কোনও ক্লাব নয়, হাওড়ার শিবপুরের ওলাবিবিতলায় হাজার হাতের এই কালীমন্দির প্রায় ১০০ বছরেরও বেশি পুরনো। শুধু তাই নয়, দক্ষিণ ভারতেও এই কালীমূর্তির মহিমা কিন্তু কম নয়।
শোনা যায়, ১৮৮০-তে শুরু হয় এই মন্দির। ওলাবিবিতলায় মুখোপাধ্যায়ের বাড়ির ছেলে তথা তান্ত্রিক আশুতোষ মুখোপাধ্যায় দেবী চণ্ডীর স্বপ্নাদেশে কালীর ওই রূপ দেখতে পান।
পুরাণ অনুযায়ী, অসুর বধের সময়ে দেবী দূর্গা বিভিন্ন রূপ ধারণ করেছিলেন। এই রূপগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল তাঁর হাজার হাতের অবতার।
সেই সময়েই আশুতোষ মুখোপাধ্যায়কে দেবী মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে মন্দির তৈরিতে সাহায্য করেন স্থানীয় একটি পরিবার।
বুদ্ধ পূর্ণিমার দিন প্রতিষ্ঠিত হয় হাজার হাতের এই কালী মন্দির। দেবী এখানে পূজিতা হন চণ্ডীরূপে।
বছরে দু’দিন, অর্থাৎ বুদ্ধ পূর্ণিমা তথা প্রতিষ্ঠা দিবসে এবং কালীপুজোর দিন জাঁকজমক করে এই মন্দিরে পুজো হয়। তান্ত্রিক আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের পরিবারই বংশানুক্রমে মন্দিরের সেবায়েতের কাজ করে।
মন্দিরের এই প্রবেশদ্বারে বাংলা, হিন্দি ছাড়াও যে তামিল ভাষায় লেখা মন্দিরের নাম। হাওড়ার পাশাপাশি দক্ষিণ ভারতেও এই কালীমূর্তির মহিমা অপার।
এখানে দেবী নীলবর্ণা। তাঁর জিভ বাইরে বের করা থাকে না। তাঁর বাহন সিংহ। বিশালাকার সেই দেবী মূর্তির এক হাজার হাত বর্তমান দেবীর বাম পা অবস্থান করছে সিংহের ওপর। ডান পা রয়েছে পদ্মের উপরে।
হাওড়ার ওলাবিবিতলার এই মন্দিরে দেবী মূর্তিটি তৈরি হয়েছে চুন-সুরকি দিয়ে। প্রথমে ৯৯৮টি হাত দেওয়ালে আঁকা ছিল। পরে সেগুলি মাটি দিয়ে তৈরি করেন কুমোরটুলির শিল্পী প্রিয়নাথ পাল। পরে অবশ্য সেগুলিকেও চুন-সুরকি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।
শোনা যায়, এখানে মায়ের হাজার হাত গোনা যায় না। মায়ের অস্ত্র ও মুকুট তৈরি হয়েছে ১১-১২ কেজি রুপোয়। দেবীর মাথায় যে ছাতাটি রয়েছে সেটিও রুপোর তৈরি।