বীরভূমের কালীক্ষেত্র গুলির মধ্যে অন্যতম সিউড়ি শহর থেকে কিছুটা দূরে পুরন্দরপুরের কাছে বেহিরা কালীতলা। এই মন্দির ঘিরে আছে অজস্র কাহিনি। প্রত্যেক বছর কালীপুজোর অমাবস্যায় এখানে ভক্তদের ঢল নামে।
জঙ্গলের ভিতরে নিরিবিলি অঞ্চলে এই পুজো হয়ে আসছে বহু বছর ধরে। এই মন্দিরের কালী নিম্ববাসিনী কালী নামে পরিচিত গোটা বীরভূম তথা বাংলা জুড়ে। এই নিম্ববাসিনী মায়ের এক বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে। এখানে দেবী দুর্গা পুজোর সময়ে দুর্গা, অন্নপূর্ণা, কালী এবং অন্যান্য রূপে পূজিত হয়ে থাকেন।
পুরন্দরপুরের এই বেহিরা কালীমন্দির সম্পর্কে নানা মুনির নানা মত। কথিত, কয়েক শতাব্দী আগে অষ্টাবক্র মুনি দেবী অন্নপূর্ণাকে সঙ্গে নিয়ে কাশী থেকে বক্রেশ্বরের দিকে যাচ্ছিলেন বক্রেশ্বর নদী পথে। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল বক্রেশ্বরে গিয়েই দেবীকে প্রতিষ্ঠিত করা।
কিন্তু যাত্রাপথে বর্তমান পুরন্দরপুর বেহিরা গ্রামে বক্রেশ্বর নদীতে নৌকা আটকে যায় জলের অভাবে। সেই সময়ে সেখানেই তপস্যা করছিলেন ভরদ্বাজ মুনি। তিনি অষ্টাবক্র মুনির কাছ থেকে অন্নপূর্ণাকে উদ্ধার করে এই স্থানে এক নিম গাছের তলায় দেবীর প্রতিষ্ঠা করেন।
ভরদ্বাজ মুনি এবং অষ্টাবক্র মুনির হাতে এখানে মহাদেবের দু’টি মন্দির তৈরি হয়েছে। রয়েছে দু’টি শিবলিঙ্গ। মন্দিরের পিছনে রয়েছে সেই ঐতিহ্যবাহী নিমগাছটি।
এ ছাড়াও রয়েছে কিছু সমাধিস্থল ও একটি আশ্রম। এই মন্দির প্রাঙ্গণে আজও জঙ্গলে ঢাকা, নিরিবিলি পরিবেশ। এক কোণে অধিষ্ঠিত দেবী।
এখানে তাঁর এক মৃন্ময়ী রূপ দেখা যায়। পরনে বেনারসি, নাকে নথ। এখানে দেবীর সঙ্গে মহাদেবকে দেখা যায় না যদিও।
এর পিছনে রয়েছে অন্য কাহিনি। কাশীতে বাবা বিশ্বনাথকে রেখে অষ্টাবক্র মুনি একা মাকে নিয়ে এসেছিলেন বলেই নাকি এখানে মহাদেব নেই। তবে তিনি না থাকলেও পাশে রয়েছে একটি শিবলিঙ্গ। এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