জীবনে গৃহবিবাদ ও আইনি জটিলতার পূর্বাভাস নিয়ে আলোচনায় ডা: সোহিনী শাস্ত্রী
আমরা জানি যে আদালতের মামলার মধ্যে দিয়ে যাওয়া খুবই স্নায়বিক এবং ভীতিজনক এক অভিজ্ঞতা। ফলাফলের অনির্দিষ্টতা, জটিল আইনি প্রক্রিয়া এবং সফল হওয়ার চাপ যে কোনও মানুষের জন্য অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠতে পারে। কখনও কখনও সাংসারিক জীবনে দাম্পত্য কলহ কিংবা সম্পত্তির কারণে মানুষ আইনি সমস্যার মুখোমুখি হতে পারে। গৃহবিবাদের কারণেই সবচেয়ে বেশি আইনি মামলা-মোকদ্দমার মধ্যে পড়তে পারে মানুষ। এই গৃহবিবাদ মূলত দু’টি কারণে হয়। প্রথমত, অনেক সময়ে কোনও দম্পতির জীবনে হয়তো দেখা যায় স্ত্রী স্বামীর তুলনায় কর্মে অনেক উন্নতি করেছে, যা স্বামীর আত্মাভিমানের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে; এর থেকে সহজেই সাংসারিক কলহের উৎপত্তি হতে পারে। আবার কখনও দেখা যায় পণজনিত কারণেও এক জন স্ত্রীর উপরে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের অত্যাচার গার্হস্থ্য হিংসার আকার নেয়। এর ফলে মামলা-মোকদ্দমার উৎপত্তিও হতে পারে। এ ছাড়া, সম্পত্তির কারণে ভাই-ভাইয়ের মধ্যে কিংবা পরিবারের সঙ্গে পরিবারের, কিংবা আরও নানা কারণে দেওয়ানি বা ফৌজদারী মামলায় জড়িয়ে পড়তে পারে যে কেউ।
কোনও জাতক বা জাতিকার জন্মছকে যদি লগ্নের নবম ঘরে মঙ্গল অথবা রাহু কিংবা শনি থাকে, বা রাহু মঙ্গল থাকে, তা হলে কিন্তু তার জীবনে আইনি মামলা-মোকদ্দমার উৎপত্তি হতে পারে।
আইনি মামলা হওয়ার জন্য দায়ী গ্রহগুলি হল শনি, রাহু, কেতু এবং মঙ্গল। জন্ম তালিকায় অষ্টম, একাদশ এবং দ্বাদশ ঘর এক জন ব্যক্তির জীবনে আইনি মামলার জন্য বিচার করা হয়। নিঃসন্দেহে, গ্রহ এবং ঘর আইন-আদালতের ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা পালন করে। কিন্তু আইনি মামলার ক্ষেত্রে জ্যোতিষশাস্ত্র আপনাকে সব কিছুর বাইরে এমন কিছু বলতে পারে, যা আপনাকে আইনি বিষয়ে ব্যাপক ভাবে সাহায্য করতে পারে। আমরা এখানে সহজে জেনে নিতেই পারি যে, কী ভাবে জ্যোতিষশাস্ত্র আদালতের মামলায় জড়িত ব্যক্তিদের আগে থেকেই সাবধান করতে পারে এবং এই অনিশ্চয়তা থেকে রক্ষা করার উপায় নির্ধারণ করে দিতে পারে।
একজন সুযোগ্য জ্যোতিষী প্রথম নজরে জয় বা হারের সম্ভাবনা খুঁজে পেতে পারেন এবং বিভিন্ন নক্ষত্র আপনার জন্য কী পূর্বাভাস দিয়েছে, তা ব্যাখ্যা করতে পারেন। এক জন ব্যক্তির জন্মের তালিকার বিস্তারিত বিচার করে মামলার কারণ এবং কী ভাবে সেই ব্যক্তির উপরে তাদের প্রভাব পড়তে পারে, তা জানা যেতে পারে ।
জন্মছকের যে গ্রহ বা ঘর আইন-আদালতে মামলা-মোকদ্দমায় জড়িয়ে পড়া নির্দেশ করে:
