রবিবার লক্ষী পুজো। লক্ষী পুজো বাঙালির ঘরের পুজো। বাঙালিদের প্রায় ঘরে ঘরেই আরাধনা হয় দেবীর। আর এই তিথিতে একটা সাদা ধপধপে লক্ষী প্যাঁচা যদি বাড়িতে এসে বসে তাহলে তো কথাই নেই।
কোজাগরী পূর্ণিমার তিথিতে এই পুজো হয় বলে এর নাম কোজাগরী লক্ষী পুজো। আশ্বিন মাসের শেষ পূর্ণিমা তিথিতে ঘরে ঘরে পূজিত হন মা। তিনি ধনসম্পদের দেবী।
পুরাণ মতে দেবী কোজাগরী লক্ষী পুজোর দিন ঘরে ঘরে গিয়ে জিজ্ঞেস করেন কে জেগে আছে? যারা এই তিথিতে মায়ের আরাধনা করেন তাদের ঘরেই সারা বছর অধিষ্ঠান থাকেন দেবী। লক্ষীর জন্ম ব্রহ্মার উজ্জল অংশ থেকে। এবং ব্রহ্মার অন্ধকার দিক থেকে জন্ম অলক্ষীর।
তবে প্যাঁচাই কেন লক্ষীর বাহন এই নিয়ে কিন্তু মতভেদ রয়েছে। এক মতে এক বার সব দেব দেবী এক সঙ্গে মর্তে আসেন। তখন তাঁদের মর্তে পায়ে হেঁটে ঘুরতে দেখে খারাপ লাগে পশু পাখিদের। এবং তাঁরা দেব দেবীদের বলেন আপনাদের হয়ে আমরা ঘুরব।
পশু পাখিদের এই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যে যার মতো বাহন বেছে নেন। কিন্তু সমস্যা হয় লক্ষীর বাহন বাছার সময়। সবাই তাঁর বাহন হতে চাইলে দেবী বলেন আমি কার্ত্তিক অমাবস্যায় পৃথিবীতে আসি। সেই দিন যে আমার সঙ্গে বিচরণ করবে সেই হবে আমার বাহন।
কার্ত্তিক অমাবস্যায় রাতে দেবীর মর্তে আগমন ঘটলে দেবী দেখেন প্যাঁচাই একমাত্র রয়েছেন, এবং রাতেও সে ভাল দেখতে পায়। এইভাবেই লক্ষীর বাহন হয়ে ওঠে প্যাঁচা।
আবার অন্য মতে ধান হল লক্ষীর প্রতীক। তাই যারা ধান নষ্ট করে তাদের উপর দেবী অসন্তুষ্ট হন। ইঁদুর ধান ক্ষেতে বাস করে, ও ফসলের ক্ষতি করে। প্যাঁচা ইঁদুর খেয়ে ক্ষেতকে রক্ষা করে। তাই প্যাঁচা লক্ষীর বাহন।
আরও এক মতে, জাগতিক মোহ মায়া ত্যাগ করে সাধনার উদ্দেশ্যে ব্রতী হয়ে সেবা কাজে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন তিনিই দেবীর কৃপা লাভ করবেন। এই সময় তাকে পেচক ধর্মের পালন করতে হয়। তাই প্যাঁচাকে ধৈর্য, বুদ্ধি এবং প্রজ্ঞার প্রতীক হিসাবেও গণ্য করা হয়। তাই প্যাঁচাকে লক্ষীর বাহন বলা হয়।