জগদ্ধাত্রী পুজো মানে কিন্তু কেবল চন্দননগর বা কৃষ্ণনগর নয়। ভদ্রেশ্বরের এই পুজোর ইতিহাস শুনলে নির্ঘাত চোখ কপালে উঠবে! তেঁতুলতলা সর্বজনীন জগদ্ধাত্রী পূজা কমিটি দেখতে দেখতে এই বছর পা রাখল ২৩১তম বর্ষে। কালী পুজোয় নৈহাটির বড়মার মতো এখানকার মা জগদ্ধাত্রীও নাকি খুব জাগ্রত, বিশ্বাস ভক্তদের। প্রতি বছর এই পুজোকে কেন্দ্র করে তাই হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেন মণ্ডপে।
মহাযজ্ঞের মাধ্যমে পুজো হয় এখানে। আজও রীতি মেনে হয় পাঁঠা বলি। দূরদূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা ছোটেন ভদ্রেশ্বরের সুপ্রাচীন পুজোয়। প্রায় ১৫ হাজার মানুষ গঙ্গা থেকে দণ্ডি কেটে মা-এর কাছে আসেন, মানত করেন তাঁদের মনোবাঞ্ছা পূরণ হওয়ার আশায়। প্রতি বছরে প্রায় ২০০ থেকে ২৫০টি বেনারসি দেবীকে উৎসর্গ করেন ভক্তরা। পরে সেই বেনারসি বিতরণ করে দেওয়া হয় এলাকার গরীব মানুষদের মধ্যে। পাশাপাশি মায়ের অন্নভোগের ব্যবস্থা করা হয় প্রায় ১৫ হাজার মানুষের জন্য।
এই পুজোর আর একটি বিশেষত্ব হল এখানকার বরণের প্রথা। মহিলারা নন, এখানে পুরুষেরাই শাড়ি পরে মহিলা সেজে দেবীকে বরণ করেন। এর নেপথ্যেও রয়েছে একটি ঐতিহাসিক কারণ। প্রচলিত বিশ্বাস বলে, ২০০ বছর আগে ইংরেজদের শাসন কালে মহিলাদের বাড়ি থেকে বেরোনোর কোনও সুযোগ ছিল না। সেকালে তাই এখানকার পুরুষরাই শাড়ি পরে মহিলা সেজে মা জগদ্ধাত্রীকে বরণ করতেন। সেই প্রথাই এখনও মানা হয়ে আসছে ভদ্রেশ্বরে। শাড়ি পরিহিত পুরুষেরাই আজও কনকাঞ্জলিতে বরণ করে চলেছেন দেবীকে।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।