পুজো মানেই ভিড়ে ঠাসা কলকাতা। অনেকেই সেই ভিড়ে হারিয়ে না গিয়ে ঘুরে আসতে চান শহরের আনাচে-কানাচে কোনও এক প্রান্তে। যে প্রান্তে প্রকৃতির কোলে মিশে যাওয়া যায়। হারিয়ে যাওয়া যায় নিজের মতো করে। কিন্তু কোথায় যাব? কেন যাব? উত্তর নিয়ে এলাম আমরা। ছবি ও তথ্য সৌজন্যে: ইজিফসো ব্যাকপ্যাকার্স।
মঙ্গলগঞ্জ ব্যাকপ্যাকার্স ক্যাম্প: ভূতের গল্প শুনতে কার না ভাল লাগে? তা যদি আবার কয়েকশো বছর পুরনো বাড়িতে হয়, ঘন জঙ্গলের মধ্যে, তা হলে তো কথাই নেই! সকালে ইছামতীতে নৌকা করে পারমাদান ঘুরে দেখা, রাতে জোনাকির আলোয় ব্যাম্বু চিকেন। এমনই এক অন্য রকম ছুটি কাটাতে যেতেই হবে মঙ্গলগঞ্জের ক্যাম্পে। কলকাতা থেকে এখানকার দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার। থাকা, খাওয়া ও ক্য়াম্প ফায়ার নিয়ে মাথাপিছু খরচ পড়বে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা। ছবি ও তথ্য সৌজন্যে: ইজিফিসো ব্যাকপ্যাকার্স
হাতিপাথর ব্যাকপ্যাকার্স ক্যাম্প: ব্যস্ত জীবনের শান্তির খোঁজ বলতে এক কথায় হয়তো হাতিপাথরকেই বলে! কংসাবতীর জল যখন পাথরের উপর দিয়ে বয়ে চলে, জঙ্গলের মধ্যে থেকে দেখা সে দৃশ্য ভাষায় বর্ণনা করা খুব কঠিন । নদীতে পড়ে থাকা বিশালাকার পাথর থেকেই পুরুলিয়ার এই প্রত্যন্ত গ্রামের নামকরণ। নদীর পাশেই ব্যাকপ্যাকার্স ক্যাম্পের ঠিকানা। কলকাতা থেকে হাতিপাথর ক্যাম্পের দূরত্ব প্রায় ২২৫ কিলোমিটার। থাকা, খাওয়া ও ক্য়াম্প ফায়ার নিয়ে মাথাপিছু খরচ পড়বে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা। ছবি ও তথ্য সৌজন্যে: ইজিফিসো ব্যাকপ্যাকার্স।
মুন্দিরা ব্যাকপ্যাকার্স ক্যাম্প: বীরভূমে অজয় নদের ধারে বাউলদের গ্রাম। সেই গ্রামের বাতাসে কান পাতলেই ভেসে আসে বাউল গানের মনকেমন করা সুর। তারই মধ্যে সোনাঝুরির জঙ্গলে ক্যাম্পিংয়ের সুযোগ । জয়দেব-কেন্দুলিতে তৈরি হয়েছে এমনই এক ক্যাম্প । সেখান থেকে মাত্র কয়েক মিনিটের দূরত্বে ঢুঁ মেরে আসতে পারেন জয়দেব ধাম ও গড় জঙ্গলে। কলকাতা থেকে দূরত্ব প্রায় ১৮৪ কিলোমিটার। থাকা, খাওয়া ও ক্য়াম্প ফায়ার নিয়ে মাথাপিছু খরচ পড়বে ১১০০ থেকে ১৩০০ টাকা। ছবি ও তথ্য সৌজন্যে: ইজিফিসো ব্যাকপ্যাকার্স।
মৌসুনি ব্যাকপ্যাকার্স ক্যাম্প: বিশ্ব উষ্ণায়ন, সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির মতো সমস্যার এক জলজ্যান্ত উদাহরণ মৌসুনি দ্বীপ। সেখানে প্রকৃতির তাণ্ডব, বেপরোয়া জোয়ার-বানের আনাগোনা সয়েই গ্রামের মানুষের বেঁচে থাকার লড়াই হল মৌসুনি। আপনার এ বারের ছুটি হয়ে উঠতে পারে তাঁদের জন্য কিছু করার সুযোগ। মৌসুনির সংগ্রামের কথা সবার কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা। কলকাতা থেকে মৌসুনি ব্যাকপ্যাকার্স ক্যাম্পের দূরত্ব প্রায় ১২০ কিলোমিটার। এখানে থাকা, খাওয়া ও ক্য়াম্প ফায়ার নিয়ে মাথাপিছু খরচ ১১০০ থেকে ১৫০০ টাকা। ছবি ও তথ্য সৌজন্যে: ইজিফিসো ব্যাকপ্যাকার্স।
