‘ওবেসিটি’
বর্তমানে আমরা নিজেদের অজান্তেই প্রবলভাবে যান্ত্রিক হয়ে পড়েছি। অফিসের ডেস্কে বসে কাজ হোক কিংবা ওয়ার্ক ফ্রম হোম, কম্পিউটারের সামনে থেকে ওঠার অবকাশ এখন আর তেমন হয় না। এ ছাড়াও বিভিন্ন অনলাইন অ্যাপের দৌলতে এখন আর দোকান বাজার যাওয়ার প্রয়োজনও পড়ে না। হাতের নাগালেই মিলছে সব কিছু। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ফাস্ট ফুডের প্রতি ঝোঁক। আর এই সমস্ত কারণের জন্যে, শারীরিক পরিশ্রমের অভাবে ‘ওবেসিটি’-তে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। ‘ওবেসিটি’ শরীরের এমন এক বিশেষ অবস্থা যে অবস্থায় শরীরে অতিরিক্ত চর্বিজাতীয় পদার্থ জমা হয় এবং ওজন অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। উচ্চতার চেয়ে শরীরের ওজন বেড়ে গেলে স্বাভাবিকভাবেই মানুষের সুস্থতা ও সৌন্দর্য দুটোই নষ্ট হয়। সারা বিশ্বে মৃত্যুর অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ওবেসিটি, এমনটাই দাবী করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ওবেসিটি ডায়াবেটিস মেটাবলিজম ক্লিনিকের মেডিসিন এবং ডায়াবেটিস কনসালটেন্ট চিকিৎসক আশিস মিত্র ওবেসিটি বা ওজন বৃদ্ধি নিয়ে আমাদের বিশদে ধারণা দিয়েছেন। চিকিৎসক আশিস মিত্র জানিয়েছেন, ওজন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আরও বহু রোগ দেখা দিতে পারে। সহজ ভাবে বলতে গেলে ওবেসিটি আরও অনেক রোগকে ডেকে আনে। একটি সাধারণ রোগও জটিল আকার ধারণ করে ওবেসিটির কারণে। অস্বাভাবিক ওজন বৃদ্ধির ফলে প্রথমেই যে রোগটির প্রকোপ দেখা যায় সেটি হল ডায়াবেটিস বা ব্লাড সুগার বৃদ্ধি। ব্লাড প্রেশারও বেড়ে যেতে পারে। এর সঙ্গেই রক্তে লিপিডের মাত্রা অর্থাৎ কোলেস্টেরল ও টাইগ্লিসারিড বেড়ে যায়। এই রোগগুলি থেকে শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যেমন, ফ্যাটি লিভার, যে কোনও ধরনের আর্থ্রাইটিস, অস্থিসন্ধিতে ব্যথা এই সমস্যাগুলি বাড়তে পারে।
এ ছাড়াও মেয়েদের হরমোন ঘটিত একটি রোগ দেখা যায় পলি-সিস্টিক ওভারিয়ান ডিজিজ। এই রোগ থেকেই মাসিকের সমস্যা আসতে পারে। এর পাশাপাশি মাইগ্রেন, অ্যাজমা, স্লিপ অ্যাপনিয়ার মতো রোগের প্রাদুর্ভাবও দেখা দিতে পারে। এ ছাড়াও ওবেসিটি বা ওজন বৃদ্ধির সঙ্গে প্রস্টেট ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার ও ব্রেস্ট ক্যান্সারের প্রবণতা সহ ওবেসিটি থাকলে হৃদরোগ রোগ বেড়ে যাবে, যেমন- ইস্কেমিক হার্ট ডিজিজ, হার্ট ফেলিওর ইত্যাদি আসতে পারে। এই এতগুলি রোগের প্রাদুর্ভাবের মূলে রয়েছে এই ওবেসিটি। তাই মেডিসিন এবং ডায়াবেটিস কনসালটেন্ট চিকিৎসক আশিস মিত্রের মতে, সময় থাকতেই এই ওবেসিটি নিয়ে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।
ওবেসিটি ডায়াবেটিস মেটাবলিজম ক্লিনিকে এই ওবেসিটির চিকিৎসার সুবন্দোবস্ত আছে। জেনে নিন কী ভাবে ‘ওবেসিটি’তে আক্রান্ত কোনও রোগীকে এখানে চিকিৎসা করানো হয়।
প্রথমেই, ব্যালেন্স ডায়েট অর্থাৎ রোগীর উচ্চতা অনুযায়ী আমরা একটি নির্দিষ্ট ডায়েট চার্ট দিয়ে থাকি।
দ্বিতীয়ত, রোগীর সুবিধামত আমরা নিয়মিত শরীরচর্চার পরামর্শ দিয়ে থাকি।
এর পাশাপাশি খুব প্রয়োজন হলে আমরা ডায়েট বা ওজন কমানোর জন্যে কিছু ওষুধ দিয়ে থাকি। কারণ শরীরচর্চা কিংবা ডায়েটের মধ্যে দিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে এলেও, অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি কিন্তু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভবপর হয় না। তবে এমনই ওষুধ দেওয়া হয় যেগুলির পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া প্রায় নেই বললেই চলে। এই পুরো পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে রোগীর উচ্চতা অনুযায়ী আমরা তাঁকে তাঁর নির্দিষ্ট ওজনে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে থাকি। আর ওজন বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে থাকলেই ভবিষ্যতে আরও অনেক ধরনের বড় রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হবে।
বিশদে জানতে ফোন করুন: ৯৮৩০০৫৩১৯৩
এই প্রতিবেদনটি ‘ওবেসিটি ডায়াবেটিস মেটাবলিজম ক্লিনিক’-এর সঙ্গে আনন্দবাজার ব্র্যান্ড স্টুডিয়ো দ্বারা যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত।