—প্রতীকী চিত্র।
গত মাসে দেশের খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার ৭.৪৪% থেকে নেমেছে ৬.৮৩ শতাংশে। কেন্দ্রের বার্তা, অদূর ভবিষ্যতে তা আরও মাথা নামাবে। কিন্তু বৃহস্পতিবার শ্রম মন্ত্রক প্রকাশিত পরিসংখ্যানে স্পষ্ট, কৃষি ক্ষেত্র এবং গ্রামাঞ্চলের কর্মীদের ব্যবহৃত পণ্য ও পরিষেবার খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার কমেছে যৎসামান্য। এখনও তা ৭ শতাংশে উপরে। এমনকি খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি উদ্বেগজনক ভাবে ৮ শতাংশেরও বেশি।
সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, কোভিড গ্রামীণ অর্থনীতির কোমর ভেঙে দিয়েছিল। শহরাঞ্চল কিছুটা ঘুরে দাঁড়াতে পারলেও গ্রামে চাহিদা এখনও শ্লথ। সম্প্রতি কিছু ভোগ্যপণ্যের বিক্রিবাটা বাড়লেও অনিয়মত বৃষ্টি তাতে জল ঢেলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, গ্রামাঞ্চলের স্বল্প রোজগেরে বহু মানুষের জীবনযাপনের খরচ বেড়ে যাওয়ায় তাঁদের যে নাভিশ্বাস ওঠার মতো অবস্থা হয়েছে, তা কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট। দুশ্চিন্তা সব চেয়ে বাড়িয়েছে খাবারদাবারের দাম।
সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, কৃষি শ্রমিকদের ব্যবহৃত পণ্য ও পরিষেবার মূল্যবৃদ্ধির হার অগস্টে দাঁড়িয়েছে ৭.১২%। জুলাইয়ে ছিল ৭.৩৭%। অন্য দিকে, গ্রামাঞ্চলের শ্রমিকদের ক্ষেত্রে তা ৭.৪৩% থেকে নামমাত্র কমে হয়েছে ৭.২৬%। গত বছরের অগস্টে এই দুই ক্ষেত্রে মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল যথাক্রমে ৬.৯৪% এবং ৭.২৬%। অর্থাৎ, যথেষ্ট উঁচু হলেও এখনকার তুলনায় কম। শ্রম মন্ত্রকের তথ্যে এটাও স্পষ্ট, খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হার কার্যত দাঁড়িয়ে রয়েছে একই জায়গায়। কৃষি শ্রমিকদের ক্ষেত্রে জুলাইয়ের ৮.৮৮% থেকে বেড়ে অগস্টে তা হয়েছে ৮.৮৯%। গ্রামাঞ্চলের শ্রমিকদের ক্ষেত্রেও তা দাঁড়িয়েছে ৮.৬৪%। ছিল ৮.৬৩%। দাম বেড়েছে চাল, ডাল, গমের আটা, দুধ, খাসির মাংস, চিনি, গুড়, শুকনো লঙ্কা, হলুদ এবং মশলাপাতির। ২০২২ সালের একই সময়ে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিও ছিল এখনকার থেকে কম, যথাক্রমে ৬.১৬% এবং ৬.২১%।
এ দিন নীতি আয়োগের সদস্য অরবিন্দ ভিমানি অর্থনীতি নিয়ে আশার বার্তা দিলেও, অশোধিত তেলের বাড়তে থাকা দরের প্রেক্ষিতে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ১০ বছর আগেও আমেরিকা এবং সৌদি আরব একসঙ্গে তেলের উৎপাদন নিয়ে সিদ্ধান্ত নিত। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে। সৌদি এবং রাশিয়া মিলে উৎপাদন ছাঁটাইয়ের পদক্ষেপ করছে। আজ ব্যারেল প্রতি ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ঘোরাফেরা করছে ৯৪ ডলারের আশপাশে। দূর হয়নি আবহাওয়ায় এল নিনোর প্রভাবের আশঙ্কাও। অর্থাৎ খাদ্যপণ্য নিয়ে উদ্বেগ পিছু ছাড়ছে না বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।