বাঙালি সেরা উৎসব দুর্গাপুজো। বাংলা মেতে ওঠে নতুন রঙে। তবে কী শুধু বাংলা! না। বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে থাকা প্রবাসী বাঙালিরা অনেক দিন আগে থাকে শুরু করেছেন পুজো। এ বারও তার অনথ্যা হচ্ছে না। শারদের ছোঁয়া লেগেছে সাত সমুদ্র তেরো নদীর পারে।
কানাডার নোভাস্কসিয়া প্রদেশের হ্যালিফ্যাক্স ছোট একটি শহর। এখানকার প্রবাসী বাঙালিরা ১৯৭৬ সালে প্রথম পুজো শুরু করেন। সেই ধারায় আজ ৪৭ তম বর্ষে এই পুজো।
প্রথম বারের পুজোও খুব অদ্ভুত ভাবে শুরু হয় এখানে। পুজো করার চিন্তা ভাবনা ঠিক হয়ে গেলেও সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় মূর্তি। মূর্তি পাওয়া যাবে কী করে? এ তো মুখের কথা নয়! তাই সেই সময়ের এক উদ্যোক্তা, নাম কল্যাণ অধিকারী এগিয়ে আসেন। কাগজ কেটে রঙ করে দেবী মূর্তি তৈরি করেন তিনি। শুরু হয় পুজো। তার পর অবশ্য কলকাতা থেকে মূর্তি বানিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেই মূর্তি এখনও পুজো করা হয়।
প্রতি বছর ঠাকুর যায় না। পুজো হয়ে যাওয়ার পর প্রতীকী বিসর্জন করে ওই মূর্তি রেখে দেওয়া হয়। দুর্গাপুজোর সময় স্বাভাবিক ভাবেই বিদেশে ছুটি পাওয়া যায় না। তাই সপ্তাহের ছুটির দিন দেখে নিয়ে তিন দিন ধরে পুজো করা হয়।
কমিউনিটি হল ভাড়া করে পুজো হয়। স্থানীয় পুরোহিত দিয়েই। তবে বাংলাতে কাটানো ছেলেবেলার পুজোর স্মৃতি ভুলতে পারেননি তাঁরা। সেই সূত্রেই জোরে জোরে মন্ত্র উচ্চারণের শোনা এবং অঞ্জলি দেওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকেন প্রবাসীরা।
পুষ্পাঞ্জলি থেকে বিভিন্ন নিয়ম পালনের কোনওটাই খামতি রাখেন না কানাডাবাসী বাঙালিরা। শাঁখ, কাঁসর, উলুধ্বনি সবটাই হয়। বাদ যায় না দশমীর দিন সিঁদুর খেলাও। পুজোর ক’টা দিন নিজেদের কাছে নিজেরাই হয়ে ওঠেন তারকা। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আবৃত্তি, নাচ, গান, নাটকও হয় তাঁদের অনুষ্ঠানে। এখন থেকে সবাই দিন গুনতে শুরু করে দিয়েছেন। নিজেদের আদি বাড়ি থেকে বহু দূরে মাতবেন নিজেদের পুরনো আনন্দে।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।