তেলেঙ্গাবাগান সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি
হাতে গোনা মাত্র আর কয়েকটা দিন। তার পরেই দুর্গোৎসবের আনন্দে মেতে উঠবে বাঙালি। প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। থিমের আধিক্য চোখে পড়ছে কলকাতার বড় বড় পুজো কমিটিগুলিতে। তেমনই উত্তর কলকাতার সবচেয়ে পুরনো নাম করা পুজো কমিটিগুলির মধ্যে তেলেঙ্গাবাগান সর্বজনীন দুর্গোৎসব অন্যতম। নতুনত্ব কী থাকছে এবার তাদের ভাবনার? খোঁজ নিল আনন্দবাজার অনলাইন।
৫৮ তম বর্ষে পদার্পণ করে তেলেঙ্গাবাগানের এ বছরের ভাবনা ‘প্রান্তজনের আত্মকথন’। তেলেঙ্গাবাগান পুজো কমিটির অফিস সম্পাদক অমৃত সাউ আনন্দবাজার অনলাইকে থিমের সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন। সীমান্ত বাংলার লোক জীবন ও লোক উৎসবের সঙ্গে সাবেকি ঐতিহ্যপূর্ণ দুর্গোৎসবের চিরাচরিত রীতি আবহমান কাল থেকে দিব্যি মিলেমিশে রয়েছে। সেই সব প্রান্তিক মানুষের রোজকার টিকে থাকবার লড়াই, অদম্য জেদ আর স্বপ্ন-উড়ানের গল্পই আমাদের এবারের ভাবনা। আর সেই গোষ্ঠীর মানুষদের জীবন সংগ্রাম, জীবন জীবিকা, সংসারের দায়িত্ত্বভার স্বেচ্ছায় কাঁধে তুলে নেওয়ার ভাবনাই তেলেঙ্গাবাগানের এ বারের মূল বিষয়। সমগ্র কাঠামোটি তৈরি করা হচ্ছে লোকপার্বন টুসু বা তুষুর আঙ্গিকে।
অঘ্রান মাসের সংক্রান্তি থেকে পৌষ সংক্রান্তি পর্যন্ত পুরো এক মাস জুড়ে চলে টুসু উৎসব আর শেষ দিনে টুসু ভাসানের মধ্যে দিয়ে চূড়ান্ত প্রকাশ ঘটে এই উদ্যাপন মধ্য দিয়ে। দুর্গা পুজোর সাথে প্রকৃতিগত সাদৃশ্য বলতে টুসু যেন মা দুর্গার মতোই রাঢ় বাংলার ঘরের মেয়ে। তাই থিমের সঙ্গে সংগতি রেখে তৈরি হচ্ছে প্রতিমাও। টুসু উৎসবের প্রধান উপাদান সঙ্গীত। আর সেই সঙ্গীতের মাধ্যমেই বহিঃপ্রকাশ ঘটে নারী জীবনের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা সবকিছুর। তারা যেন কখনও বা দেবীর মতোই দশভুজা আবার কখনও বা মানবীর মতো সর্বংসহা আর এই দু'য়ের মিলনেই মূর্ত হবে দেবীপ্রতিমার মৃন্ময়ী রূপ।
থিম শিল্পী গোপাল পোদ্দার জানিয়েছেন, ‘‘এ বছর তেলেঙ্গাবাগানের পুজোর মূল আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকছে ঠোঙার তৈরি পুজো মণ্ডপ। যা কলকাতার থিম পুজোর ইতিহাসে এই প্রথম বার। স্বল্প বাজেটে পরিবেশ দূষণ রোধের চিন্তাভাবনা নিয়ে তৈরি হচ্ছে ঠোঙার তৈরি পুজো মণ্ডপ। ’’ এ ছাড়াও তিনি আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন এই ধরনের পুজোর মণ্ডপ ভাবনার নেপথ্যের অন্য একটি দিক। ২০২১ সালেই আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত একটি খবর পড়েই ঠোঙা দিয়ে মণ্ডপ সজ্জার এমন অভিনব চিন্তাভাবনা শিল্পীর মাথায় এসেছিল। এ বছর তেলেঙ্গাবাগানের পুজো মণ্ডপে সেই ভাবনারই বাস্তবায়ন ফুটে উঠবে বলে জানিয়েছেন শিল্পী গোপাল পোদ্দার।
কী ভাবে যাবেন?
বিধাননগরে স্টেশনে নেমে উল্টোডাঙ্গাগামী অটো ধরে তেলেঙ্গাবাগানে বাসস্টপে নামলেই দেখতে পাবেন এই পুজো মণ্ডপটি।
থিম: প্রান্তজনের আত্মকথন
থিম শিল্পী: গোপাল পোদ্দার
প্রতিমা শিল্পী: ভাস্কর প্রদীপ রুদ্র পাল
এ বছর তেলেঙ্গাবাগান সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির সহযোগী ডিজিটাল মিডিয়া পার্টনার হিসেবে থাকছে আনন্দবাজার অনলাইন।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।