বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
এক জনও রোহিঙ্গা শরণার্থী ফিরেছে, তার প্রমাণ দেওয়ার জন্য মায়ানমার সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানালেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
শুক্রবার কলকাতায় তিনি বলেন, ‘‘ঢাকায় মায়ানমার দূতাবাস থেকে বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হয়েছে, প্রায় ৪০০ রোহিঙ্গা শরণার্থী স্বেচ্ছায় রাখাইন প্রদেশে ফিরে গিয়েছেন। কিন্তু তার প্রমাণ কোথায়? বিদেশি সাংবাদিকদের নিয়ে গিয়ে দেখাতে পারবে তারা? কিংবা রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রতিনিধিকে? তঞ্চকতা ছেড়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ঘরে ফেরানোর বিষয়টিকে তারা গুরুত্ব দিক।’’
বাংলাদেশের শিবিরে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ৮ লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে ফেরানোর বিষয়ে মায়ানমার একেবারেই আন্তরিক নয় বলে এ দিন ক্ষোভ প্রকাশ করেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘ভারত ও চিন-সহ প্রতিবেশী দেশগুলির উচিত এ বিষয়ে মায়ানমারের উপরে চাপ সৃষ্টি করা।’’ মন্ত্রী জানান, শরণার্থীদের ফেরানোর জন্য দু-দু’বার চেষ্টা করা হলেও এক জনও ফিরতে চায়নি। তাঁর অভিযোগ, শরণার্থীদের আস্থা অর্জনের জন্য কোনও পদক্ষেপ করেনি মায়ানমার সরকার। মোমেনের কথায়, ‘‘সীমান্তের ও পারে মায়ানমারের ভূখণ্ডে যে ৪ লক্ষ ঘরছাড়া রোহিঙ্গা বসে রয়েছেন, তাঁদেরই ঘরে ফেরায়নি ও দেশের সরকার। এখন ৪০০ রোহিঙ্গা ঘরে ফিরেছে বলে মিথ্যা ঘোষণা করে বিশ্বকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে তারা। আমি বলছি, বাংলাদেশি শিবিরের রেজিস্টার্ড রোহিঙ্গা শরণার্থীদের এক জনও রাখাইন প্রদেশে নিজেদের ঘরে ফেরেনি! তাদের ফেরানোর কোনও বন্দোবস্ত তারা করছে না।’’ মন্ত্রী জানান, দু’বছর ধরে ৮ লক্ষেরও বেশি শরণার্থীর ভরণপোষণের চাপ তো রয়েছেই, সেই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলার অবনতিও ঘটতে শুরু করেছে কক্সবাজার, টেকনাফ অঞ্চলে। মাদক চোরাচালান ও চুরি-ডাকাতির ঘটনায় রোহিঙ্গারা জড়িয়ে পড়ছেন। শরণার্থীদের ঘরে ফেরানোটা এখন বাংলাদেশ সরকারের কাছে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কলকাতার মোহরকুঞ্জে এ দিন বাংলাদেশ বইমেলার উদ্বোধন করেন বিদেশমন্ত্রী মোমেন। তার পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, এ মাসের ২২ তারিখে কলকাতায় আসছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে এই সফরে রাজনীতির স্থান নেই বলে দাবি করেন মোমেন। এ বিষয়ে একটি প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের নতুন সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণে দু’দেশের টেস্ট ক্রিকেট দেখতে কলকাতায় আসছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। পশ্চিমবঙ্গের নেতাদের সঙ্গে তিনি সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে পারেন। তাতে যদি তিস্তার জল গড়ায়, সেটা ভালই হবে। কারণ বহু দিন ধরেই ঝুলে রয়েছে বিষয়টি। বাংলাদেশের মানুষের কাছে তিস্তা চুক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’’