প্রতীকী ছবি।
সামান্য হলেও সুরাহা।
রাজস্ব ঘাটতির বোঝা ঘাড় থেকে নামাতে অনুদান পাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ। আগামী অর্থবর্ষে (২০২০-২১) সেই খাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে ৫০১৩ কোটি টাকা দেওয়ার সুপারিশ করেছে পঞ্চদশ অর্থ কমিশন। তা মেনেও নিয়েছে কেন্দ্র।
তবে এতে রাজ্যের চাহিদা মিটবে কি না, সে প্রশ্ন থাকছেই। রাজ্যের অর্থ দফতর মুখ খুলতে চায়নি। কারণ, ১০ ফেব্রুয়ারি বিধানসভায় বাজেট পেশ অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের। এখন এ নিয়ে মুখ খুললে বাজেটের হিসেবনিকেশও খোলসা করতে হবে। যে হিসেবে স্পষ্ট হবে রাজ্যের কোষাগারের ছবি।
পঞ্চদশ অর্থ কমিশন আপাতত শুধু আগামী অর্থবর্ষে রাজ্যগুলির মধ্যে কেন্দ্রীয় করের ভাগ কী ভাবে বিলি হবে, তার সুপারিশ করেছিল। সেই হিসেবে, ওই ভাগ পাওয়ার পরেও পশ্চিমবঙ্গ-সহ ১৪টি রাজ্যের রাজস্ব ঘাটতি থাকবে। অর্থাৎ, কর ও অন্যান্য খাতে রাজ্যের আয়ের থেকে বেতন-পেনশন, সুদে-আসলে ধার শোধের মতো খাতে খরচ হবে বেশি। পরিকাঠামোয় ব্যয়ের অর্থ থাকবে না। তাই কেন্দ্রের ঘর থেকে রাজস্ব ঘাটতি অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত।
কমিশনের হিসেবে আগামী বছরে রাজ্যের ওই ঘাটতি দাঁড়াবে ৫০১৩ কোটি। সেটাই অনুদান দেওয়া হবে। বাম শাসিত কেরলও রাজস্ব ঘাটতি অনুদান পাচ্ছে। কিন্তু কমিশনের সিদ্ধান্তে তারা খুশি নয়। প্রশ্ন উঠেছে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার খুশি কি?
২০১১ সালে ক্ষমতায় আসা থেকেই তৃণমূল বাম জমানার ছেড়ে যাওয়া বিপুল ঋণের বোঝা নিয়ে অভিযোগ জানাচ্ছে। দাবি করছে ঋণ ও সুদ শোধের উপরে স্থগিতাদেশ। চলতি অর্থবর্ষেও সুদে-আসলে ধার শোধ করতে লাগবে প্রায় ৫৬ হাজার কোটি টাকা।
কিছুটা সুরাহা দিতে ২০১৫ সালে চতুর্দশ অর্থ কমিশনের সুপারিশ মেনে মোদী সরকার পশ্চিমবঙ্গকে ১১,৭৬০ কোটি রাজস্ব ঘাটতি অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ সালের জন্য। কমিশনের মতো কেন্দ্রেরও দাবি ছিল, তার পর আর রাজস্ব ঘাটতি থাকবে না। রাজস্ব উদ্বৃত্ত হবে। ২০১৭-১৮, ২০১৮-১৯— এই দুই অর্থবর্ষে বাজেট পেশের সময় রাজ্য রাজস্ব ঘাটতি শূন্য দেখিয়েওছিল। কিন্তু ২০১৭-১৮ সালের শেষে দেখা যায়, সংশোধিত হিসেবে ঘাটতি ৯,৮০৭ কোটি। পরের বছর ৭,৫২৪ কোটি। চলতি অর্থবর্ষের বাজেটেও ঘটেছে তা-ই। রাজ্য দেখিয়েছে, রাজস্ব ঘাটতি শূন্য।