বাগদা ব্যাকপ্যাকার্স ক্যাম্প: ওড়িশায় নির্জন বঙ্গোপসাগরের তীরে কাজু বনে ক্যাম্পিং! এমন অভিজ্ঞতা চাইলে ঘুরে আসুন বাগদা ব্যাকপ্যাকার্স ক্যাম্পে। রাতে ক্যাম্প ফায়ারে সমুদ্রের গর্জন শুনতে শুনতে বার-বি-কিউ চিকেন খাওয়ার মজাই আলাদা! কলকাতা থেকে বাগদা ব্যাকপ্যাকার্স ক্যাম্পের দূরত্ব প্রায় ২৪৫ কিলোমিটার। থাকা, খাওয়া ও ক্য়াম্প ফায়ার নিয়ে মাথাপিছু খরচ পড়বে ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা। ছবি ও তথ্য সৌজন্যে: ইজিফিসো ব্যাকপ্যাকার্স।
ঝিঙ্কপাহাড়ি ব্যাকপ্য়াকার্স ক্যাম্প: আপনি কি অ্যাডভেঞ্চার-প্রিয়? ঝর্না, নদী, জঙ্গলে ক্যাম্পিং কি আপনার পছন্দের তালিকায়? তা হলে একছুটে পৌঁছে যান ওড়িশার সিমলিপাল ফরেস্টের এক ‘নাম না জানা’ গ্রামে। ব্যাকপ্যাকার্স ক্যাম্পের ঝিঙ্কপাহাড়িতে একপাল হাতির দেখা পেলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। কলকাতা থেকে ঝিঙ্কপাহাড়ি ক্যাম্পের দূরত্ব প্রায় ২২৮ কিলোমিটার। এখানে থাকা, খাওয়া ও ক্য়াম্প ফায়ার মিলিয়ে মাথাপিছু খরচ ১১০০ থেকে ১৩০০ টাকা। ছবি ও তথ্য সৌজন্যে: ইজিফিসো ব্যাকপ্যাকার্স।
মন্দারমণি ব্যাকপ্যাকার্স ক্যাম্প: মন্দারমণি থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে পুরুষোত্তমপুরে লাল কাঁকড়ায় ভরা সমুদ্রতট। তার উপরেই কাঠের কেবিনে থাকার ব্যবস্থা। মন্দারমণি ব্যাকপ্যাকার্স ক্যাম্পে সাগরপারের ছুটির একেবারে অন্য স্বাদ। কলকাতা থেকে এখানকার দূরত্ব প্রায় ১৭১ কিলোমিটার। থাকা, খাওয়া ও ক্য়াম্প ফায়ার নিয়ে মাথাপিছু খরচ ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা। ছবি ও তথ্য সৌজন্যে: ইজিফিসো ব্যাকপ্যাকার্স।
দোলাডাঙা ব্যাকপ্যাকার্স ক্যাম্প: পুরুলিয়ার আদিবাসী গ্রাম দোলাডাঙা। লাল মাটির পথ পলাশ বনের মধ্যে দিয়ে যেখানে পৌঁছয়, সেখানে জঙ্গল আর হ্রদের নিঃশব্দ সহাবস্থান। এখানেই কাটিয়ে ফেলতে পারেন এ বারের অ্যাডভেঞ্চার সফর। ক্যাম্পফায়ারে শালপাতা চিকেন আর বিশাল হ্রদ। প্রকৃতিপ্রেমী মনের রসদ একরাশ প্রশান্তি। কলকাতা থেকে এখানকার দূরত্ব প্রায় ২৩৬ কিলোমিটার। থাকা, খাওয়া ও ক্য়াম্প ফায়ার নিয়ে মাথাপিছু খরচ পড়বে ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা। ছবি ও তথ্য সৌজন্যে: ইজিফিসো ব্যাকপ্যাকার্স।
