বিপ্লবী বারীন ঘোষ এবং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর হাতে এই পুজোর সূত্রপাত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মূর্তি পুজোর বদলে হয়েছে ঘট পুজো। এছাড়াও নানা স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে এই পুজোর সঙ্গে।
১৯২৭ সালে পুজোর সূত্রপাত ঘটে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের হাত ধরে। পুজোর মূল উদ্দেশ্যই ছিল ব্রিটিশের চোখে ধুলো দিয়ে পুজোকে সামনে রেখে স্বদেশ আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করা। পুজোর মূল কান্ডারী ছিলেন বিপ্লবী বারীন ঘোষ এবং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস।
এই পুজো শুরু থেকে আজ অবধি প্রাচীন নিয়ম মেনে অনুযায়ী হয়ে আসছে। অষ্টমীর পুজো এবং সন্ধি পুজোতে সারা খিদিরপুরবাসী একত্রিত হন পুজা প্রাঙ্গণে। মেতে ওঠেন আনন্দে। দশমীতে মাকে বরণ করা হয়ে গেলে পাড়ার মহিলাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় লক্ষীর ভাণ্ডার। এই প্রথা শুরু হয়েছিল ১৯৫৬ সাল থেকে। এতে থাকে একটি মাটির ভাঁড়, সিঁদুর, আলতা এবং মিষ্টির বাক্স তুলে দেওয়া হয়। পরের বছর পুজোর আগে আবার কাছ থেকে সেই ভাঁড়ের টাকা সংগ্রহ করে সেই টাকায় আয়োজন করা হয় ভোগের। মায়ের গায়ে পরানো পাঁচ দিনের পাঁচ বেনারসি দান করা হয় হিন্দু, মুসলিম এবং খ্রিস্টানের মধ্যে।
এই বছরের থিম উৎসব বিজ্ঞাপনের। বিজ্ঞাপন ছাড়া এখন সর্বজনীন পুজো করা প্রায় অসম্ভব। বিজ্ঞাপনদাতার দ্বারস্থ হতে হয় পুজো কর্মকর্তাদের। সেই বিষয়কে মাথায় রেখেই এ বারের ভাবনা খিদিরপুর সার্বজনীন দুর্গোৎসব সমিতির।
পুজোর কার্যকরী সভাপতি অভিজিত দাসের কথায়, ‘‘এখন পুজো সার্বজনীন নয়, কর্পোরেট ওয়ার্ল্ডের মুখাপেক্ষি হয়ে গিয়েছে। সেই ভাবনা থেকেই এখন কোথায় দাঁড়িয়ে রয়েছে কলকাতার পুজো তাই নিয়ে আমাদের এই বছরের মণ্ডপ সজ্জা।’’
থিম : উৎসব বিজ্ঞাপনের
থিম শিল্পী : প্রবীর সাহা
প্রতিমা শিল্পী : কেষ্ট দাস
কী ভাবে যাবেন : ফ্যান্সি মার্কেটের সামনের সেতু পেরিয়ে বাঁ হাতে ১০০মিটার চলে গেলেই আনন্দময় দরিদ্র ভান্ডার। তার সামনেই দেখতে পাবেন পুজো মণ্ডপ।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।