দেবীর আরধনায় মেতে উঠেছে বাংলা। চারদিকে ঢাক-কাসরের শব্দ। আট থেকে আশি তৈরি হচ্ছে পুজো দেখার জন্য। রীতি মেনে এই যাত্রায় নিজেদের সামিল করেছে মার্লিন গঙ্গোত্রী। এই বারই তাদের প্রথম পুজো। থিমের নাম ‘বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য: সর্বধর্ম সমন্বয়’। প্রতি বছর দেশের মানুষ যে ভাবে দুর্গাপুজোর আনন্দে মেতে ওঠেন, সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সেই আনন্দ উদযাপনের সারাংশই উঠে এসেছে এই পুজোর থিমে। শুধু বাঙালি নয়, এই উৎসব সবার। থিম থেকে শুরু করে পুজোর আয়োজন, সব ক্ষেত্রেই ফুটে উঠেছে সেই ছবি। পাশাপাশি দেওয়া হয়েছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তাও। আর সেই কারণে প্রথম বছরেই এই পুজো চোখ টেনেছে মানুষের। জিতে নিয়েছে মার্লিন গ্রুপের তরফ থেকে সেরার সেরা পুরস্কার।
ভারত মানেই ‘বিভেদের মাঝে যেন মিলন মহান’। হুগলির এই পুজোতে ভারতের সেই সাম্প্রদায়িক দৃঢ়তার চিত্রকেই চিত্রিত করা হয়েছে। ধর্মীয় শাস্ত্র অনুযায়ী মা দুর্গা হিন্দুদের। তবে মা তো কারওর একার নন। তিনি সর্বজনীন। পুজোর ছত্রে ছত্রে সেই বার্তাই দিতে চেয়েছেন এই পুজোর সদস্যরা। শুধু বার্তা নয়, পুজোর আয়োজন থেকে শুরু করে অনুষ্ঠান, সব ক্ষেত্রেই হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায় হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করেছে।
পুজোর উদ্বোধন করেছেন পর্বতারোহী পিয়ালী বসাক এবং উত্তরপাড়া কোতরং পুরসভার চেয়ারম্যান দিলীপ যাদব। ষষ্ঠী থেকেই বিভিন্ন ধরনের সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। পুজো কমিটির পক্ষ থেকে দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘‘আমাদের পুজোর উদ্বোধন করেছেন পিয়ালী বসাক! তিনি সত্যিকারেরই দুর্গা। পিয়ালী বসাক হুগলির মেয়ে। আর আমাদের পুজোও হুগলি জেলারই। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা দেওয়াই ছিল আমাদের এই পুজোর প্রধান লক্ষ্য। আমদের থিম ‘বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য: সর্বধর্ম সমন্বয়’ সেই দিকটাকেই তুলে ধরছে। স্থানীয় শেখ ইয়াসিন, সালেমরা এই পুজোতে অংশগ্রহণ করেছেন। যেহেতু এটাই আমাদের প্রথম পুজো, সেহেতু আমরা চাইছিলাম নতুন কিছু করতে। পুজোর মাধ্যমে কোনও সামাজিক বার্তা দিতে। আশা করি আমরা পেরেছি।’’
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।