‘লিটারারি মিট’
শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার লক্ষ্যে প্রতি বছরের মতো এ বছরেও ৭ জানুয়ারি সাড়ম্বরে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ‘মেদিনীপুর লিটারারি মিট’। রবিবাসরীয় সকালে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরেন্দ্রনাথ শাসমল সভাগৃহে মেদিনীপুরের তরুণ কবিদের উদ্যোগে আয়োজিত হয় এই চতুর্থ সাহিত্য সম্মেলন। গত তিন বছরের মতো এ বারও উপস্থিত ছিলেন শিল্পী থেকে অভিনেতা-সহ বহু সৃজনশীল ব্যক্তিত্ব। শাঁখের মাধ্যমে একটি ছাতিমের চারায় জল দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। এই ছাতিম গাছটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রোপণ করা হয়েছে।
মেদিনীপুর পুরসভার সহায়তায় খুব সুন্দর ভাবে আয়োজিত হয়েছে চতুর্থ লিটারারি মিট। এ বারের অনুষ্ঠানের সূচনা করেন লেখক-অভিনেতা ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়। প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুশান্তকুমার চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশনার দায়িত্বে ছিলেন গীতিকার, সুরকার ও সংগীতশিল্পী সুপান্থ বসু। এ ছাড়াও যোগ দিয়েছিলেন অন্যান্য লেখক ও কবি।
চতুর্থ সাহিত্য সম্মেলনে চর্চিত বিষয়গুলির মধ্যে ছিল কবিতা, গল্প ও নাটক। কবিতার ক্ষেত্রে ‘অধিক মেধা এবং মননের চর্চা কি কবিতায় মৌলিক স্বরের ক্ষেত্রে অন্তরায়?’ বিষয়ে আলোচনায় যোগ দেন সুমন গুণ, নিতাই জানা ও পায়েল সেনগুপ্ত। পর্ব সঞ্চালনা করেন অনিমিখ পাত্র।
গদ্য প্যানেলের বিষয় ছিল, ‘বর্তমান ক্রীড়া সাহিত্য ও আধুনিক সমাজ’। আলোচনায় ছিলেন সব্যসাচী সরকার ও তন্ময় চক্রবর্তী। এই পর্বে সঞ্চালক ছিলেন অর্পণ গুপ্ত।
নাটক প্যানেলের আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল ‘শক্তিশালী হলেও জনপ্রিয় অভিনেতা বা অভিনেত্রী না থাকলে প্রেক্ষাগৃহে দর্শক আসে না। বাস্তব কি এটাই?’ আলোচক ছিলেন আশিস চট্টোপাধ্যায় ও অভি চক্রবর্তী। সঞ্চালনায় সায়ন ভট্টাচার্য।
‘মেদিনীপুরের সাহিত্যচর্চা’ বিষয়ে আলোচনা করেন মৃদুল শ্রীমানী। এ ছাড়াও অর্পিতা কুণ্ডু, দেবব্রত চট্টোপাধ্যায়, সোনালী ঘোষ, রাজদীপ পুরী, উষসী কাজলি, সব্যসাচী মজুমদার-সহ দক্ষিণবঙ্গের ১২ জন বিশিষ্ট কবি এই অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন। সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন মোম চক্রবর্তী ও কুমারেশ দে।
মেদিনীপুরের তরুণ কবিদের অন্যতম সদস্য মঙ্গল হাজরা অনুষ্ঠানের উদ্বোধক ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়কে একটি হাতে আঁকা ছবি উপহার দেন। মঙ্গলের হাতে যেন প্রাণ পেয়েছিল বিশিষ্ট অভিনেতার ছবিটি। চতুর্থ লিটারারি মিটে উদ্বোধন হয় মেদিনীপুর শহরের দশটি স্কেচের। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল আলোচক, কবি, অতিথি, দর্শক ও শ্রোতাদের দেওয়া হয়েছিল খাগের কলম। সভা প্রাঙ্গণে ছিল বই ও বেশ কিছু লিটল ম্যাগাজিন স্টল।
আয়োজকদের তরফে সভাপতি সিদ্ধার্থ সাঁতরা ও সম্পাদক অভিনন্দন মুখোপাধ্যায় বলেন, “আন্তরিকতার সঙ্গে এ বারেও আয়োজিত হল মেদিনীপুর লিটারারি মিট। চতুর্থ বছরের এই আয়োজন সর্বাঙ্গীন ভাবে সফল।’’