প্রতীকী ছবি।
আমাদের জীবন পরমেশ্বরের দেওয়া অসাধারন সুন্দর এক উপহার। অনেকেই অকর্মণ্যতা-অনুৎপাদকতা-কুন্ঠা-হতাশা-নিরাশা-অজ্ঞানতা-দুঃশ্চিন্তায় জর্জরিত হয়ে জীবনের কোনও সৌন্দর্য খুঁজে পান না। অথচ এই জীবন অনেকখানি-ই আপনার চাওয়া ও সিদ্ধান্তের প্রতিফলন। আপনার প্রতিটি পদক্ষেপ, প্রতিটি সিদ্ধান্ত জীবনকে আকার দান করে। নিজের জন্য, ভালবাসার মানুষদের জন্য এবং সৃষ্টিকর্তার জন্য আপনি কি করেছেন – সেটাই জীবনের আসল অর্থ। কিন্তু আমরা জীবনে আরও অনেক অপ্রয়োজনীয়, মূল্যহীন বিষয় ও বস্তুর জন্য সময়, মেধা ও চিন্তা খরচ করে জীবনের আসল সৌন্দর্যকেই ভুলতে বসি। যার ফলে সত্যিকার জীবন আর যাপন করা হয়না। পূরণ করা হয়না নিজের ঠিক করা লক্ষ্য, ভালবাসার মানুষগুলোর সাথে ঠিকমত সময় কাটানো হয় না। সৃষ্টিকর্তার সামনে দাঁড়াতে হয় অপরাধীর মত। বিকল্পরহিত সংকল্প, অখণ্ড প্রচণ্ড পুরুষকার (নিজ উদ্যম বা প্রচেষ্টা) এবং অনুশাসনের মতো কিছু সুঅভ্যাস আয়ত্ত্ব করতে পারলে জীবনের এই জটিলতা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
সনাতন ভারত প্রাচীনকাল থেকেই সু-অভ্যাস চর্চার কথা বলে এসেছে। কারণ এই সু-অভ্যাস তৈরি না হলে অ্যাডভেঞ্চারের নামে নানান তামসিক-রাজসিক কার্যে লিপ্ত হয়ে প্রগতিশীলতা হারিয়ে ফেলে আমরা দুর্গতিগ্রস্ত হয়ে পড়ছি। প্রেম-করুণা-সেবার আদর্শ থেকে সরে গিয়ে ক্রমাগত অকর্মণ্যতা ও উৎপাদনহীনতা আমাদের প্রায়ান্ধকারে ঠেলে দিচ্ছে। অথচ আমাদের মধ্যে প্রভূত সম্ভাবনা লুকিয়ে রয়েছে, যৎ ভাণ্ডে তৎ পিণ্ডে। অর্থাৎ এই ব্রহ্মাণ্ডে যা রয়েছে আমাদের মধ্যেও তাই রয়েছে। কিন্তু আমরা নিজেরাই নিজেদের শক্তি সম্বন্ধে সন্দিহান। পরনিন্দা-পরচর্চা-ভ্রান্ত মোহে ঘন্টার পর ঘন্টা অতিবাহিত করে সঠিক সময়ে সঠিক নির্ণয় নিতে পারি না, জীবনের উদ্দেশ্য কী, উপলব্ধি কী তাই বুঝতে পারি না। স্বভাবতই আধ্যাত্মিক-আধিভৌতিক-আধিদৈবিক এই ত্রিতাপ কাম ক্রোধ লোভ বন্ধন মহারিপুর ঘূর্ণাবর্তে জীবন অতিবাহিত হতে থাকে। অসৎ কর্মের পাল্লা ভারী হয়, সৎকর্ম-সৎযাপন থেকে দূরে সরতে থাকি আমরা। আবার এই অসৎ কর্মেরই ফল বহুগুণ হয়ে আমাদের কাছেই ফিরে আসে। বহুবার আমি বলেছি, প্রকৃতি কিছু নেয় না, প্রকৃতি ফিরিয়ে দেয়। আমরা প্রকৃতিকে যা দেব, আমাদের কাছে তাই ফিরে আসবে। সর্বদা স্মরণে রাখতে হবে মতি-ভক্তি-কৃতি-মুক্তি এই চারটি শব্দ। সুমতি যুক্ত কার্যে ভক্তি আসে, সুমতি যুক্ত ভক্তি কৃতির জন্ম দেয়, এবং এই কৃতিই হল মুক্তির পথ। এখানে মুক্তি মানে ফ্রিডম, স্বাধীনতা। যে স্বাধীনতা পেতে গেলে অবশ্যই মেনে চলতে হবে অনুশাসনের কিছু সূত্র। এবং এক্ষেত্রে বাস্তুর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেমন যেমন ভবন, তেমন তেমন ভাবনা।
আমাদের বাস্তুতে যে ৪৫টি এনার্জি(উর্জা) ফিল্ড রয়েছে, তার মধ্যে অদিতি, শিখি, পার্জন্য, জয়ন্ত, মহেন্দ্র, অর্যমা, পুষা, যম, ভৃঙ্গরাজ, মৃগ, পিতৃ, পুষ্পদন্ত, সুগ্রীব, এবং বরুণ এই উর্জাগুলি কিভাবে আমাদের জীবনে প্রয়োজনীয় ৬টি অনুশাসন আয়ত্ব করতে প্রভাব বিস্তার করে সে বিষয়ে আজকের পর্বে সংক্ষেপে আলোচনা করবো....
