প্রতীকী চিত্র
শারদোৎসব শেষ। পেরিয়ে গেল লক্ষ্মী পুজোও। অনেককেই কাজ আর ব্যস্ততার চেনা রুটিনে ফিরে যেতে হলেও উৎসবের আমেজ পুরোপুরি ফুরিয়ে যায়নি। মনখারাপের মাঝে আলোর রেখার মতোই জেগে আছে আলোর উৎসবের আগমনবার্তা। সামনেই দীপাবলি। গোটা দেশ মেতে উঠবে আলো আর রঙে। সেই মরসুমের শুরু অবশ্য আরও একটি বর্ণময় দিনের হাত ধরে। ধনতেরস!
ধনতেরস বা ধনত্রয়োদশী আসলে ধন-সম্পদের উৎসব। দেবী ধনলক্ষ্মী এবং ধনদেবতা কুবেরের পুজোয় মেতে ওঠার দিন। দারিদ্রকে সরিয়ে, অভাবকে জয় করে, সংসারে সমৃদ্ধি আনার উৎসব হিসেবেই বাংলা তথা গোটা দেশে পালিত হয় এই দিনটি।
ধন অর্থাৎ ধনসম্পত্তি। তেরস কথাটির অর্থ ত্রয়োদশী তিথি। কার্তিক মাসে কৃষ্ণপক্ষের ত্রয়োদশীতেই উদযাপিত হয় ধনতেরস উৎসব। তার পরে একে একে কালীপুজো ও দীপাবলি। কিন্তু কেন পালন করা হয় দিনটি?
ইতিহাসের খোঁজে যাওয়া যাক পুরাণের গভীরে। কথিত, দুর্বাসা মুনির অভিশাপে স্বর্গ থেকে বিতাড়িত হয়েছিলেন লক্ষ্মী। সাগরে গিয়ে বসবাস শুরু করেন তিনি। এর পরে অসুরদের সঙ্গে লড়াই করে, সমুদ্রমন্থনের হাত ধরে দেবতারা ফিরে পান লক্ষ্মীকে। অনেকে আবার বলেন, প্রাচীনকালের রাজা হিমার পুত্রের ভাগ্যে লেখা ছিল বিয়ের পরে চতুর্থ রাতে সর্পদংশনে তার মৃত্যু হবে। তার সদ্যবিবাহিত স্ত্রী স্বামীর প্রাণ বাঁচাতে নিজের যাবতীয় সোনার গয়না ঘরের দরজায় জড়ো করে রেখে দেন। প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখেন দুয়ারে। যমরাজ ঘরে প্রবেশ করতে গেলে সোনার ছটায় তার চোখ ধাঁধিয়ে যায়। সেই সময় থেকেই ধন-সম্পদের আরাধনা শুরু।
প্রচলিত বিশ্বাস বলে, ধনতেরসে ধাতু কিনলে তাতে আকৃষ্ট হয়ে মা লক্ষ্মী আসেন বাড়িতে। তাঁর আশীর্বাদ সংসারে সমৃদ্ধি আনে। তা থেকেই এই দিনে মূল্যবান ধাতু কেনার চল। সেই উপলক্ষে সোনা-রুপোর দোকানে চলে নানা ধরনের আকর্ষণীয় অফার। অনেকে পিতল বা তামার জিনিসও কেনেন এই দিনে। ধনলক্ষ্মী দেবীর আরাধনার পরে ১৪টি প্রদীপ জ্বালিয়ে ঘরের অন্ধকার দূর করা হয়।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।