বিশ্বব্রহ্মান্ডের সেরা ইঞ্জিনিয়ার বিশ্বকর্মা
দেবশিল্পী বিশ্বকর্মা। বিশ্বব্রহ্মান্ডের সেরার সেরা ইঞ্জিনিয়ার। কথিত আছে এসব। কিন্তু কী তাঁর জন্ম বৃত্তান্ত? কী বলছে পুরাণ? তাঁর থেকে আরও কী কী তাৎপর্য বেরিয়ে আসছে? বিশ্বকর্মার জন্ম নিয়ে নানা মত রয়েছে পুরাণে। অনেকে এমনও মনে করেন, এখন বিশ্বকর্মাকে একজন দেবতা ভাবা হলেও, তিনি একক নন, অনেকে মিলে। নানা দেবতা নানা সময় বিশ্বকর্মা রূপে দায়িত্ব পালন করেছেন। সোজাসাপটা কথা, বিশ্বকর্মা কোনও দেবতার নাম নয়, এটা আসলে দেবতাদের ভেতরে একটা উপাধি।
বিশ্বকর্মা-পুরাণ অনুসারে আদিনারায়ণ প্রথমে ব্রহ্মা এবং তারপর বিশ্বকর্মার সৃষ্টি করেন। বিশ্বকর্মার জন্মের সঙ্গে দেবতা ও অসুরদের মধ্যে ঘটা সমুদ্রমন্থন লড়াইয়েরও সম্পর্ক রয়েছে। আবার বরাহ-পুরাণ অনুসারে, ভগবান ব্রহ্মা বিশ্বকর্মাকে সৃষ্টি করেছিলেন। হিন্দু ধর্মগ্রন্থে ভগবান বিশ্বকর্মার বর্ণনা থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যায়, বিশ্বকর্মা হল এক ধরনের পদবি বা উপাধি, যাকে বলা হত, কারুকার্যের সর্বোত্তম জ্ঞানের অধিকারী। প্রথমে বিরাট বিশ্বকর্মা, তারপর ধর্মবংশী বিশ্বকর্মা, এরপর অঙ্গিরাবংশী বিশ্বকর্মা, সবশেষে সুধন্ব বিশ্বকর্মা। আবার শোনা যায়, একটা সময় শুক্রাচার্যের পৌত্র ছিলেন ভৃগুবংশী বিশ্বকর্মা।
বিশ্বকর্মার সৃষ্টি মহর্ষি দধীচির হাড় থেকে। ইন্দ্রের জন্য একটি বজ্র তৈরি করা হয়েছিল। প্রাচীনকালে প্রায় সব শহর ও রাজধানী তিনিই তৈরি করেছিলেন বলে মনে করা হয়। যেমন সত্যযুগের স্বর্গ, ত্রেতাযুগের লঙ্কা, দ্বাপর যুগের দ্বারকা ও কলিযুগের হস্তিনাপুর। এছাড়াও বলা হয়, মহাদেবের ত্রিশূল, শ্রীহরির সুদর্শন চক্র, হনুমানের গদা, যমরাজের কালদণ্ড, কর্ণের কুণ্ডল এবং কুবেরের পুষ্পক বিমানও তৈরি করেছিলেন বিশ্বকর্মা। কিন্তু এঁরা সব নাকি বিশ্বকর্মা উপাধিধারী একেকজন স্থাপত্যবিদ তথা ইঞ্জিনিয়ার। একক বা একা নন। অনেকে। আলাদা-আলাদা!
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।