১. অ্যাক্ট প্রপারলি
সার্থক জীবন পেতে হলে সঠিক কর্ম সম্পাদন করতে হবে। যে কর্মে জ্ঞান এবং আবেগের সঠিক ভারসাম্য বজায় থাকবে। আমরা সঠিক অ্যাক্ট করতে পারবো কি না, তা অনেকাংশে নির্ভর করে আমাদের বাস্তুর উত্তর থেকে উত্তর-পূর্বের মধ্যবর্তী অদিতি ও শিখি এই দুটি অংশের উপর। এই অংশে কোনওরূপ ভুল নির্মাণ বা দূষণ থাকলে সেই বাস্তুতে বসবাসকারীরা সঠিক কর্ম সম্পাদন করতে পারেন না।
২. রিঅ্যাক্ট প্রপারলি
কোনও ঘটনার প্রতিক্রিয়া কি হবে, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাস্তুর দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে ভৃঙ্গরাজ-মৃগ-পিতৃ এই উর্জাগুলি দূষিত হলে আমদের প্রতিক্রিয়া ভুল হয়ে যায়।
৩. আত্ম-অনুশাসন
আত্ম অনুশাসন দেয় দক্ষিণের যম এবং পুষা এই অংশগুলি। বাস্তুর এই অংশে টয়লেট, নিকাশি, নীল বা কালো রংয়ের উপস্থিতি ইত্যাদি থাকলে আত্ম অনুশাসন বিঘ্নিত হয়।
৪. কর্মফল
আগেই বলেছি, প্রকৃতি কিছু নেয় না, প্রকৃতি রিটার্ন করে। যে কর্ম সম্পাদন করবো, সেই কর্মফলই ফিরে আসবে। কর্মফল প্রদান করেন পশ্চিমের বরুণ এবং পুষ্পদন্ত ও সুগ্রীব। বাস্তুর এই অংশে কোনওরূপ ভুল নির্মাণ বা রঙের উপস্থিতি সমস্যা ডেকে আনে।
৫. উজ্জ্বল ভাবমূর্তি
সমাজে বা কর্মস্থলে যে অবস্থানেই আমরা থাকি না কেন, ভাবমূর্তি বজায় রাখা জরুরি। আমাদের মন-দেহ-ব্যবহার-বাক্য-কর্ম-সম্পর্ক কোনওখানেই যাতে দাগ না লাগে সে বিষয়ে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে অবশ্যই বাস্তুর মধ্যভাগ থেকে পূর্বের মধ্যবর্তী অংশ বা অর্যমা কে ত্রুটিমুক্ত রাখতে হবে।
৬. উচ্চাকাঙ্খা প্রচুর কিন্তু কর্মে অনীহা
অনেকেই আছেন, অলিক কল্পনায় ভর করে চলেন। ইচ্ছে কোটিপতি হবেন, অথচ পরিশ্রম করতে অনীহা। এক্ষেত্রে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে, সংকল্পের পাশাপাশি তার প্রয়োগও তাৎপর্যপূর্ণ। শুধুমাত্র আরাম-বিশ্রাম করলে জগৎ জেতা যাবে না। সবার আগে নিজের মনকে জয় করতে হবে। সংকল্প সাধনে সচেষ্ট হতে হবে, তবে অভীষ্ট সিদ্ধ হবে। আত্মবিজয় করে অভীষ্ট লাভ করতে হলে বাস্তুর পূর্বদিকের তিনটি দৈব উর্জা পার্জন্য, জয়ন্ত এবং মহেন্দ্র-কে ত্রুটিমুক্ত হতে হবে।
অনুশাসন নিয়ে আজকের পর্বে আলোচনা করলাম, অটুট সংকল্প এবং অখণ্ড পুরুষকার বিষয়ে পরবর্তী পর্বে আলোচনা করবো। তবে আপনারা প্রয়োজনে দৈনন্দিন শুভাশুভ গণনার জন্য ASTRAL DAILY PLANNING COURSE শিখতে পারেন। পৃথিবীর যে কোনও প্রান্ত থেকে আপনি এই অনলাইন কোর্স (মোবাইল-মোবাইল) শেখা সম্ভব। ASTRAL DAILY PLANNING COURSE এবং বাস্তু বিষয়ক পরামর্শ পেতে WhatsApp - 86173 72545 / 98306 83986 (Payable & Non-Refundable).
ডিসক্লেইমার: এটি একটি বিজ্ঞাপন প্রতিবেদন এবং বিজ্ঞাপনদাতার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত। প্রতিবেদনে প্রকাশিত সমস্ত বক্তব্য / মন্তব্য একান্তই বিজ্ঞাপনদাতার নিজস্ব। এর সঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনের সম্পাদকীয় দফতরের কোনও সম্পর্ক নেই। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই যাচাই করে নিন।