কিছু গ্রহ এবং ঘর ব্যক্তির জন্মছকের আইন-আদালতের মামলা-মোকদ্দমা নির্দেশ করে। ষষ্ঠ ঘরের বিচার করলে আইনি লড়াইয়ের সম্ভাবনার কথা আগে থেকে বলা সম্ভব হয়। সপ্তম ঘর আদালতে সেই ব্যক্তির বিরোধী দলের শক্তি ও দুর্বলতার সূত্র প্রদান করে থাকে। জন্মছকের অষ্টম ঘর সিদ্ধান্ত দেয় যে, কোন অপরাধের কারণে এক জন ব্যক্তি ঠিক কতটা শাস্তিযোগ্য। এটাও নির্দেশ করে যে ব্যক্তি ঠিক কী ধরনের চাপের মুখোমুখি হতে পারে এবং আদালতে ওই মামলা মোট কতটা সময় ধরে চলতে পারে। দ্বাদশ ঘর মামলার ফলাফল কী হবে, সেটা ব্যক্ত করে; তা সে ইতিবাচক বা নেতিবাচক যা-ই হোক না কেন।
কতগুলি যোগ আছে, যা মামলা মোকদ্দমার ক্ষেত্রে উপকারী। যদি কোনও ব্যক্তির গ্রহের দশা আসন্ন মামলার ইঙ্গিত দেয়, কিন্তু ট্রানজিট গ্রহগুলি তার বিরোধিতা করতে পারে, তবে মামলার কারণে ব্যক্তিরা কিছু আইনি প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হলেও হতে পারে। রাহু কেতু এবং শনির মতো অশুভ গ্রহের সঙ্গে ষষ্ঠের পীড়িত অধিপতির সঙ্গম দুর্বল ষষ্ঠ ঘরের সৃষ্টি করে, যার কারণে অশুভ যোগ গঠিত হয়। ষষ্ঠ বা অষ্টম এবং দ্বাদশ ঘরের মধ্যে সংযোগ তৈরি না হলে আইনি লড়াই অনিবার্য হয়ে পড়ে।
কেন কোনও ব্যক্তি আইন-আদালতের জটিলতায় পড়েন?
জ্যোতিষশাস্ত্র বলে যে প্রতিটি ঘটনার পিছনে গ্রহ-নক্ষত্রের প্রভাব থাকে, যা আমাদের অতীত জীবনের অতীত কর্মের ফল। তাই সব সময়ে ভাল কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। জীবনে ইতিবাচকতা আকর্ষণ করার জন্য নিজে ইতিবাচক থাকা প্রয়োজন। জন্মছক বিচারের মাধ্যমে আমরা খুব সহজেই আদালতের মামলা বা জেল যোগ, কিং বা যে কোনও ধরনের বন্ধন যোগের উপস্থিতি দেখতে পারি।
১) জন্ম তালিকায় ক্ষতিকারক শনি জীবনের মামলা-মোকদ্দমা সমস্যার জন্য মূলত দায়ী। অনেক জন্মছকেই দেখা যায় যে ষষ্ঠ, অষ্টম বা দ্বাদশ ঘরে অশুভ শনি ব্যক্তিকে মামলা-মোকদ্দমার মধ্যে আটকে রাখে। শনি এমন একটি গ্রহ যা ন্যায়বিচারের সঙ্গে যুক্ত এবং সরাসরি আদালতের মামলার সিদ্ধান্তের সঙ্গে সম্পর্কিত। সাধারণত শনির গমনের সময়ে কোনও বড় পরিবর্তন ঘটতে দেখা যায়। দেখা যায় যে শনি যদি জন্মের তালিকায় অশুভ থাকে এবং ষষ্ঠ, অষ্টম বা দ্বাদশ ঘরে অবস্থান করে থাকে, তবে তা জীবনকে খারাপ ভাবে প্রভাবিত করে। তখন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি জীবনে আইনি সমস্যার সম্মুখীন হয়।
২) রাশিফলের ষষ্ঠ, অষ্টম এবং দ্বাদশ ঘরের সমস্যা আদালতের মামলার জন্যও দায়ী। কারণ, ষষ্ঠ ঘরে লুকোনো শত্রু আদালতের মামলা, ঋণ, ন্যায়বিচার ইত্যাদির সঙ্গে সম্পর্কিত। অষ্টম ঘর অতীত জীবনে আমরা যা করেছি, তার সঙ্গে সম্পর্কিত এবং দ্বাদশ ঘর ব্যয়, কারাবাস ইত্যাদির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হয়। যখন অষ্টম এবং দ্বাদশ ঘর, ষষ্ঠ ঘরের সঙ্গে বা একে অপরের সঙ্গে কোনও ভাল সম্পর্ক তৈরি করে না, তখন জীবনে আইনগত সমস্যা হওয়ার প্রচুর আশঙ্কা থাকে।
