য আয়ের দেশের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়ানো। পৃথক সুদের ভাবনা পত্রপাঠ খারিজ করে দিয়েছেন গর্গও।
সুদ-সওয়ালেও তাই এখন শুল্ক যুদ্ধের ছায়া খুঁজে পাচ্ছেন অনেকে।