জেনারেটিভ এআই
জেনারেটিভ এআই বর্তমান সময়ের এক আধুনিক বিস্ময়। যা নতুন প্রজন্মের কাছে প্রায় মহাকাশ ছোঁয়ার প্রতিযোগিতার সামিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই মুহূর্তটি তৈরি হতে প্রায় কয়েক দশক সময় লেগেছে। ছয় দশকে মুরের সূত্র এখন আমাদের তথ্যের এক্সাফ্লপ পরিমাপের ক্ষমতা দিয়েছে। গত চার দশক ধরে ইন্টারনেট (কোভিড যা আরও ত্বরান্বিত করেছে) আমাদের ট্রিলিয়ন টোকেন মূল্যের প্রশিক্ষণ তথ্য দিয়েছে। দুই দশক ধরে মোবাইল এবং ক্লাউড কম্পিউটিং পদ্ধতি প্রতিটি মানুষকে একটি সুপার কম্পিউটার করে তুলেছে। অন্য ভাবে বলতে গেলে, কয়েক দশকের মূল্যবান প্রযুক্তিগত অগ্রগতির হাত ধরে জেনারেটিভ এআই-এর এই সাফল্যের উড়ান।
উন্মোচিত জেনারেটিভ এআই
চ্যাটজিপিটি-এর উত্থান হল সেই স্ফুলিঙ্গ, যা মূলত ইন্টারনেটের প্রথম দিন থেকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, পাঠ্য থেকে ছবি, উদ্ভাবনী বিষয়বস্তু এবং এমনকি কোড তৈরিতে জোর দিয়েছে। শুধুমাত্র স্বয়ংক্রিয় কাজগুলি সম্পর্কে নয়, বরং লার্নিং ডেটার উপরে ভিত্তি করে নতুন ও আসল আউটপুট তৈরির বিষয়ে সাহায্য করে। গণনার ক্ষমতা এবং তথ্যের প্রাপ্যতার অগ্রগতির হাত ধরে এই প্রযুক্তিটি খুবই উন্নত হয়েছে। চ্যাটজিপিটি, মিডজার্নি এবং অন্যান্য প্ল্যাটফর্মের মতো ভিন্ন ডোমেনে জেনারেটিভ এআই-এর ব্যবহার নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেয়।
জেনারেটিভ এআই-তে কর্মসংস্থানের সুযোগ
১) এআই মডেলের উন্নয়ন এবং প্রশিক্ষণ: জেনারেটিভ এআই মডেলগুলি আরও উন্নত হয়ে উঠলে, সেগুলির উন্নতি, প্রশিক্ষণ এবং সূক্ষ্ম টিউনিংয়ের জন্যে দক্ষ পেশাদারদের যথেষ্ট প্রয়োজন রয়েছে। এই মডেলের জন্যে মেশিন লার্নিং, নিউরাল নেটওয়ার্ক এবং ডেটা সায়েন্স বোঝার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
২) নীতি এবং সম্মতি বিশেষজ্ঞ: বিশেষ ক্ষমতার সঙ্গে আসে বিশেষ দায়িত্ব। জেনারেটিভ এআই-এর উত্থান ঘিরে নৈতিকতা এবং সম্মতি বিষয়ে নানা বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে ইতিমধ্যেই। বিশেষত ডেটা ব্যবহার এবং সামগ্রী তৈরিতে। এই ক্ষেত্রে দক্ষ পেশাদাররা এআই-নির্ভর প্রক্রিয়াগুলির নৈতিক মান এবং নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা নিশ্চিত করবেন।
৩) এআই-দ্বারা উন্নত সৃজনশীল পেশাদার: শিল্পী, লেখক এবং ডিজাইনাররা সৃজনশীলতার প্রয়োজনে জেনারেটিভ এআই ব্যবহার করতে পারেন। এই পেশাদারদের শৈল্পিক দক্ষতাগুলির সঙ্গে এআই টুলগুলির মিশেল অভিনব এবং আকর্ষক বিষয়বস্তু তৈরি করতে সাহায্য করবে।
৪) এআই প্রোডাক্ট ম্যানেজার: এই কাজের আওতায় এআই-ভিত্তিক প্রোডাক্টের উন্নয়ন, ধারণা থেকে লঞ্চ পর্যন্ত তত্ত্বাবধান করা, সবটাই পড়ে। এটির জন্য প্রযুক্তিগত জ্ঞান, ব্যবসায়িক দক্ষতা এবং ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতার প্রয়োজন রয়েছে।
৫) এআই ইন্টিগ্রেশন বিশেষজ্ঞ: ইদানীং যে কোনও ব্যবসাতেই বিভিন্ন কাজ ও প্রয়োজনে এআই প্রযুক্তিকে জড়িয়ে নেওয়া হচ্ছে। ব্যবসাগত প্রয়োজনে এআইকে কাজে লাগানোর বিষয়ে দক্ষতা রয়েছে, এমন পেশাদারদেরও তাই চাহিদা বাড়ছে।
৬) এআই নীতি এবং কর্মপন্থা পরামর্শদাতা: এআই-এর ক্রমবর্ধমান ব্যবহারের সঙ্গে, এমন পেশাদারদের প্রয়োজন বাড়ছে, যাঁরা এআই-এর সামাজিক প্রভাবগুলি বোঝেন এবং দায়িত্বশীলতার সঙ্গে এর ব্যবহার নিশ্চিত করেন।
জেনারেটিভ এআই-এর যুগে উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা:
১) প্রযুক্তিগত দক্ষতা: প্রোগ্রামিং, মেশিন লার্নিং এবং ডেটা বিশ্লেষণে একটি শক্তিশালী ভিত্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২) সৃজনশীলতা এবং উদ্ভাবন: অন্য ধরনের চিন্তাভাবনা করার ক্ষমতা এবং এআই প্রযুক্তির অভিনব প্রয়োগগুলি কল্পনার দক্ষতা।
৩) নীতি ও দায়িত্বশীলতা: এআই-এর নৈতিক প্রভাব বোঝা এবং তার দায়িত্বশীল ব্যবহারে সাহায্যের ক্ষমতা।
৪) উপযোগিতা: এআই-এর ক্ষেত্রটি দ্রুত বিকশিত হচ্ছে। তাই ক্রমাগত শেখা এবং নতুনকে গ্রহণ করার সদিচ্ছা ও ক্ষমতা থাকা গুরুত্বপূর্ণ।
৫) আন্তঃবিভাগীয় জ্ঞান: ডোমেন-নির্দিষ্ট জ্ঞানের সঙ্গে দরকার প্রযুক্তিগত দক্ষতার মিশ্রণ, তা শিল্প, ব্যবসা বা অন্য যে কোনও ক্ষেত্রেই হোক না কেন।
জেনারেটিভ এআই-এর আবির্ভাব শুধু একটি প্রযুক্তিগত বিপ্লব নয়; এটি অচেনা কর্মজগতের একটি দরজা, যা প্রযুক্তি এবং ব্যবসায় যাঁরা থাকেন, তাঁদের জন্য বিস্তৃত এবং বৈচিত্রপূর্ণ সুযোগ তৈরি করে। এআই দ্বারা উন্নত সৃজনশীল প্রচেষ্টা থেকে শুরু করে এআই-এর নৈতিক এবং দায়িত্বশীল ব্যবহারের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা এর সার্বিক সম্ভাবনার সঙ্গে সম্পর্কিত। এখন এআই-নির্ভর যুগের শিখরে দাঁড়িয়ে আছি আমরা। এই পরিবর্তনশীল সময়ে সাফল্যের চাবিকাঠি আলিঙ্গন করা, ক্রমাগত শেখা এবং নৈতিক মানদণ্ডের প্রতি প্রতিশ্রুতি অটুট রাখা প্রয়োজন। কারণ ভবিষ্যৎ জেনারেটিভ এআই দ্বারা চালিত হবে।
বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই এখন তথ্য বিজ্ঞানের কোর্স পড়ানো হয়। প্র্যাক্সিস টেক স্কুলের কলকাতা ও বেঙ্গালুরু ক্যাম্পাস এখন এ ক্ষেত্রে ভারতে এক নম্বর। তথ্য বিজ্ঞান শিক্ষায় দিশারী এই প্রতিষ্ঠান গত দশ বছরে এক ঈর্ষণীয় মর্যাদা অর্জন করেছে তাদের তথ্য বিজ্ঞানের স্নাতকোত্তর কোর্সের হাত ধরে। ন’মাসের এই ফুল টাইম কোর্সের অন্তর্ভুক্ত জেনারেটিভ এআই এবং মেশিন লার্নিং। যা শিল্পক্ষেত্রের সহযোগী সংস্থাগুলির দেওয়া রিয়েলটাইম তথ্যে সমৃদ্ধ। তথ্য বিজ্ঞান ক্ষেত্রের সাম্প্রতিক গবেষণার সঙ্গে তাল মিলিয়ে এই কোর্স প্রয়োজনীয় অ্যাপ্লিকেশন ও টুল-সহ সুশৃঙ্খল প্রশিক্ষণ জারি রাখে। কলকাতা ও বেঙ্গালুরুতে এই পিজিপিডিএস প্রোগ্রামে পড়ার সুযোগ রয়েছে। বিশদে জানতে দেখুন www.praxistech.school
ম্যানেজার পদে কর্মরতদের তাঁদের কাজের ক্ষেত্রে অ্যানালেটিকস বোঝা ও ব্যবহার শেখাতে কর্পোরেট ট্রেনিং কর্মশালারও আয়োজন করে প্র্যাক্সিস স্কুল। তথ্য বিজ্ঞানে দক্ষতার অভাব একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবুও এটি ভারতকে উদীয়মান প্রযুক্তির উপর জোর দেওয়া, দক্ষতা বাড়াতে উৎসাহ দান এবং বিশ্ব প্রযুক্তি ক্ষেত্রে অগ্রণী হিসেবে নিজের অবস্থানকে শক্তিশালী করার সুযোগ করে দেয়। প্র্যাক্সিস টেক স্কুল এই পরিবর্তনের জায়গাটি দ্রুত শনাক্ত করতে পেরেছিল। ফলে দক্ষতার ঘাটতি পূরণে নিজেদের প্রোগ্রামগুলিকে যথাযথ ভাবে সাজিয়ে ডিজিটাল ভবিষ্যতের জন্য নতুন প্রজন্মকে তৈরি করে দিচ্ছে তারা।
এই প্রতিবেদনটি ‘প্র্যাক্সিস টেক স্কুল’-এর সঙ্গে আনন্দবাজার ব্র্যান্ড স্টুডিয়ো দ্বারা যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত।