জীবনে স্বস্তি লাভ করতে হলে, রাহুর সুপ্রভাব অত্যন্ত জরুরী।
তিথি-নক্ষত্র-যোগ প্রভৃতি গণনা বিষয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে এর আগের পর্বগুলিতে আপনাদের জানিয়েছি, সনাতন জ্যোতিষশাস্ত্র কিভাবে শুভাশুভ বিচারে চান্দ্রমাসের প্রতিটি তিথিকে ৫ ভাগে বিভক্ত করেছে (নন্দা-ভদ্রা-জয়া-রিক্তা এবং পূর্ণা) এবং এই পাঁচ প্রকারের তিথি কোন তত্ত্ব (ক্ষিতি-অপ-তেজ-মরুৎ-ব্যোম) দ্বারা প্রভাবিত, তাও আপনাদের জানিয়েছি পূর্ববর্তী পর্বগুলিতে। যেমন ভদ্রা তিথি (দ্বিতীয়া, সপ্তমী, দ্বাদশী) ক্ষিতি/পৃথ্বী তত্ত্ব দ্বারা প্রভাবিত, পূর্ণা তিথি (পঞ্চমী, দশমী, পূর্ণিমা) নিয়ন্ত্রিত হয় মরুৎ/বায়ু তত্ত্বের দ্বারা ইত্যাদি। আসলে তিথি-নক্ষত্র-আমাদের বাস্তু এককথায় বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের প্রতিটি কণায় এই পঞ্চতত্ত্বের উপস্থিতি। আমরাও অন্তিমে এই পঞ্চতত্ত্বেই বিলীন হয়ে যাই। পরমপ্রভু পরমেশ্বর এভাবেই কণায় কণায় বিরাজমান। তাই আমাদের আলোচনায় পঞ্চতত্ত্বের উল্লেখ এসেই যায়। জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, আমাদের জীবনে সরাসরি প্রভাব বিস্তারকারী গ্রহ-তারাদের মধ্যে এবং তাদের কার্য-বৈশিষ্ট্যের মধ্যে পঞ্চতত্ত্বের কোন উপাদান গুলি প্রকট আজকের পর্বে সে বিষয়ে কিছুটা আলোকপাত করবো।
যে আনন্দ-উচ্ছ্বাস-সাফল্য-তাৎপর্যপূর্ণ জীবনের স্বপ্ন আমরা দেখি, সেই জীবন যাপনের পথে অলঙ্ঘ্য বাধা হয়ে দাঁড়ায়, আমাদের ভয়, উদ্বেগ, ধৈর্য এবং আত্মবিশ্বাসের অভাব প্রভৃতি বিষয়গুলি। আপনারা কি জানেন, কোনও ব্যক্তির জন্মছকে চন্দ্র এবং রাহু দুর্বল হলে সেই ব্যক্তি কিছুতেই সমালোচনা সহ্য করতে বা সামলাতে পারেন না। জন্মছকে শুক্র এবং বৃহস্পতি অর্থাৎ দেবগুরু এবং দৈত্যগুরু কোনও কারণে দুর্বল বা অশুভ হলে সেই ব্যক্তি সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন। আপনি বা আপনার পরিচিতরা কেমন হবেন, কেমন সঙ্গ লাভ করবেন, বন্ধুরা কেমন হবেন তা নির্ভর করে জন্মছকে রবি এবং মঙ্গলের অবস্থানের উপর। মঙ্গল এবং রবি অশুভ হলে.... সেই ব্যক্তির সহযোগী বা পরিচিতমণ্ডলি ভালো হয় না। অন্যদিকে দৃষ্টিভঙ্গির স্বচ্ছতা কখনোই আসবে না যদি আপনার জন্মছকে বৃহস্পতি এবং কেতু দুর্বল থাকে। আবার যাদের জন্মছকে বুধ এবং শনি শক্তিশালী নয়, তারা মনোকষ্টে ভোগেন, আঘাত পেলে নিজে-নিজেই সেই ক্ষতে প্রলেপ দিতে পারেন না।
জীবনে সফল হতে গেলে, আত্মবিশ্বাস, প্রয়োজনে বিপদমুক্ত ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা থাকা প্রয়োজন। অথচ জন্মছকে মঙ্গল অশুভ থাকলে আত্মবিশ্বাসের অভাব ঘটবে, সারাক্ষণ ভয়ে ভয়ে থাকতে হবে। অশুভ রাহু কখনোই কনফিউশন ক্লিয়ার করতে দেবে না। রবির অবস্থান অশুভ হলে, কিছুতেই সেই ব্যক্তি নিজের ক্রোধ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না। দেখা যাবে অতিরিক্ত ক্রোধই তার সাফল্যে সবচেয়ে বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বৃহস্পতির অশুভত্বের কারণে সহকর্মী বা আত্মীয় পরিজনদের কাছ থেকে আপনাকে সর্বদা উপেক্ষা এবং অবহেলা পেতে হবে। জন্মছকে অথবা বাস্তুর অশুভ চন্দ্র আপনার মানসিক অস্থিরতা, চঞ্চলতা, উদ্বেগ প্রশমিত করতে দেবে না।
অনেক সময়ই দেখা যায় জন্মছকে রবি, চন্দ্র, মঙ্গল বা বৃহস্পতি হয়তো অশুভ অবস্থানে নেই, কিন্তু বাস্তুর সেই অংশগুলিতে ভুল নির্মাণ বা কোনও না কোনও দূষণের প্রভাব সেই বাস্তুতে বসবাসকারী ব্যক্তির জীবনে পড়ছে। আবার ঠিক এর উল্টোটাও ঘটে। বাস্তুর শুভত্ব জন্মছকের অশুভ প্রভাবকে অনেকাংশে প্রশমিত করতে পারে। যেমন বাস্তুতে রবির দিক হল পূর্ব, বাড়ির পূর্ব দিকে টয়লেট, নিকাশি, আবর্জনা, নীল রঙের আধিক্য থাকলে সেই বাড়িতে বসবাসকারীরা নিজেদের ক্রোধ-আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না, প্রতিবেশী পরিচিতদের কাছ থেকে ঝামেলা-অশান্তি পেতে হয়। অন্যদিকে যাদের বাড়ির পূর্ব দিক বাস্তুসম্মত, দেখা যায় সমাজে তাদের মান-সম্মান-প্রতিপত্তি, তাদের প্রতি অন্যদের ভক্তি অতুলনীয়। বাস্তুতে চন্দ্রের দিক উত্তর-পশ্চিম, বাড়ির ওই অংশে.... লাল, গোলাপী, কমলা, সবুজ রং, মিটারবক্স প্রভৃতি থাকলে অশুভ চন্দ্রের প্রভাব পড়তে শুরু করে। যাদের বাড়ির উত্তর-পশ্চিম অংশ বাস্তুসম্মত তাদের জীবন আনন্দ-বিনোদন-মনোরঞ্জনে পরিপূর্ণ। একই ভাবে বাস্তুর উত্তর-পূর্ব অংশ দূষণমুক্ত থাকলে সেই বাড়িতে বসবাসকারীদের কখনও স্বীকৃতির অভাব হয় না, বৃহস্পতির শুভত্বের ফল পেতে থাকেন সেই বাস্তুর জাতক-জাতিকারা। আত্মবিশ্বাস, নিজের প্রতি ধৈর্য, স্থৈর্য রাখতে হলে মঙ্গলকে এবং বাস্তুর দক্ষিণ দিককে শুভ হতেই হবে। দক্ষিণ দিকে টয়লেট, পানীয় জলের ব্যবস্থা, কুয়ো ইত্যাদি অশুভ মঙ্গলের কুপ্রভাব দিতে থাকে। আবার সমালোচনা-খোঁচানোয় বিরক্ত না হয়ে, জীবনে স্বস্তি বজায় রাখতে হলে বাস্তুর দক্ষিণ-পশ্চিম অংশকে দূষণ মুক্ত হতে হবে। দক্ষিণ-পশ্চিম অংশকে বলা হয় রাহুর দিক। জীবনে স্বস্তি লাভ করতে হলে, রাহুর সুপ্রভাব অত্যন্ত জরুরী।
এবার আসবো তত্ত্ব প্রসঙ্গে..... সমালোচনা সহ্য করা বা সমালোচনা-নিন্দা সামাল দেওয়ার ক্ষমতা দেয় চন্দ্র এবং রাহু.... যা আসলে ক্ষিতি তত্ত্ব দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। নিরাময়ের ক্ষমতা বা ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার দক্ষতা দেয় অপ/জল তত্ত্ব এবং বুধ এবং শনি এই তত্ত্ব দ্বারা প্রভাবিত। শুভ বৃহস্পতি এবং কেতুর তেজ তত্ত্ব আমাদের জীবনে স্পষ্টতা-স্বচ্ছতা আনে। রবি এবং মঙ্গল ভালো হলে, অর্থাৎ মরুৎ/বায়ু তত্ত্ব ভালো হলে পরিচিত-বান্ধব-সহযোগীদের তরফে সাহায্য মেলে এবং সাফল্যের অন্যতম প্রধান শর্ত, সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেয় বৃহস্পতি এবং শুক্র, এই দুই গ্রহই ব্যোম/আকাশ তত্ত্ব দ্বারা প্রভাবিত।
বাস্তুতে তত্ত্বের প্রভাব, নাক্ষত্রিক গণনা সহ অন্যান্য জ্যোতিষীয় তথ্য সমৃদ্ধ আমাদের আলোচনা পরবর্তী পর্বগুলিতেও চলতে থাকবে। তবে আপনারা প্রয়োজনে প্রত্যেকদিনের শুভাশুভ গণনা শিখে, দুর্ভাগ্য হ্রাস করে সৌভাগ্যকে আকর্ষণ করতে পারেন ASTRAL DAILY PLANNING COURSE-এর মাধ্যমে। পৃথিবীর যে কোনও প্রান্ত থেকে আপনি এই অনলাইন কোর্স (মোবাইল-মোবাইল) শিখতে পারেন। Daily planning অর্থাৎ, দিনের কোন সময়ে জরুরি মিটিং করবেন, কখন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেবেন, কখন সংযত আচরণ করলে ঝামেলা-ঝঞ্ঝাট এড়াতে পারবেন... আপনি নিজেই এই গণনা শিখতে পারবেন।
ASTRAL DAILY PLANNING COURSE এবং বাস্তু বিষয়ক পরামর্শ পেতে WhatsApp - 86173 72545 / 98306 83986 (Payable & Non-Refundable).
ডিসক্লেইমার: এটি একটি বিজ্ঞাপন প্রতিবেদন এবং বিজ্ঞাপনদাতার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত। প্রতিবেদনে প্রকাশিত সমস্ত বক্তব্য / মন্তব্য একান্তই বিজ্ঞাপনদাতার নিজস্ব। এর সঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনের সম্পাদকীয় দফতরের কোনও সম্পর্ক নেই। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই যাচাই করে নিন।