—ফাইল চিত্র
করোনার ঝড়-ঝাপটা সামাল দিতে গিয়ে অর্থনীতির দরজা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিল বহু দেশই। যার জেরে ধাক্কা খেয়েছে শিল্প-বাণিজ্য। কাজ খুইয়েছেন বহু মানুষ। রাষ্ট্রপুঞ্জের শ্রম বিভাগ আইএলও-র ‘ওয়ার্ল্ড এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল আউটলুক’ রিপোর্টে জানানো হয়েছে, এর ফলে ২০২২ সালে সারা পৃথিবীতে কর্মহীনের সংখ্যা দাঁড়াতে পারে ২০ কোটির কাছাকাছি। বেকারত্বের হার হতে পারে ৫.৭%। ইতিমধ্যেই নতুন ভাবে দারিদ্রের গণ্ডিতে ঢুকে পড়েছেন ১০.৮ কোটি কর্মী।
রিপোর্টে জানানো হয়েছে, করোনার সঙ্গে মোকাবিলা করতে গিয়ে গত বছর ৮.৮% কাজের সময় নষ্ট হয়েছে। যা কিনা ২৫.৫ কোটি স্থায়ী কর্মীর সারা বছরের কাজের সমান। যার বিরূপ প্রভাব পড়েছে কাজের বাজারে। ২০২১-এর শেষে গিয়ে দেখা যাবে অন্তত ৭.৫ কোটি কাজ তৈরি হয়নি, যা স্বাভাবিক সময়ে তৈরি হতে পারত। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘‘২০১৯ সালের তুলনায় অতিরিক্ত ১০.৮ কোটি কর্মী দরিদ্র বা অতি দরিদ্রের মাপকাঠিতে চলে এসেছেন। রাষ্ট্রপুঞ্জের হিসেব অনুযায়ী, এই ধরনের এক একটি পরিবার দিনে ৩.২০ ডলার খরচের মধ্যে জীবনধারণ করে। গত পাঁচ বছরে দারিদ্র দূরীকরণের যে অগ্রগতি হয়েছিল তা কার্যত বৃথা হয়ে গেল। ২০৩০ সালের মধ্যে পৃথিবী থেকে দারিদ্র দূর করার যে লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল তা আরও কঠিন হয়ে পড়ল।’’
আরও উদ্বেগের বিষয়, কাজের বাজারের এই পরিস্থিতির প্রভাব মহিলাদের উপরে পড়েছে বেশি। পরিসংখ্যানে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, ২০২০ সালে পুরুষদের কাজ যেখানে ৩.৯% কমেছে সেখানে মহিলাদের কমেছে ৫%। যার ফলে তুলনায় অনেক বেশি সংখ্যক মহিলাকে ছিটকে যেতে হয়েছে কাজের বাজার থেকে।
আইএলও-র ডিরেক্টর জেনারেল গাই রাইডার বলেছেন, ‘‘কাজ তৈরি করে সমাজের দুর্বল অংশকে সাহায্য করা, সবচেয়ে বেশি ধাক্কা খাওয়া ক্ষেত্রকে ঘুরিয়ে দাঁড় করাতে সাহায্য করায় জোর না-দিলে করোনার বিরূপ প্রভাব আরও সুদূরপ্রসারী হবে।’’