বাংলা তথা ভারতে কালীপুজো নতুন কিছু নয়। অলিতে-গলিতে, বাড়িতেও অমাবস্যায় কালীপুজো হয় সর্বত্র।
কিন্তু সীমান্তের ওপারে মুসলিম মহল্লায় মন্দিরে কালীপুজো হচ্ছে, ভাবতে খানিক অবাক লাগে বইকি!
এই কালীপুজো কিন্তু নতুন নয়। দেশ ভাগ হওয়ার অনেক আগে এর সূচনা। প্রায় ১৫০০ বছরের পুরনো পুজো এই কালাটেশ্বরী মন্দিরের পুজো।
বালোচিস্তানের কালাট অঞ্চলে এই কালীমন্দির পাকিস্তানের অন্যতম পুরনো মন্দির, যেখানে পুজো দিতে হিন্দুদের পাশাপাশি আসেন মুসলিমরাও।
অতীতে এই মন্দির ভাঙার নাকি অনেক চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু কখনওই তা সফল হয়নি। অনেকে বিশ্বাস করেন, দেবী কালীর ঐশ্বরিক শক্তিই ব্যর্থ মন্দির ধ্বংস করার প্রচেষ্টা ব্যর্থ করেছিল।
দেবী সদা ক্রোধান্বিতা, রণরঙ্গিনী, করালবদনা। স্থানীয়রা বিশ্বাস করেন, দেবী সব রকম বিপদ থেকে সর্বদা তাঁদের রক্ষা করবেন।
২০ ফুট উচ্চতার প্রতিমা রণসাজে সজ্জিতা দশভুজা। গলায় ঝুলছে করোটির মালা। দশ হাতে ত্রিশূল,গদা, তরবারি, ঢাল, শঙ্খ, চক্র, ধনুক, নরমুণ্ড ও খঞ্জর।
কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠান চলে এখানে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দর্শনার্থীদের ভিড় জমে। ভিড়ের ধাক্কাধাক্কি, আগ্রহের আতিশয্য থেকে আলাদা রাখতে মায়ের মূর্তি এখানে কাচ দিয়ে ঘিরে রাখা।
দেবীর উপাসনা করা হয় ষোড়শোপচার ভোগ উৎসর্গ-সহ নানা আচারের মাধ্যমে। রোজ সকালে এবং সন্ধ্যায় নিত্যপুজো দেওয়া হয় মাকে।
দেবীর সামনে রাখা রয়েছে গুরু নানকের ছবি। জনশ্রুতি রয়েছে, বিভিন্ন সময় এখানে এসেছেন বিভিন্ন শিখ গুরু।
পাকিস্তানের প্রত্নতাত্বিক বিভাগের মতে, এই মন্দির পূর্ব-ইসলামিক যুগে বানানো।
ধর্ম নিয়ে এই অশান্তির সময়ে সর্বধর্ম সমন্বয়ের বার্তা দিয়ে চলেছে কালাটেশ্বরী মন্দির। এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।