অপেক্ষা: বিয়ের মরসুমের দেরি নেই। কিন্তু সোনার চড়া দামে মাথায় হাত ক্রেতা-বিক্রেতার। বহু গয়নার বিপণি শুনশান। বুধবার কলকাতায় ক্রেতার অপেক্ষায় এমনই এক দোকান। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী।
বৈশাখ আসতে আর খুব বেশি দেরি নেই। তার পরেই শুরু হবে বিয়ের মরসুম। কিন্তু সোনার দাম দেখে মাথায় কার্যত বাজ পড়ার জোগাড় গয়নার দোকানে ভিড় করা ক্রেতাদের। বুধবার কলকাতার বাজারে নজিরবিহীন ভাবে (১০ গ্রাম) খুচরো পাকা সোনা (২৪ ক্যারাট) এই প্রথম জিএসটি ছাড়াই পেরিয়ে গিয়েছে ৭০,০০০ টাকা। বাজার বন্ধ হওয়ার সময় ছিল ৭০,১০০ টাকা। জিএসটি নিয়ে ৭২,২০৩ টাকা। স্বাভাবিক ভাবেই রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছে গিয়েছে গয়নার সোনাও। কর যোগ করে হলমার্ক সোনার গয়নার দর এ দিন প্রথম ৬৮,৬৪৯.৫০ টাকা ছোঁয়।
বিশ্ব বাজারে দাম বৃদ্ধির প্রভাবে বেশ কিছু দিন ধরেই দেশে সোনার দাম চড়ছে। অনেকে তার পরেও প্রয়োজনীয় কেনাকাটা সেরে রাখছেন আরও দাম বৃদ্ধির আশঙ্কায়। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি খুচরো সোনা ৭০,০০০ টাকার মাইলফলক ছাড়িয়ে যাবে ভাবা যায়নি, বলছেন স্বর্ণ শিল্পের সংগঠন জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক কাউন্সিলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান এন অনন্ত পদ্মনাভন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এত দামে তো সোনা বা গয়নার চাহিদা কমবেই। তবে সামনে নির্বাচন বলে এখন বেশি নগদ নিয়ে রাস্তায় চলাফেরার ক্ষেত্রে কিছু বাধানিষেধ রয়েছে। ফলে চড়া দামের ধাক্কা কতটা ঠিক মতো বোঝা যাবে ভোট পর্ব মিটলে।’’ স্বর্ণ ব্যবসায়ী মধুসূদন কুইলার দাবি, ‘‘নতুন বছরে পা রেখে বৈশাখের প্রথম দিনে বহু মানুষ নতুন গয়না তুলে নেন হাতে। সাধারণ রোজগেরেরা এই ভাবেই সঞ্চয় রাস্তায় হাঁটেন। সে জন্য তোড়জোড় শুরু হয় এই সময়। সেগুলির বরাত আসতে শুরু করে আমাদের কাছে। কিন্তু এ বার বরাত প্রায় নেই বললেই চলে। দুশ্চিন্তা বাড়ছে। সামনেই বিয়ের মরসুম। আমরা সেই দিকে তাকিয়ে বিক্রিবাটা বৃদ্ধির অপেক্ষায় দিন গুনছি।’’
ছোট গয়নার দোকানগুলির সংগঠন বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক টগর পোদ্দার জানান, দাম এতটা বে়ড়ে যাওয়ায় এ দিন বহু দোকান বউনিই করতে পারেনি। উত্তর কলকাতার ছোট দোকানের মালিক নারায়ণ চন্দ্র বসাক নিজেই কারিগর। তাঁর কথায়, ‘‘ক্যারাট কমিয়ে গয়না তৈরি প্রবণতা দেখা দিচ্ছে বাজারে। অনেক ক্রেতা ২২ ক্যারাট থেকে কমিয়ে ১৮-১৯ ক্যারাটেও গয়না তৈরি করতে বলছেন। এতে দাম কম পড়ে। না হলে হাত ছোঁয়ানো
যাচ্ছে না।’’