Durga Puja 2019 Ananda Utsav 2019 Durga Puja Celebrations Durga Puja Celebration Kolkata Durga Puja

উমার প্রতীক্ষায় সেজে উঠছে গোটা শহর

অন্য গ্রহের প্রাণীরা দেখবে কলকাতার দুর্গাপুজো-এমনই সব থিমে সেজে উঠছে শহরের মন্ডপগুলি।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১১:৩০
Share:

সেজে উঠছে গোটা শহর

বেলগাছিয়া সাধারণ দুর্গোৎসব: হারিয়ে যাচ্ছে মানুষে মানুষে বন্ধন, সেই ভাবনা থেকেই এ বছরের থিম ‘বুনন গাঁথা’। এক ফুট বাই এক ফুট থেকে ছ’ফুট বাই তিন ফুট মাপের অসংখ্য খাটিয়া এবং বিশেষ ধরনের সরু বাঁশ ব্যবহার করা হচ্ছে মণ্ডপসজ্জায়। খাটিয়া এবং বাঁশের বুননে সাজবে মণ্ডপের ভিতর ও বাহির। প্রায় দু’হাজার বাঁশ দিয়ে মূল গেট হবে। ৩০ ফুট উচ্চতার খাটিয়ার ইনস্টলেশন থাকবে। প্রতিমায় থাকবে দড়ির বুননের কাজ। ঝাড়বাতি তৈরি হবে ছোট ছোট খাটিয়া দিয়ে। প্রতিমা যেখানে থাকবে তার উপরে বাঁশের বুননের কাজ থাকবে।

Advertisement

লালাবাগান যুবকবৃন্দ নবাঙ্কুর সঙ্ঘ: ‘অনাহারের আহার’ এ বছরের ভাবনা। খাবারের অপচয় বন্ধ করতে সচেতনতার বার্তা থাকবে মণ্ডপে। অ্যালুমিনিয়াম এবং স্টিলের বাসন দিয়ে মণ্ডপের ভিতরে এবং বাইরের সাজ হবে। মণ্ডপে ঢোকার আগে ফোন দিয়ে তৈরি হবে দশ ফুটের মানুষ। প্রতিমা সাবেক। দুর্গার গলায় থাকবে লক্ষ্মী, গণেশ, কার্তিক, সরস্বতী।

হাতিবাগান নবীন পল্লি: ৮৬তম বর্ষের থিমের নাম ‘লাইফলাইন’। বর্তমানে কর্মব্যস্ত জীবনে নিজেদের দিকে খেয়াল রাখতে পারি না আমরা, ফলে শরীরে বাসা বাঁধে নানা রোগ। যোগাসন, ভাল খাদ্যাভ্যাস এবং শারীরচর্চার মাধ্যমে কী ভাবে নিজেকে ভাল রাখা যায়, শিল্পী সুবল পাল সেটাই ফুটিয়ে তুলছেন আমাদের এ বারের মণ্ডপে। থিমের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে থাকবে প্রতিমা। আমাদের পুজোয় একাধিক চিকিৎসকদের যুক্ত করানোর ভাবনা থেকে শুরু করে ত্রিমাত্রিক ম্যাপিং— মণ্ডপে চমকের অভাব নেই!

Advertisement

কাশী বোস লেন: ৮২তম বছরের ভাবনা ‘অস্তিত্ব’। জলসঙ্কটের পরিণাম কী হতে চলেছে, তারই খানিক বর্ণনা থাকবে মণ্ডপে। প্রথমেই সরু ইট দিয়ে তৈরি হবে হরপ্পা-মহেঞ্জোদারো সভ্যতার মতো কোনও ধ্বংসস্তূপ। তার পরে থাকবে শুকিয়ে যাওয়া একটি জলাশয়। যেখানে ডুবুরি ভেসে বেড়াবে হাওয়ায়। জলের নীচের সব উদ্ভিদ ও প্রাণী পরিণত হবে জীবাশ্মে। তৃতীয় অর্থাৎ শেষ ধাপে থাকবে গঙ্গার ঘাট। নৌকায় থাকবে প্রতিমা। প্রতিমার সাজে শামুক, গুগলি, শালুক জাতীয় জলের নীচের হরেক রকম ফুল। আলোর খেলায় বয়ে যাবে গঙ্গা। ঘাটের সিঁড়ি থেকে সে সবই দেখতে পারবেন দর্শকেরা।

