পুরাণমতে ব্রহ্মার বরে মহিষাসুর নামক এক ভীষণ অসুর অসম্ভব শক্তি লাভ করেন এবং আধিপত্য বিস্তার করেন সমগ্র মর্ত্য ও পাতাল জুড়ে।
ক্রমে বলশালী এই অসুর দখল করলেন স্বর্গলোকও। ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর যখন এই সংবাদ পেলেন, তাঁদের রোষের মুখে পড়লেন মহিষাসুর।
তিন দেবতার সম্মিলিত ক্রোধের প্রচন্ড তেজ থেকেই আশ্বিন মাসের কৃষ্ণা চতুর্দশী তিথিতে হিমালয়ের শীর্ষে মহর্ষি কাত্যায়নের আশ্রমে আবির্ভাব দেবী দুর্গার। ত্রিভুবনের দুর্গতি বিনাশের জন্য।দেবী মহিষাসুরকে পরাজিত করতে সম্মুখসমরে উপস্থিত। তৈরি হল এক ভীষণ যুদ্ধের পরিস্থিতি।
প্রথমেই মহিষাসুর তার সকল অসুর সেনাকে পাঠিয়ে দেন দেবীকে পরাস্ত করতে। কিন্তু দেবী বিভিন্ন রূপ ধারণ করে একের পর এক হারিয়ে দেন সকলকে।
শেষে মহিষাসুর নিজেই দেবীর সামনে এসে দাঁড়ান, এক অতি সুদর্শন যুবকের রূপে।
দেবী মহিষাসুরের এই ছলনাকে এড়িয়ে যান। মহিষাসুর এ বার এক ভীষণ মোষের আকার ধারণ করে আক্রমণ করেন দেবীকে। তবে দেবীর কাছে পৌঁছনোর আগেই বাহন সিংহ হারিয়ে দেয় মহিষাসুরকে। এবং দুর্গা নিজের তরবারি দিয়ে ছিন্ন করেন মহিষাসুরের মাথা।
প্রচণ্ড ক্রোধে মহিষাসুর হাতির রূপ ধারণ করেন। শুঁড় উঁচিয়ে ধেয়ে আসেন দেবীকে আক্রমণ করতে। কিন্তু দেবী তার একটি দাঁত ধরে ছুড়ে ফেলে দেন বহু দূরে।
মহিষাসুর ফের রূপ বদলে হয়ে ওঠেন সিংহ। দুই সিংহের পরাক্রমে কেঁপে ওঠে পুরো পৃথিবী। কিন্তু দেবীর বাহন পরাস্ত করে মহিষাসুরকে। শেষে মহিষের রূপ নিয়ে আরও এক বার নিজেকে রক্ষা করতে সক্ষম হন মহিষাসুর।
মহিষের রূপে মহিষাসুর দেবীকে আক্রমণ করলে দেবী আবারও তার মাথা ধড় থেকে ছিন্ন করেন। মহিষাসুর সেই ছিন্ন মস্তকেই রূপ নেন অর্ধেক মানুষ ও অর্ধেক মহিষের। ফের শুরু হয় প্রবল যুদ্ধ।
শেষে সিংহ বাহন তাঁকে মাটিতে ছুড়ে ফেলে এবং দেবী নিজের ত্রিশুলে বিদ্ধ করে বিনাশ করেন মহিষাসুরকে।