প্রতীকী ছবি
‘পথেই হবে পথ চেনা’… সব সফরেই একটা উন্মাদনা জড়িয়ে থাকে। থাকে একটা চিরসবুজ মন। সে মন বারে বারে ছুটে যায়, পথে নামে; কখনও পায়ে হেঁটে, কখনও বাইকে, কখনও বা সাইকেলে। তবে সে সফরের সবটাই কি আর মসৃণ? বিপদ আছে, আছে সমস্যা। তবু আগেভাগে প্রস্তুতি নিলে, সব দিক মাথায় রেখে পথে নামলে অনেকটাই এড়ানো যায় সে সব ঝক্কি! যেমন আপনি যদি বাইক নিয়ে কোনও সফরে যান, তবে জেনে রাখতে হবে এই কয়েকটি বিষয়-
ব্রেকডাউনে ব্যবস্থা: টায়ার পাংচার হলেই বিপদ। সেক্ষেত্রে পোর্টেবেল এয়ার পাম্প থেকে শুরু করে পাংচার রিপেয়ার কিট্, সবই সঙ্গে নিতে হবে। ক্লাচ, ব্রেক লিভার- এই সমস্ত কিছুর সমস্যার বিষয়ে আগে থেকে শিখে নিতে হবে। বিশেষত, দুর্গম বা অচেনা পথে সফরের ক্ষেত্রে এ সব কিছু নিজে না জানলে ভীষণ সমস্যা। কারণ যে রাস্তায় আপনি যাচ্ছেন, সেখানে হয়তো এত দিন কেউই যায়নি। ইঞ্জিনের সমস্যা হলে অনেক সময়েই অপেক্ষা ছাড়া গতি থাকে না। এই সমস্যা খুব উন্নত ধরনের বাইকেও হতে পারে। তখন সফরের অন্য যাত্রীদের জন্য অপেক্ষাই হল একমাত্র উপায়।
খাবার-জলের জোগান: মনে করুন এমন কোনও জায়গায় গিয়েছেন, যেখানে জনবসতিই প্রায় নেই, খাবার তো দূর অস্ত। সে ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত পরিমাণে ড্রাই ফ্রুটস সঙ্গে রাখতে হবে, যাতে এক–দু'দিন চালিয়ে নিতে পারেন। এ ছাড়া ডিহাইড্রেশন যাতে না হয়, তার জন্য দু–তিন লিটারের জল সঙ্গে রাখতে হবে, যা আপনি বাইক চালাতে চালাতেই খেতে পারবেন।
যোগাযোগ ও বডি ল্যাঙ্গোয়েজ-লিড, সেকেন্ড লিড ও স্যুইপ: একটা নির্দিষ্ট অনুশাসনে চলে বাইক ট্রিপ। এ ছাড়া গ্রুপের সকলকেই নিজের আগের ও পরের জনের প্রতি দায়িত্বশীল হতে হয় বেশি করে। পথে যেতে যেতে যদি কেউ খেয়াল করেন, পিছনের জনের সঙ্গে দুরত্ব বেশি হয়ে গেছে তবে আগের জনকে সেটা জানাতে হবে বিশেষ সংকেতের মাধ্যমে। গ্রুপে কেউ যদি বাঁ হাত তোলেন বাইক চালানোর সময়ে, বুঝতে হবে কিছু সমস্যা হয়েছে। এ ছাড়া সামনে যদি অতিরিক্ত দুর্গম পথ বা বাম্পার থাকে, তা হলেও বিশেষ সংকেত দিতে হবে পরবর্তী জনকে।
প্রাথমিক চিকিৎসা: প্রয়োজনীয় প্রাথমিক চিকিৎসার জিনিস প্রত্যেককেই সঙ্গে রাখতে হবে। এ ছাড়াও অতিরিক্ত চিকিৎসার জিনিস যেমন, বিভিন্ন স্প্রে, ব্যথার ওষুধ ইত্যাদি থাকবে শেষ আরোহীর কাছে। দলে কেউ যদি অসুস্থ হয়, তবে নির্দিষ্ট আরোহী অথবা তার আগে ও পরের জন বাকি সকলকে জানান দেবে বিশেষ সংকেতের মাধ্যমে। বাঁ হাত মুঠো করে উপরে কেউ তুলছে মানে, জটিল কিছু হয়েছে, এখনই থামতে হবে সকলকে। বাইক সফরে পথ দুর্ঘটনা হতেই পারে। সেই সময় ‘সুইপার’ বা যিনি শেষে থাকেন, তিনিই তৎপর হন সব সামলাতে।
গ্যাজেটের সুবিধা: ব্লু টুথ থেকে শুরু করে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ গ্যাজেট সঙ্গে রাখতে হবে। বাইক চালানোর সময়ে নিজের দলের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে সেগুলি খুব উপযোগী। এ ছাড়া, সুন্দর ছবি তুলতেও তো ভাল মোবাইল জরুরি!
সুরক্ষায় নজর: বাইক নিয়ে যেখানেই যান, প্রথমেই চোখ থাকুক সুরক্ষার বিষয়টিতে। যত বেশি সম্ভব রাইডিংগিয়ার, রাইডিং প্যাড, হেলমেট, গ্লাভস্, হাঁটু অবধি জুতো সঙ্গে রাখবেন। এগুলো ছাড়া বাইক ট্রিপে যাওয়া উচিত নয়, সে যত গরমই থাকুক না কেন। আর তাপমাত্রা যতই হোক, লেদার স্যুট পরতেই হবে সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।