গুরদুম ব্যাকপ্যাকার্স ক্যাম্প: পাকদণ্ডী বেয়ে একটু উপরে উঠতেই, এ যে অন্য জগৎ! পাইন জঙ্গলের সামনে কেবিন ইন দ্য উডস। সামনে মেঘেদের ছোটাছুটি। যেন মেঘের উপরেই দাঁড়িয়ে আছেন আপনি! রাত গড়ালে ওপারের পাহাড়ে দার্জিলিংয়ের আলোগুলো তারার মতো জ্বলে। বাকেট লিস্টে এ সব আছে নাকি? তা হলে ঘুরেই আসুন এই ক্য়াম্পে। কলকাতা থেকে এখানকার দূরত্ব প্রায় ৬৫৮ কিলোমিটার। থাকা, খাওয়া ও ক্য়াম্প ফায়ার নিয়ে মাথাপিছু খরচ পড়বে ১১০০ থেকে ১৩০০ টাকা। ছবি ও তথ্য সৌজন্যে: ইজিফিসো ব্যাকপ্যাকার্স।
ডাওহিল হোমস্টে ক্যাম্প: হাড়হিম করা সব গল্প যে জায়গাকে ঘিরে, ঠিক সেই জঙ্গলের পাশে থাকার অনুভূতি কেমন? তা অনুভব করতে আরও একটা অ্যাডভেঞ্চার ডেস্টিনেশন হতে পারে ডাওহিল। ব্রিটিশ আমলের বাড়িঘর, আর ঘন কুয়াশায় ঘেরা পাইন বন। তারই মাঝে ডাওহিল হোমস্টেতে থাকার মজাই আলাদা, বলছেন প্রকৃতি ও রোমাঞ্চপ্রেমীরা। কলকাতা থেকে এখানকার হোমস্টের দূরত্ব প্রায় ৬১৩ কিলোমিটার। শিলিগুড়ি থেকে দূরত্ব প্রায় ৭৬ কিলোমিটার। এখানে থাকা, খাওয়া নিয়ে মাথাপিছু খরচ ১৬০০ টাকা। ছবি ও তথ্য সৌজন্যে: ইজিফিসো ব্যাকপ্যাকার্স।
কাফেরগাঁও হোমস্টে ক্যাম্প: কালিম্পংয়ের জনপ্রিয় লোলেগাঁও থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে এক নাম না জানা গ্রাম কাফেরগাঁও। এখানে একদম একান্তে পাওয়া যায় কাঞ্চনজঙ্ঘাকে। চার দিকে শুধুই সবুজ আর অসংখ্য পাখির কলকাকলি। আলসে ছুটি কাটানোর আদর্শ ঠিকানা হতে পারে কাফেরগাঁও। এই নির্জন শান্ত পরিবেশে থাকার জন্য রয়েছে কাফেরগাঁও হোমস্টে। কলকাতা থেকে দূরত্ব প্রায় ৬৭৮ কিলোমিটার। শিলিগুড়ি থেকে প্রায় ৯৭ কিলোমিটার। এখানে থাকা, খাওয়া নিয়ে মাথাপিছু খরচ পড়বে ১৬০০ টাকা। ছবি ও তথ্য সৌজন্যে: ইজিফিসো ব্যাকপ্যাকার্স।
রঙ্গো ক্যাম্প: সবুজে মোড়া পাহাড়, তার বুক চিরে বয়ে চলেছে নদী। সেই নদীর উপরে সরু বাঁশের সাঁকো। ঠিক যেন ছোটবেলায় আঁকা ছবি। কালিম্পংয়ের এক ছোট্ট গ্রামেই পেয়ে যাবেন সেই কল্পনার জগতের বাস্তব রূপ। গ্রামের নাম রঙ্গো। সেখানেই হোমস্টে। পাহাড়ের কোলে স্নিগ্ধ পরিবেশে একটা দিন কাটাতে আপনার পরবর্তী ঘোরার জায়গাটি হতেই পারে রঙ্গো। কলকাতা থেকে এখানকার দূরত্ব প্রায় ৬৭৬ কিলোমিটার। শিলিগুড়ি থেকে দূরত্ব প্রায় ১০৭ কিলোমিটার। এখানে থাকা, খাওয়া নিয়ে মাথাপিছু খরচ পড়বে ১৩০০ টাকা। ছবি ও তথ্য সৌজন্যে: ইজিফিসো ব্যাকপ্যাকার্স
তা হলে আর দেরি কেন? পুজোর মরসুমে ঘুরে আসুন কলকাতার আশেপাশেই কোনও ব্যাকপ্যাকার্স ক্যাম্প থেকে। বিস্তারিত জানুন www.izifiso.com।