বেহালা নূতন দল-এর এবারের থিম-পুজোর সাজসজ্জার প্রধানতম উপাদান এক খাদ্যবস্তু- ফুচকা! আর এহেন অভিনব মন্ডপ ভাবনাকে কাজে ফুটিয়ে তুলতে এঁদের থিম শিল্পী অয়ন সাহাকে দেড় মাস যাবত সাহায্য করে চলেছেন নেদারল্যান্ডস থেকে বেহালা উড়ে আসা দুই ওলন্দাজ শিল্পী বেঞ্জামিন এবং মার্টিনা। বিদেশি এক তরুণ ও তরুণী।
বেহালা নূতন দল পুজো কমিটির সভাপতি দেবব্রত মুখোপাধ্যায় আনন্দবাজার অনলাইন-কে বলছেন, গত বছর ইউনেস্কোর স্বীকৃতি ও পুরস্কার যথাক্রমে বাংলার দুর্গাপুজো এবং বেহালা নূতন দল পাওয়ার পর এবার তাদের সঙ্গে ব্রিটিশ কাউন্সিল মিলে যদ্দূর শোনা যাচ্ছে, কলকাতার তিন-চারটে বড় পুজোয় বিদেশি কলাশিল্পীদের আনানোর সব বন্দোবস্ত করেছে। যার ভেতর পড়েছে বেহালার জেমস লং সরণির একেবারে গায়ের এই বারোয়ারি পুজো।
এঁদের যুক্তি, ভাত-ডাল-মাছের ঝোলের মতো ফুচকা আমাদের দৈনন্দিন খাবার নয়। কিন্তু রসনার তুষ্টি ওতেই মেটে! মনের তুষ্টি যে খাদ্যটি খেলে আমাদের বেশিরভাগের হয়, সেই ফুচকা দিয়ে এঁদের প্যান্ডেল হচ্ছে বলে থিমের নাম - তুষ্টি। বাঁশ, কাঠ, টিন, নানা রঙের কাপড়ে সাজানো প্যান্ডেলে ছোট, খুব ছোট, মাঝারি, বড়— নানা সাইজের ফুচকা নানান কায়দায় জুড়ে জুড়ে বিভিন্ন শৈল্পিক আঙ্গিকে থাকছে সার্বিক ভাবনাটায়। অর্থাৎ তুষ্টি-থিমে।
এই ফুচকা একেবারে আসল ফুচকা! অরিজিনাল। কোনও কৃত্রিমতা নেই তাতে। বড়বাজার থেকে বস্তা-বস্তা ফুচকা কিনে, সেগুলো এঁদের ক্লাবঘরে এক ডজন রাঁধুনি বিশাল বড় বড় কড়াইয়ে তেলে ভাজছে। আর একটা বিশেষ রাসায়নিক মাখিয়ে প্যান্ডেলে সাজানো চলছে। রাসায়নিক মাখানোর কারণ, ফুচকা যাতে শক্ত হয়, না ভাঙে।
পুরো কাজটায় গোড়ার থেকে থিম শিল্পী অয়ন সাহাকে দুই ওলন্দাজ আর্টিস্ট সাহায্য করে চলেছেন। দিব্যি মানিয়ে নিয়েছেন, পুজো কমিটির দোতলার ক্লাব ঘরে দেড় মাস বসবাস করছেন, ডাল-ভাত-শুক্তো পর্যন্ত খাচ্ছেন। এবং অতি অবশ্যই তেঁতুল জলে চোবানো ফুচকা খেয়েছেন বেঞ্জামিন-মার্টিনা। তবে সে আর ক’টাই বা! প্যান্ডেলে বরং ফুচকা লাগছে ৫০-৬০ হাজরেরও বেশি। অভূতপূর্ব এমন প্যান্ডেলের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এখানে প্রতিমাও গড়েছেন অয়ন সাহা।
ভাবনা : তুষ্টি
ভাবনায় ও প্রতিমা নির্মাণে : অয়ন সাহা
কীভাবে যাবেন : বেহালায় ১৪ নম্বর বাস স্ট্যান্ড থেকে অল্প এগিয়ে জেমস লং সরণির আগে ডান দিকের গলির ভেতর এই পুজো
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।