—প্রতীকী ছবি।
সরকারি তথ্য বলছে, ভারতে বিপুল হারে কর্মসংস্থান বাড়ছে। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কও সম্প্রতি একই কথা জানিয়েছে। তবে অর্থনীতিবিদদের একাংশের বক্তব্য, ফাঁক রয়েছে সরকারি হিসাবে। কারণ, তার বেশির ভাগ অংশ জুড়ে রয়েছে স্বনির্ভর পেশাদার, নানা ধরনের অস্থায়ী
কাজে নিযুক্ত ঠিকাকর্মী, এমনকি বেগার খাটিয়ে বা বেতন না নিয়ে ব্যবসায় অংশ নেওয়া পারিবারিক সদস্য। সব মিলিয়ে বার করা হচ্ছে কাজে নিযুক্তদের সংখ্যা। আর তা তুলে ধরে বলা হচ্ছে দেশে কর্মসংস্থান বাড়ছে। এখানেই আপত্তি তুলেছেন অর্থনীতিবিদদের ওই অংশ। বলছেন, সব মিলিয়ে অঙ্ক কষার পরে বার হওয়া চড়া পরিসংখ্যান সামনে রেখে কাজের বাজারে উন্নতি হচ্ছে বলে দাবি করা ঠিক নয়। কারণ, অস্থায়ী কর্মী বা পেশাদারদের কাজ সংগঠিত ক্ষেত্রের নিয়মিত বেতনভুক নাগরিকদের সঙ্গে এক সারিতে রাখা যায় না।
বেকারত্ব মোদী সরকারের গলার কাঁটা বহু দিন ধরেই। লোকসভা ভোটে তাদের নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা পাওয়ার আশায় জল ঢালার অন্যতম কারণ বলেও মনে করা হচ্ছে। হালে সেই বেকারত্ব নিয়ে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। দেশে ২০১২-র পরে বছরে মাত্র ৮৮ লক্ষ কাজ তৈরি হয়েছে বলে সিটি গ্রুপ রিপোর্ট প্রকাশের পরেই পাল্টা শ্রম মন্ত্রকের দাবি, ২০১৭-১৮ থেকে তা ২ কোটি হবে। আপত্তি জানিয়ে অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, যে কোনও কাজ করে টাকা পেলে, এমনকি না পেলেও সেটিকে নতুন কর্মসংস্থানের তালিকায় রাখা হচ্ছে। একাংশের প্রশ্ন, সত্যিই দেশে সংগঠিত ক্ষেত্রে যদি গত পাঁচ-ছয় বছর ধরে এত কাজ তৈরি হয়ে থাকে, তা হলে তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চাহিদা ও বিক্রিবাটা বাড়ল না কেন?
আজিম প্রেমজি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অমিত বাসোলের দাবি, দেশে যে বিপুল নতুন চাকরি হয়েছে বলে দেখানো হচ্ছে, তার বেশির ভাগই কৃষি ও পেশাদারদের বাড়তে থাকা
সংখ্যা। একই মত জানিয়ে প্রাক্তন মুখ্য পরিসংখ্যানবিদ প্রণব সেনের মতে, সরকার কৃষি ক্ষেত্রের বাইরে বেরিয়ে প্রথাগত চাকরির সুযোগ তৈরির যে বার্তা দিয়েছিল, তা পূরণ হয়নি।