Durga Puja 2020

‘স্বজন’দের মুখে উৎসবের আলো ফোটাচ্ছে বেলেঘাটা ৩৩ পল্লি

বেলেঘাটা ৩৩ পল্লির পুজোর ভিডিওতে দেখা গিয়েছে জনপ্রিয় সঞ্চালক মীরকে। তাঁরও মন ছুঁয়ে গিয়েছে এই পুজোর ভাবনা।

Advertisement

পরমা দাশগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০২০ ১৪:০৬
Share:

ওঁরাই পুজোর আনন্দ বাড়িয়ে দেন বহু গুণ।

Advertisement

ওঁরা কেউ হকার, কেউ বেলুনওয়ালা, কেউ বা ফুচকা বেচেন, কারও নাগরদোলার ব্যবসা। প্রতি বছর ওঁদেরই কারও দোকানের কানের দুলে জমে যায় পুজোর সাজ। ওঁদেরই হাতের টক-ঝাল-নোনতার জাদুতে চলে দেদার ফুচকা খাওয়ার কম্পিটিশন। ওঁদেরই বেলুন-নাগরদোলায় খুশিতে চকচকে হয়ে যায় বাড়ির আদরের খুদের মুখচোখ।

আরও পড়ুন: ভট্টাচার্য বাড়ির পুজো দেখে জমি দান করেছিলেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র

Advertisement

গোটা একটা শহর যখন পুজোর আলোয় ভাসবে, তখন কি এই মানুষগুলোর মুখে জমাট বাঁধা অন্ধকার মানায়? ওঁদেরই ক’জনকে তাই ‘স্বজন’ করে নিতে এগিয়ে এসেছে বেলেঘাটা ৩৩ পল্লি পুজো কমিটি। পাশে দাঁড়িয়েছে এমন ২৫টি পরিবারের। তাঁদের কেউ হকার, কেউ শ্রমিক বা পরিযায়ী শ্রমিক, কেউ ছোটখাটো দোকানি, কেউ বা উর্দিধারী। করোনা-লকডাউনের জোড়া কাঁটায় মাসের পর মাস কাজহারা, পেটে টান পড়া এই মানুষগুলোই এই পুজোর এ বারের থিম ‘স্বজন’।

বেলেঘাটা ৩৩ পল্লির পুজোর ভিডিওতে দেখা গিয়েছে জনপ্রিয় সঞ্চালক মীরকে। তাঁরও মন ছুঁয়ে গিয়েছে এই পুজোর ভাবনা। ভিডিওতে মীর বলছেন, “আমি নিজে একটা বিরিয়ানি খেলাম, অথচ আমার পাশের মানুষটি ভাত-ডাল পর্যন্ত জোগাড় করতে পারল না- তা হলে ওই বিরিয়ানিটা বিষের থেকেও বেশি খারাপ। ওই বিরিয়ানির উপরে আমার কোনও অধিকার নেই।” পুজোর মতো বেঁচে থাকার উদযাপনের এই দিনগুলোয় এমনই নিঃস্ব হতে বসা ক’জনকে স্বজন করে তুলতে বেলেঘাটা ৩৩ পল্লির এই উদ্যোগকে কুর্ণিশ জানাচ্ছেন খ্যাতনামা এই আরজে।

এ শহরেরই এক হকারের আত্মহত্যা নাড়িয়ে দিয়েছিল এই পুজোর আয়োজকদের। বিশেষত থিমের মূল ভাবনা যাঁর, সেই শিবশঙ্কর দাসকে। তাঁর কথায়, “তখনই মনে হয়েছিল পুজোয় যদি ওঁদের ভালই না রাখতে পারি, তা হলে কীসের উৎসব? তাই ঠিক করি ওঁদের নিয়েই এ বার আমাদের মণ্ডপ সেজে উঠবে।” মণ্ডপসজ্জার অঙ্গ হয়েই তাই ফুচকার দোকান, বেলুনওয়ালা, নাগরদোলার এই ব্যবসায়ীরা যোগ দিয়েছেন বেলেঘাটা ৩৩ পল্লির পুজোয়। পারিশ্রমিকের পাশাপাশি সাধারণত পুজোয় তাঁদের যতটা লাভ হয়, সেই টাকাটাও তাঁদের হাতে তুলে দিচ্ছে পুজো কমিটি। পুজোর আবহসঙ্গীতের ভার নিয়েছেন আশু চক্রবর্তী। জানিয়েছেন কী ভাবে তাঁরই বাড়ির সামনে জিনিসপত্র ফেরি করতে আসা এক ব্যক্তির ঠেলায় বাজতে থাকা কণ্ঠ এই পুজোর মূল সুর বেঁধে দিয়েছে।

আরও পড়ুন: ডালিম গাছতলায় পুজোয় অঞ্জলি দিয়ে যান রানি ভবানী

আঁধার মুখগুলোয় আলো ফুটিয়ে আক্ষরিক অর্থেই তাই উৎসব হয়ে উঠেছে বেলেঘাটা ৩৩ পল্লির পুজো।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement