চলতি বছর দক্ষিণ কলকাতার সুবিখ্যাত চেতলা অগ্রণী ক্লাবের পুজো ৩২ তম বর্ষে পা দিল। বরাবরের মতোই এই বছরেও নতুন ধরনের ভাবনা নিয়ে আসছে এই পুজো, থিমেও থাকছে অন্য ধাঁচের চমক। থিমের নাম হল ‘যে যেখানে দাঁড়িয়ে’।
পুজোর আহ্বায়ক সমীর ঘোষ জানালেন, ‘‘এই অভিনব থিমে আমরা দেখিয়েছি তিনটি শ্রেণীকে। প্রথমেই মণ্ডপে ঢুকে দেখা যাবে এক বিশাল ভাগ্যচক্র, সেখানে আমজনতা দাঁড়িয়ে রয়েছে। মোরগের আকারে এই সব মানুষ যেন ইঙ্গিত করছে প্রতিনিয়ত ভাগ্যচক্রের উপর মোরগ লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে সমাজ, আর মাথার উপরে এক বিশাল বাজপাখি অপেক্ষারত। আরেক শ্রেণির মানুষকে দেখা যাচ্ছে, যাঁরা হলেন শ্রমজীবী, শুধু খেটে খাওয়া দিনমজুর শ্রেণিই নয়, আধুনিক শার্ট টাই পরা শ্রমিকও আছেন। তাঁদের পরিশ্রম ও এগিয়ে চলার গল্প দেখানো হয়েছে। আর শেষ শ্রেণি হল একদল মানুষ যাঁরা মণ্ডপের ভিতর রাখা আকাশচুম্বী সিঁড়ির মাথায় এক মুকুটের দিকে ছুটে চলেছেন। এই মানুষেরা চকচকে মূর্তি।’’
মণ্ডপের দেওয়াল গড়ে উঠেছে শ্রমিকদের ছোট ছোট ঘর দিয়ে, তাতে তাঁদের সুখ-দুঃখ, পালা-পার্বন সব তুলে ধরা রয়েছে, শুধু নেই তাঁদের ঘরের ছাদ।এই বছরের দেবীমূর্তি সাদামাঠা শাড়ি পরিহিতা সাধারণ এক মা, তাঁর মাথার মুকুটে রত্ন হিসেবে সজ্জিত হয়েছেন মেহনতি মানুষের দল। অসুর অস্ত্র রেখে তাঁর পায়ের কাছে বসে মহিষাসুর, তাঁর ছয় হাতে রয়েছে ষড় রিপু, মা রিপুর বিনাশিনী, শান্তির প্রতীক। অসুর এখানে সাধকরূপী।
কী ভাবে যাবেন? রাসবিহারীর দিক থেকে এসে চেতলা সেতু পেরিয়ে নেমে এলে চেতলার চারমাথার মোড়ে ‘দেশের খাবার’ দোকানের গা ঘেঁষে বাঁ দিকের রাস্তায় ঢুকে এলেই পৌঁছে যাবেন এই মণ্ডপে।
থিম শিল্পী ও প্রতিমা শিল্পী : সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।