কুমোরটুলি সর্বজনীন: পুজোর এ বার ৬০ বছর। থিম, ‘মাকে বলো’। ইচ্ছাপূরণের নানা উপাদান দিয়ে সাজবে মণ্ডপ। ফাইবার গ্লাস, ছোবড়া, প্যারিস প্রভৃতি দিয়ে তৈরি একটি বড় গাছ থাকবে ভিতরে। যার ডালপালা আর পাতা ছড়িয়ে থাকবে মণ্ডপে। ফুচকাওয়ালার বেতের স্ট্যান্ড দিয়ে সাজসজ্জা হবে। ব্যবহার হবে সুতোর কোণ। প্রতিমা সাবেক।

কুমোরটুলি পার্ক: অন্য গ্রহের প্রাণীরা দেখবে কলকাতার দুর্গাপুজো। তাই মণ্ডপের ভিতরে থাকবে অসংখ্য ভিন্‌ গ্রহের জীব। যারা নড়াচড়া করে বিভিন্ন কাজকর্ম করবে। বাইরে থেকে দেখতে পৃথিবীর মতো, ভিতরে ঢুকলেই অন্য গ্রহ। সেখানে থাকবে ইউএফও। বাইরে থাকছে স্পেস সেন্টার, রকেট-লঞ্চার। পৃথিবীর উপগ্রহ চাঁদ। ঘোড়ামুখী সিংহে আসীন সাবেক প্রতিমা দেখতে ভিন্‌ গ্রহের প্রাণীদের সঙ্গে মেতে উঠবেন ছোট থেকে বড় সকলেই। এমনই বিশ্বাস পুজোর কর্তাদের।

আহিরীটোলা যুবকবৃন্দ: মাত্রাতিরিক্ত পরিবেশ দূষণকে মাথায় রেখে এ বছরের ভাবনা ‘ধূসর ধরণী’। মণ্ডপের ভিতরে বাঁশ দিয়ে তৈরি একটি গাছ থাকছে। লোহা দিয়ে তৈরি হবে তার পাতা। দূষণের কারণে গাছ তার সবুজ হারাচ্ছে, সেটা বোঝাতেই এমন ভাবনা। প্রচুর প্লাস্টিকের ব্যবহার থাকবে মণ্ডপের ভিতরে। প্লাস্টিকে রুদ্ধ থাকবে জলাশয়। সাধারণ বেশে আটপৌরে প্রতিমা সপরিবার নৌকায় থাকবে। মণ্ডপ জুড়ে থাকা ধূসরতাকে ফুটিয়ে তুলবে হলুদ আলোর খেলা।

পাথুরিয়াঘাটা পাঁচের পল্লি: এ বছর পুজো ৪০ বছরে পা দিল। আমাদের থিম ‘পরিবর্তনের আলোর ফাঁকে, ভুলতে কি পারি অতীতটাকে?’ বর্তমান এবং অতীত, দুই প্রজন্মের মানুষেরই মন ছুঁয়ে যাবে, এমন সব বিষয় বা ভাবনার উপরে আলোকপাত করাই এই থিমের উদ্দেশ্য। কার্ডবোর্ড, রং-তুলো, মাটির পুতুল, প্লাস্টার অব প্যারিস দিয়ে তৈরি ভাস্কর্য, পেন্টিংয়ের মাধ্যমেই মণ্ডপের এক অংশে বর্তমান প্রজন্মের এবং অপর অংশে অতীত প্রজন্মের ভাল লাগা, ভালবাসার জায়গাগুলিকে তুলে ধরা হচ্ছে। সঙ্গে সাবেকি ধাঁচের প্রতিমা।

পটলডাঙা শ্রীশ্রী শারদীয়া মহাপূজা: ১০৭তম বর্ষের পুজোয় সাবেকিয়ানার উপরেই ভরসা রেখেছি আমরা। কৃষ্ণনগরের রাজু দত্তের তৈরি ডাকের সাজে সাজবেন মা দুর্গা। মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে বনেদি বাড়ির ঠাকুরদালানের আদলে। পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য, চার দিন গঙ্গাজলে এবং মাটির উনুনে তৈরি হয় মায়ের ভোগ। সপ্তমী-অষ্টমীতে বালকভোজনের মতো পুজোর পুরনো ঐতিহ্য লালন করে চলেছি আমরা।

