বোল্লা রক্ষাকালী পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার অত্যন্ত জনপ্রিয় ও বিখ্যাত দেবী। এই দেবীর মন্দিরটি বালুরঘাট শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে বোল্লা গ্রামে অবস্থিত।
বোল্লা কালী নামের উৎপত্তি সম্পর্কে নিশ্চিত কোনও তথ্য না থাকলেও, স্থানীয় জনশ্রুতি ও বিশেষজ্ঞদের মতে, এই নামটি এসেছে বোল্লা গ্রাম থেকেই। সম্ভবত, জমিদার বল্লভ মুখোপাধ্যায়ের নাম থেকেই এই গ্রামের নামকরণ হয়েছিল।
বোল্লা কালীর পূজার ইতিহাস প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো। জনশ্রুতি অনুযায়ী, একজন স্থানীয় মহিলা স্বপ্নে দেবীর দর্শন পেয়ে এই স্থানে একটি কালো পাথর খণ্ড খুঁজে পান।
সেই পাথরকেই দেবীর মূর্তি হিসেবে পূজা শুরু হয়। পরবর্তীতে, এই এলাকার জমিদার মুরারী মোহন চৌধুরী ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে মামলায় জয়লাভ করার পর দেবীর মন্দির নির্মাণ করেন।
বোল্লা কালী মন্দিরটি স্থাপত্যের দিক থেকে অত্যন্ত সুন্দর। বহু প্রাচীন মন্দির এটি। মন্দিরের চারপাশে বিভিন্ন দেব-দেবীর মূর্তি রয়েছে।
মন্দিরের প্রধান আকর্ষণ হল সাড়ে সাত ফুটের দেবী প্রতিমা, দেবীকে সাজানো হয় কুড়ি কেজি সোনা দিয়ে, হাতে থাকে আড়াই টনের সোনার রামদাঁ।
এই পূজায় পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত ছাড়াও বাংলাদেশ থেকেও অনেক ভক্তরা আসেন। লক্ষাধিক ভক্তের সমাগম হয় এই পুজো।
মানুষের বিশ্বাস, বোল্লা কালী মা তাঁদের সমস্ত মনস্কামনা পূরণ করেন। এই পূজা উপলক্ষে একটি বড় মেলাও বসে, যা উত্তরবঙ্গের দ্বিতীয় বৃহত্তম মেলা হিসেবে পরিচিত।
এই পুজোয় ১০ হাজার পাঁঠা বলি দেওয়ার একটা রীতি আছে। এই রীতির বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। তবে মামলায় হস্তক্ষেপ করেনি আদালত।
কিন্তু হাইকোর্টে খারিজ হয়ে যায় এই বলি বন্ধ করার আর্জি। এর পিছনে কি আছে কোনও রহস্য? থাকলেও তা আজও অজানা। এখনও ধুমধাম করে দশ হাজার পাঁঠা বলি সহ হয় বোল্লা মায়ের পুজো।