৩) শনি সিদ্ধান্তগুলিকে বিলম্বিত করে এবং উভয় পক্ষের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝিও তৈরি করে। আদালতের মামলা চলাকালীন তা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে চরম চাপ এবং দুর্দশার মধ্যে ফেলে।
৪) গবেষণায় দেখা যায় যে, অশুভ রাহু ষষ্ঠ, অষ্টম বা দ্বাদশে অবস্থান করলে সেই ব্যক্তি ষড়যন্ত্রে ফেঁসে যেতে পারে। রাহু গমনে থাকলে প্রভাব বেশি হতে দেখা যায়।
৫) ষষ্ঠ, অষ্টম বা দ্বাদশ ঘরে অবস্থান করে থাকলে মঙ্গল কোনও ব্যক্তির জন্য খুব বিপজ্জনক। এটা পরিবেশকে নেতিবাচক করে তোলে এবং সেই ব্যক্তিকে আইনি মামলায় জড়িয়ে ফেলে।
৬) জন্ম পত্রিকায় ক্ষতিকর সূর্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। তা প্রতিকূল সিদ্ধান্ত ও মানহানির জন্য দায়ী হয়। মিথ্যা অভিযোগ ইত্যাদির মুখোমুখি হওয়ার প্রচুর আশঙ্কা থাকে।
৭) ষষ্ঠ, অষ্টম বা দ্বাদশ ঘরে রাহু এবং শনির সংযোগও অত্যন্ত বিপজ্জনক এবং আইনগত ঝামেলায় ব্যক্তিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।
৮) ষষ্ঠ ঘরের অধিপতি যদি অষ্টম বা দ্বাদশ ঘরে অবস্থান করে, তবে সেই ব্যক্তি মাঝে মাঝেই আইনি মামলা-মোকদ্দমায় জড়িয়ে পরে।
৯) ষষ্ঠ, অষ্টম ও দ্বাদশ ঘরে রাহু ও মঙ্গলের সংযোগও অত্যন্ত বিপজ্জনক।
১০) ষষ্ঠ, অষ্টম বা দ্বাদশ ঘরে যে কোনও ধরনের গ্রহণ যোগ বা চণ্ডাল যোগও ব্যক্তির জীবনে মামলা-মোকদ্দমার সমস্যা নিয়ে আসে।
১১) ক্ষতিকারক বা দুর্বল ষষ্ঠ ঘর বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আইনি সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার মূল কারণ। তবে এই নিয়ম কিন্তু সব ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয় না।
১২) দুর্বল লগ্ন আইনি মামলায় জয়ী হতে না পারার আর একটি উল্লেখযোগ্য কারণ।
দেশের প্রখ্যাত জ্যোতিষশাস্ত্রবিদদের অন্যতম ডা: সোহিনী শাস্ত্রী।
ডা: সোহিনী শাস্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের দূরভাষ নম্বর: +91 91635 32538 / +91 90381 36660
ওয়েবসাইট: sohinisastri.com
ফেসবুক: facebook.com/drsohinisastri
ইউটিউব: youtube.com/@dr.sohinisastribestastrolo2355/
ডিসক্লেইমার: এটি একটি বিজ্ঞাপন প্রতিবেদন এবং বিজ্ঞাপনদাতার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত। প্রতিবেদনে প্রকাশিত সমস্ত বক্তব্য / মন্তব্য একান্তই বিজ্ঞাপনদাতার নিজস্ব। এর সঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনের সম্পাদকীয় দফতরের কোনও সম্পর্ক নেই। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই যাচাই করে নিন।