কানাই ধর অধিবাসী বৃন্দ: যেখানে আর্থিক বৈষম্য নেই, সামাজিক ভেদাভেদ নেই, হিংসা নেই— দর্শকদের এমনই রূপকথার জগতে ৬৯তম বছরে পৌঁছে দেবে কানাই ধর অধিবাসীবৃন্দ। সানপ্যাক, থার্মোকল এবং প্লাস্টার অব প্যারিসে সেজে উঠছে গোটা মণ্ডপ। এক ফালি চাঁদে আসীন সপরিবার দেবী। প্লাস্টার অব প্যারিসে তৈরি পরি থাকবে মণ্ডপে। পুজোকর্তাদের আশ্বাস, আলোর খেলায় তৈরি হবে স্বপ্নের পরিবেশ।

ওয়েলিংটন নাগরিক কল্যাণ সমিতি: ৩০তম বর্ষে আমাদের পুজোর থিম ‘মিলনে মহান’। ভারতবর্ষে বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের মধ্যে মিলন-ভাবনাকেই ফুটিয়ে তোলা হবে এ বারের পুজোমণ্ডপে। বাচ্চাদের কাজললতা, বাসন মাজার লোহার জালের মতো ক্ষুদ্র ও অতি তুচ্ছ জিনিস দিয়ে সাজানো হবে মণ্ডপ। শিল্পী নব পালের তৈরি প্রতিমা সাবেকি ধাঁচের।

গৌরীবেড়িয়া সর্বজনীন: এ বছরের থিম ‘ভিনদেশি তারা’। উচ্চশিক্ষা দিয়ে সন্তানকে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন দেখেন বাবা-মায়েরা। এক দিন সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়ে একাকিত্বে ঠেলে দেয় দু’পক্ষকেই। জীবনের ইঁদুর দৌড়ে শামিল হয়ে পিছন ফেরার ফুরসতটুকু হারিয়ে ফেলেন সন্তানেরা। শৈশব আর প্রিয়জনের জন্য টান থাকলেও মাঝে পর্বত হয়ে থাকে প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা। মণ্ডপের ভিতরে ফেলে আসা বাড়ি, স্কুল, বাঁশঝাড় সে সবই থাকবে। ঠাকুরদালানে মায়ের অধিষ্ঠান। মন্ডপের বাইরে অনেকগুলি সিঁড়ির ধাপ পেরিয়ে ঝাঁ-চকচকে কর্পোরেট দুনিয়া। তার ছাদটা ঢেকে যাবে অসংখ্য কাগজের প্লেনে। সিঁড়ির ধাপে থাকবে হামাগুড়ি দেওয়া একাধিক গোপাল।

ভবানীপুর ৭৫ পল্লি: ৫৫তম বছরে আমাদের থিম ‘নগরদোলা’। যে রাস্তায় আমাদের মণ্ডপ তৈরি হয়, তার মধ্যেই রয়েছে অনেকের বাড়ি, সদর দরজা। বাসিন্দাদের জীবনের সেই অঙ্গ-সহ মণ্ডপের পরিকল্পনা হয়েছে। পাড়ার সবাইকে নিয়েই সর্বজনীন পুজো, তাই সংলগ্ন মসজিদের নমাজও রয়েছে থিমে। এই মণ্ডপ সকলের মিলিত হওয়ার জায়গা। মণ্ডপসজ্জায় ব্যবহার হচ্ছে রোজকার জীবনের বহু জিনিস, যা দেখা যায় সকলের বাড়িতেই। থিম-নির্ভর মাটির প্রতিমার সাজসজ্জায় থাকবে লোহার অলঙ্কার।

ভবানীপুর স্বাধীন সঙ্ঘ: আমাদের পুজোর থিম ‘আমি’। আমাদের দেশে নারী মহাশক্তি রূপে পূজিত, অথচ নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। তবে মেয়েরাও প্রতিবাদে এগিয়ে আসছেন। কারও উপরে ভরসা না করে নিজেকেই ভরসা জোগাচ্ছেন তাঁরা— যেন তাঁরাই দুর্গা, তাঁরাই শক্তি। মণ্ডপসজ্জায় দড়ি, পাটের মতো পরিবেশবান্ধব উপকরণ দিয়ে তুলে ধরা হচ্ছে এই বিষয়টি। এই বছর ৭১ বছরে পা দিল আমাদের পুজো।

গোলমাঠ সর্বজনীন: ৯২তম বছরে আমাদের মণ্ডপে উঠে আসছে এক টুকরো পাহাড় এবং চা বাগান। শিলিগুড়ি থেকে সজীব চায়ের গাছ আনা হচ্ছে এর জন্য। মণ্ডপসজ্জার কাজে লাগানোর সময়েও জীবিত থাকবে সেগুলি। পরে সেগুলি ফের শিলিগুড়ি পাঠিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। চা বাগানের শ্রমিকদের নাচ-গানও তুলে আনা হচ্ছে মন্দিরে। মণ্ডপে‌ হচ্ছে ৫০ ফুট উঁচু পাহাড়ের পরিবেশ। বাগানের ভিতরে একটি মন্দিরে থাকবে মায়ের মূর্তি। প্রতিমা তৈরি হচ্ছে থিমের ছোঁয়া রেখে।

বকুলবাগান সর্বজনীন: আমাদের পুজোর এ বার ৯২তম বছর। পুজোর অন্যতম অঙ্গ চালচিত্রকে থিম বেছেছি। তবে চালচিত্রের চিরাচরিত বিষয় থেকে সরে এসে মণ্ডপে ফুটিয়ে তুলব বর্তমান সমাজের নানা ছবি। যেমন, আমাদের সমাজে নারী দিবস উদ্‌যাপনের পাশাপাশিই চলে নারী নির্যাতন। এই বিষয়ে সচেতনতা বাড়াবে আমাদের থিম। কালীঘাটের পটচিত্রের অনুকরণে আঁকা কাঠের চালচিত্রে সাজবে মণ্ডপ। একচালা সাবেক ঠাকুরের সাজে থাকছে সোনালি গয়না ও বেনারসী শাড়ি।

গল্ফ গ্রিন শারদোৎসব কমিটি: এ বছর আমাদের থিম ‘কনজারভেশন অ্যান্ড রেস্টরেশন’। এ দেশের বিপুল শিল্প-সংস্কৃতির ভাণ্ডারের কিছু অংশ তুলে আনছি আমরা। বিভিন্ন ভারতীয় মন্দিরের ভাস্কর্য, ফ্রেস্কো, অজন্তার গুহাচিত্র, পুথির পেন্টিং, বাংলার সেন ও পাল যুগের শিল্প নিদর্শনের মতো উল্লেখযোগ্য কাজ আমরা বেছেছি। এক সময়ে ভারতীয় সংস্কৃতি ছাপ ফেলেছিল জাভা, বোর্নিয়ো, শ্রীলঙ্কার মতো দেশেও। সেখানকার শিল্পে ভারতীয় শিল্পের যে প্রভাব দেখা যায়, প্রতিমা তৈরি হচ্ছে সেই আদলে। ষোলো হাতের মাতৃমূর্তির কাছে পৃথিবীর সব অশুভ শক্তি নিতান্তই ছোট মনে হবে। বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিক, ফুটপাতবাসীদের ভোগ খাওয়ানো, পোশাক বিতরণের কর্মসূচি থাকছে।

৭৪ পল্লি সর্বজনীন: বাংলার অন্যতম প্রাচীন বাদ্যযন্ত্র ঢোল। চর্যাপদেও এর উল্লেখ আছে। পদাবলী কীর্তনে ঢোলের মাধ্যমে মানুষের সঙ্গে ঈশ্বরের ভাব সম্মিলন ঘটে। ঢোল যেন সচেতন আর অবচেতনের মিলন ঘটায়। ঢোলের মাঝের অংশটি ফাঁকা। তৈরি হওয়া যে কোনও শব্দতরঙ্গ, শব্দব্রহ্ম রূপে ঈশ্বরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে ভাব সম্মিলন ঘটায়। ৬৪তম বছরে তাই ৭৪ পল্লির নিবেদন ‘বাংলার ঢোলের ক্রিয়েটিভ স্পেসে আদি শক্তি মায়ের আবির্ভাব’। মণ্ডপ তৈরি হবে অর্ধাকার ঢোলকের আদলে। প্রতিমা ও আলোকসজ্জাও হবে থিমের সঙ্গে মিল রেখে।

