ট্রেন উল্টে বাংলাদেশে মৃত ৪ 

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবেড়িয়ার শাহবাজপুর সেতুর স্প্যান ভেঙে সড়ক পথে সারা দেশের সঙ্গে সিলেটের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে রয়েছে পাঁচ দিন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৯ ০৩:১২
Share:

বিপর্যয়: লাইনচ্যুত উপবন এক্সপ্রেসের কামরা। সোমবার মৌলভীবাজারে বরমচাল স্টেশনের কাছে। —নিজস্ব চিত্র।

রেলসেতুর একাংশ ভেঙে পড়ে বড়সড় দুর্ঘটনায় পড়ল বাংলাদেশের উপবন এক্সপ্রেস। সিলেট থেকে ঢাকা যাচ্ছিল ট্রেনটি। কাল রাত বারোটা নাগাদ মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার বরমচাল স্টেশনের কাছে ট্রেনটির বেশ কয়েকটি কামরা লাইন থেকে ছিটকে যায়। এ দুর্ঘটনায় তিন মহিলা-সহ চার জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মহম্মদ তোফায়েল ইসলাম। আহত প্রায় দু’শো।

Advertisement

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবেড়িয়ার শাহবাজপুর সেতুর স্প্যান ভেঙে সড়ক পথে সারা দেশের সঙ্গে সিলেটের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে রয়েছে পাঁচ দিন। এ বার মৌলভীবাজারের এই দুর্ঘটনায় কার্যত সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে সিলেট। মূলত এই সড়ক পথ বন্ধ থাকায় ক’দিন রেল পথই ভরসা ছিল সাধারণ মানুষের। দুর্ঘটনার ২২ ঘণ্টা পরে, সোমবার রাতে সিলেট লাইনে ফের ট্রেন চলাচল শুরু হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, কাল রাতে মনছড়া রেল সেতু অতিক্রম করতে গিয়েই ঘটে দুর্ঘটনা। ট্রেনের ভারে ভেঙে পড়ে মনছড়া সেতুর একটা অংশ। ১৭ কামরার উপবন এক্সপ্রেসের পিছনের অংশ লাইনচ্যুত হয়। দুর্ঘটনার জেরে গার্ডের কামরাটি খালে পড়ে যায়। দু’টি কামরা মাটিতে উল্টে যায় ও তিনটি কামরা লাইনচ্যুত হয়। যাত্রীদের চিৎকার শুনে পাশের বরমচাল বাজারের বাসিন্দারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। প্রাথমিক ভাবে তাঁরাই উদ্ধারকাজ শুরু করে কিছু যাত্রীকে বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে উদ্ধার কাজে যোগ দেয় বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। দমকল বিভাগের ১০টি ইউনিটও উদ্ধার কাজ শুরু করে। ১০টি অ্যাম্বুল্যান্সের সাহায্যে কুলাউড়া স্বাস্থ্য কেন্দ্র-সহ আশপাশের বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় আহতদের। আজ বিকেলের মধ্যে মৃত চার জনেরই পরিচয় জানা গিয়েছে। তাঁদের দেহ পরিজনের হাতে তুলেও দেওয়া হয়েছে। অধিকাংশ আহতকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

কাল মাঝরাতে এক যুবক পুলিশে ফোন করে দুর্ঘটনার খবর প্রথম জানিয়েছিলেন। ওই যুবক সময় মতো ফোন না করলে আরও অনেক প্রাণহানি হতে পারত বলে জানিয়েছে পুলিশ। দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শাহান মিয়াঁ নামের সেই যুবক বললেন, ‘‘বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলাম। রেল সেতু থেকে বেশ খানিকটা দূরে ছিলাম তখন। হঠাৎ বিকট শব্দ কানে আসে। সেই সঙ্গে ভেসে আসে মানুষের কান্না আর আর্তনাদ। তাকিয়ে দেখি, সেতু ভেঙে ট্রেনের একটি কামরা নীচে জলে পড়েছে। তখনই পুলিশে ফোন করি।’’

আজ বিকেলের মধ্যেই ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে বলে জানান মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক। রেল মন্ত্রকের সিনিয়র তথ্য অফিসার মহম্মদ শরিফুল আলম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এই দুর্ঘটনার তদন্তে আঞ্চলিক ও বিভাগীয় কর্মকর্তা পর্যায়ের সদস্যদের নিয়ে পৃথক দু’টি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।

উভয় তদন্ত কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement