রাঘব চট্টোপাধ্যায়
আকাশে রংবেরঙের ঘুড়ির ঝাঁক। পেটকাটি, চাঁদিয়াল মাঞ্জা দিয়ে পাঞ্জা কষছে। মাঝে মাঝে কোনওটা আবার ভোকাট্টা! বিশ্বকর্মা পুজোর এটাই তো চেনা ছবি। তার সঙ্গেই এ বার যোগ হল থিম সং। এত দিন দুর্গা পুজোর ‘থিম সং’ হত। এই প্রথম বিশ্বকর্মা পুজো নিয়ে গান বাঁধলেন রাঘব চট্টোপাধ্যায়। গানপ্রেমী বাঙালির উপরি পাওনা ঘুড়ির লড়াইয়ের দিনে। এই গানে রাঘব নিজেও যেন ছোটবেলার দিনগুলোকেই ফিরে দেখেছেন।
শিল্পীর কথায়, ‘‘ছোটবেলার বিশ্বকর্মা পুজো হইহই করে কাটত। আমাদের যৌথ পরিবার। বাবার প্রিন্টিং পাবলিশিংয়ের ব্যবসা ছিল। ওই দিন পুজো, খাওয়া-দাওয়া আর ঘুড়ি ওড়ানো। ৩টে থেকেই ঘুড়ি ওড়ানো শুরু হয়ে যেত। চলত সন্ধে না নামা পর্যন্ত। আগে থেকেই সুতোয় মাঞ্জা দিয়ে রাখতাম। পাশের বাড়ির ছাদ, দূরের বাড়ির ছাদের সঙ্গে চলত লড়াই। আর তার মাঝে মাঝে ‘ভোকাট্টা’ চিৎকার। জোরে গান চালিয়ে তার সঙ্গে চলত ঘুড়ি ওড়ানো। যাদের ঘুড়ি কেটে যেত, ছাদ থেকেই তাদের নিয়ে রসিকতায় মাতত বাকিরা। আমাদের বাড়ির ছাদ তখন প্রায় ফুটবল মাঠ! পুজোর মজাও যেন ওই দিন থেকেই শুরু হয়ে যেত। এখনও সময় পেলেই বিশ্বকর্মা পুজোর দিনে মেয়েদের নিয়ে বাড়ির ছাদে ঘুড়ি ওড়াই।”
দুর্গা পুজো নিয়ে অনেক গান আছে রাঘবের। তাঁর বেশ কিছু শ্যামাসঙ্গীতও জনপ্রিয়। গান করেছেন ‘লক্ষ্মীর পাঁচালি’ নিয়েও। তবে বিশ্বকর্মা পুজো নিয়ে এই প্রথম গাইলেন শিল্পী। তাঁর মতে, এর আগে সম্ভবত বিশ্বকর্মা পুজো নিয়ে এমন থিম সং হয়নি। ‘’রাজীব চক্রবর্তী লেখা, রণদীপ ভট্টাচার্যের ভাবনায় যেন সেই ছোটবেলার বিশ্বকর্মা পুজোর স্বাদ। সুর করে ফেললাম। গেয়েও দিলাম। গানটা গাইতে গিয়েও বেশ নস্ট্যালজিক হয়ে পড়েছিলাম। ছোটবেলার কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল,’’ বললেন রাঘব। এ বার বিশ্বকর্মা পুজোয় তাই অন্য কোনও গান নয়। ছাদে ঘুড়ির দেদার লড়াইয়ের সঙ্গে তাল মেলাবে বিশ্বকর্মার নিজের গান!
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের অংশ।