ফাইল চিত্র।
করোনাকালে সাধারণ মানুষের যতই আর্থিক সঙ্কট হোক, সম্পত্তি বেড়েছে বিত্তশালী ও শিল্পপতিদের। সেই প্রবণতার মধ্যে দিয়েই দেশের ধনীতম ব্যক্তি হিসেবে উঠে এসেছেন গৌতম আদানি। আগ্রাসী বেগে ব্যবসা সম্প্রসারণ করে চলেছে তাঁর গোষ্ঠী। কিন্তু মঙ্গলবার ফিচ গোষ্ঠীর মূল্যায়ন সংস্থা ক্রেডিট সাইটস তাদের রিপোর্টে সতর্কবার্তা দিয়ে জানাল, অতিরিক্ত পুঁজির প্রয়োজনে ঋণ নির্ভরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ধারের প্রবল চাপ তৈরি হয়েছে আদানিদের উপর। এ দিন শেয়ার বাজারের উত্থান সত্ত্বেও এই রিপোর্টের জেরে আদানি গোষ্ঠীর অধিকাংশ সংস্থার শেয়ারের দাম কমেছে।
’৮০-র দশকের শেষ দিকে পণ্য লেনদেনের ব্যবসা দিয়ে শিল্প জগতে আসা আদানি এর পর পা রেখেছেন খনি, বন্দর, বিদ্যুৎ, বিমানবন্দর, ডেটা সেন্টার ক্ষেত্রে। এমনকি, অতি সম্প্রতি তামা শোধন, পেট্রোকেমিক্যালস, অ্যালুমিনিয়াম উৎপাদনের মতো এমন সমস্ত ব্যবসায় পুঁজি ঢেলেছেন, যেগুলি তাঁদের মূল ব্যবসাগুলির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত নয় এবং কোনও অতীত অভিজ্ঞতাও নেই। ভারতে হোলসিমের সিমেন্ট ব্যবসাও হাতে নিয়েছে আদানি গোষ্ঠী। মূল্যায়ন সংস্থাটি তাদের ‘আদানি গ্রুপ: ডিপলি ওভারলেভারেজড’ শীর্ষক রিপোর্টে জানিয়েছে, এগুলির মধ্যে এমন সমস্ত ব্যবসা রয়েছে, যেগুলি প্রবল ভাবে পুঁজি নির্ভর এবং শুরু থেকেই আয়ের দরজা খুলবে না। আগামী কয়েক বছর ঢেলে যেতে হবে পুঁজি। আর তার জন্য নির্ভর করতে হবে ব্যাঙ্ক এবং শেয়ার বাজারের উপর। আর এর ফলে ঋণের চাপ আরও বাড়বে। লেখা হয়েছে, ‘‘ব্যবসা বাড়ানোর জন্য অতিরিক্ত ঋণ নির্ভরতা বড় ঋণের ফাঁদ তৈরি করতে পারে। আর সত্যিই তা হলে, গোষ্ঠীর এক বা একাধিক সংস্থার রুগ্ণ হওয়া বা দেউলিয়া হয়ে পড়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।’’
তবে এ-ও বলা হয়েছে, আদানি গোষ্ঠীর শক্তিশালী ও স্থিতিশীল সংস্থা তৈরির রেকর্ড রয়েছে। তাদের বিপুল পরিকাঠামো এবং বৃদ্ধির সঙ্গে ভারতীয় অর্থনীতির ভাল-মন্দও জড়িয়ে। আদানি তাঁর পরবর্তী প্রজন্মকে কতটা দক্ষ করে গড়ে তুলতে পারেন সে দিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।