প্রতীকী ছবি।
রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক, বিশ্ব ব্যাঙ্ক থেকে শুরু করে বিভিন্ন রেটিং সংস্থা ও উপদেষ্টার মতে, করোনার ধাক্কা কাটিয়ে চলতি বছরে ১০%-১২% বৃদ্ধির মুখ দেখবে ভারতের অর্থনীতি। চলতি সপ্তাহে ১২.৫ শতাংশের পূর্বাভাস করেছে আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডারও (আইএমএফ)। তবে আইএমএফের উপ-মুখ্য অর্থনীতিবিদ পেটিয়া কোয়েভা ব্রুকসের মতে, অতিমারির জেরে দেশের অর্থনীতিতে আদতে যে ক্ষত তৈরি হয়েছে এবং উৎপাদন যে ভাবে ধাক্কা খেয়েছে, তা ভরতে আগামী বেশ কয়েক বছর আরও চড়া বৃদ্ধির হার ধরে রাখতে হবে ভারতকে। সাহায্য চালিয়ে যেতে হবে ধুঁকতে থাকা পরিবার ও সংস্থাগুলিকে।
বৃদ্ধির পূর্বাভাসে দেশের অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষণ দেখা যাচ্ছে বলে দাবি করছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা। বলছেন ভারতকে দ্রুত ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত করার কথাও। যদিও সম্প্রতি অর্থনীতিবিদদের একাংশ জানিয়েছিলেন, শুধু চলতি অর্থবর্ষে বৃদ্ধির হারকেই হাতিয়ার করে আত্মতুষ্টিতে ভোগা ঠিক নয়। কারণ, তা হবে গত বছরের সঙ্কোচনের ভিতের উপরে দাঁড়িয়ে। ফলে অর্থনীতির হাল বুঝতে বেকারত্ব, শিক্ষা, স্বাস্থ্যের মতো অন্য সূচকগুলির অবস্থা খতিয়ে দেখা জরুরি। তা ছাড়া বৃদ্ধি নির্ভর করবে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ অর্থনীতিতে কী প্রভাব ফেলে বা প্রতিষেধক কতটা কার্যকর হয়, তার উপরেও।
ব্রুকসের মতে, করোনার কারণে গত অর্থবর্ষে (২০২০-২১) অর্থনীতি ৮% সঙ্কুচিত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এ বছর সেই ক্ষতি অনেকটা পোষাবে। তার উপরে এখন কিছু অঞ্চলে হওয়া লকডাউন চিন্তায় রাখলেও, চলতি অর্থবর্ষে উৎপাদন ২০১৯ সালের জায়গায় পৌঁছতে পারে। কিন্তু তাঁর বক্তব্য, ‘‘যদি এটা ভেবে নেওয়া যায় যে করোনা হয়নি এবং সব কিছু আগের মতোই ঠিকঠাক চলছে, সে দিক থেকে দেখতে গেলে ২০২৪ সালে গিয়ে দেশে যে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন হওয়ার কথা এবং বর্তমান পরিস্থিতে যতটা হচ্ছে, তার মধ্যে বিপুল ফারাক রয়ে যাচ্ছে। সারা বিশ্বের ক্ষেত্রে সেই সংখ্যা যেখানে জিডিপি-র ৩%, ভারতের ক্ষেত্রে সেটা-ই দাঁড়াবে ৮ শতাংশে।’’
আর তাই অর্থনীতির চাকা ঘুরিয়ে ভারতকে আরও দ্রুত এবং চড়া বৃদ্ধির হার ধরে রাখতে হবে বলে মনে করেন আইএমএফের উপ-মুখ্য অর্থনীতিবিদ। আশা করা যায় তবেই সেই তফাত কমবে বা পুরোপুরি মোছা সম্ভব হবে। এই কাজে সফল হতে আগামী দিনেও সরকারের নীতিগত সংস্কার চালিয়ে যাওয়া উচিত বলে মনে করেন ব্রুকস। তাঁর কথায়, এ বছর নেওয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্তে জিডিপি ৬ শতাংশ বিন্দু বাড়তে পারে। কিন্তু স্থায়ী ফল পেতে তা আরও বহু দিন চালাতে হবে। বিশেষত, যে সমস্ত ক্ষেত্র বেশি ধাক্কা খেয়েছে তাদের সাহায্য করতে হবে।