খিদিরপুর নবরাগ: সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষে আমাদের পুজোর থিমে জড়িয়ে থাকছে পুজোরই নানা উপকরণ। থিম পুজোর ভিড়ে অনেক ক্ষেত্রেই আজ হারিয়ে যাচ্ছে সাবেকিয়ানা। পাশাপাশি পুজোর উপকরণগুলির যে বিশেষত্ব, তা নিয়েও কেউ মাথা ঘামান না। অথচ প্রতিটি উপকরণের সঙ্গে জড়িয়ে ঐতিহ্য। তাই মণ্ডপ জুড়ে কোষাকুষি, হোমের কাঠ, হোমকুণ্ড, কড়ি, কুলো-সহ পুজোর নানা উপকরণ থাকবে। বিষয়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে পুজোর শিরোনাম ‘ষোড়শোপচার’। এরই মধ্যে সাবেক প্রতিমার অধিষ্ঠান।

খিদিরপুর বিজয়ী সঙ্ঘ: আমরা থিম পুজোর প্রতিযোগিতায় নেই। বরং ভক্তি ও নিষ্ঠার সঙ্গে মা দুর্গার আরাধনায় মনোনিবেশ করি। এলাকার বহু মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে জড়িয়ে থাকেন পুজোর সঙ্গে। এ বার আমাদের ৭৩ বছর। মণ্ডপ ও প্রতিমা সাবেক। নজর কাড়বে চন্দননগরের আদলে করা আলোকসজ্জা।

হরিদেবপুর ৪১ পল্লি: আমাদের পুজো ৬২-তে পড়ল। দর্শকদের জন্য বিভিন্ন ধরনের চমক থাকবে। এ বার থিম ‘আগুন্তুক’। সংবাদমাধ্যমের কাজকর্মের উপরে ভিত্তি করে এমন ভাবনা। সংবাদমাধ্যমের কাজ খবর পরিবেশন। নতুন কোনও ঘটনার সঙ্গে পরিচিতি ঘটানো। যা নতুন, তা-ই খবর। আমাদের মনের আনাচ-কানাচেও সেই খবরের বেশে নতুন কিছু ঘুরে বেড়ায়। কী সেই খবর, কী সেই নতুন—জানতে আসতেই হবে আমাদের মণ্ডপে। মণ্ডপসজ্জার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তৈরি হবে প্রতিমা। চমক থাকবে আলোকসজ্জাতেও।

বড়িশা সর্বজনীন: ৭১তম বছরে আমাদের নিবেদন কৃষি নির্ভরতা। পশ্চিমবঙ্গ নদীমাতৃক রাজ্য। গ্রামের বড় অংশের মানুষের প্রধান জীবিকা কৃষি। তাকে শস্যশ্যামলা করেছে নদী। এক সময়ে প্রবাদও ছিল নদীমাতৃক বাংলাদেশ। বরাবর সেই কাজে অগ্রণী থেকেছেন বাংলার কৃষকেরা। বছরের পর বছর তাঁরা এই রাজ্যকে পালন করছেন। কৃষকদের সম্মানে আমাদের এ বারের পুজোর শিরোনাম ‘পালক’। মণ্ডপের সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই প্রতিমা ও আলোকসজ্জা করা হবে।

বড়িশা তরুণ তীর্থ: জীবনের দৈনন্দিন নানা টানাপড়েনে মানুষ ভুলে যায় নিজের আনন্দ, অনুভূতি। তাঁর মনের ভিতরের রং ফিকে হয়ে যায়। উৎসবের দিনগুলিতে মানুষ চেষ্টা করে নিজের মনে সেই রং ফিরে পেতে। ফলে এ বার আমাদের ভাবনা ‘রাঙিয়ে দিয়ে রঙে রঙে, মা এসেছে তুলির টানে’। বিষয়কে মণ্ডপে রূপদান করতে ব্যবহার করা হবে রং করার হরেক সরঞ্জাম। তুলি, প্যালেট, আঁকার বোর্ড, বিভিন্ন ধরনের রঙের ব্যবহার করা হবে মণ্ডপে। প্রবেশ দরজার কাছে থাকবে ময়ূরের বাহারি রঙের পেখম। বহু রঙের প্রতিফলন ঘটবে আমাদের মণ্ডপে। এ বার আমাদের পুজো ৩৫ বছরে পা দেবে। প্রতিমা ও আলোকসজ্জা থাকবে মণ্ডপের সঙ্গে সাযুজ্য রেখেও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement