Bengali Bhoot

ভূত না কিম্ভূত! ভূত চতুর্দশীর আগে সব রকম বাঙালি ভূতের সাড়ে বত্রিশ ভাজা গপ্পো

ক’রকমের ‘ভূত’ আছে বাঙালির জীবন থেকে বাংলা সাহিত্যে? তাদের কাকে কেমন দেখতে? কার জন্ম কী ভাবে? কে কী করে? এই গল্পগাছার মধ্যে কোনও ‘বিজ্ঞান’ নেই। কিন্তু তেনাদের গল্প বড়ই প্রিয় প্রায় সবারই।

Advertisement
আনন্দ উৎসব ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:৩৮
Share:
০১ ১৯

আহা ভূত, বাহা ভূত/ কিবা ভূত, কিম্ভূত/ বাবা ভূত, ছানা ভূত/ খোঁড়া ভূত, কানা ভূত/ কাঁচা ভূত, পাকা ভূত/ সোজা ভূত, বাঁকা ভূত/ রোগা ভূত, মোটা ভূত/ আধা ভূত, গোটা ভূত

ছবি: সংগৃহীত

০২ ১৯

বাবাঃ, ভূতের কী বাহার। বাঙালিদের ভূতেও রয়েছে নানা প্রকার। শুধু কি তাই, সেখানেও রয়েছে রাজা, প্রজার মতো আরও কত কিছু। সামনেই ভূত চতুর্দশী। আর তার আগেই আনন্দবাজার অনলাইন খোঁজ করল বাঙালি ভূতেদের।

ছবি: সংগৃহীত

Advertisement
০৩ ১৯

পেতনি- পেতনি হল অবিবাহিত ভূত। সাধারণত কোনও মেয়ে অতৃপ্ত বাসনা নিয়ে অবিবাহিত অবস্থায় মারা গেলে, তার আত্মাকে পেতনি বলা হয়। এঁরা মৃত্যুর আগে কোনও অসৎ উদ্দেশ্য নিয়েই মারা যায়। মৃত্যুর পরে এঁদের উদ্দেশ্য অসৎ থাকে।

ছবি: সংগৃহীত

০৪ ১৯

শাকচুন্নি- সংস্কৃত শব্দ শঙ্খচুর্নী থেকে এসেছে শাকচুন্নি। বিবাহিত হিন্দু মহিলাদের ভূতকে সাধারণত শাকচুন্নি বলা হয়। এঁদের পরনে থাকে হিন্দু মহিলাদের মতোই শাঁখা, সাদা শাড়ি। বিবাহিত মহিলারা সাবধান, এঁরা কিন্তু বিবাহিত মহিলাদের উপরেই ভর করে। কারণ বিবাহিত জীবন উপভোগ করতে এঁরা খুব ভালবাসে। কথিত, শেওড়া গাছে নাকি থাকে এঁরা।

ছবি: সংগৃহীত

০৫ ১৯

পেঁচাপেঁচি- পুরুষ হলে পেঁচা আর স্ত্রী হলে পেঁচি। এঁদের বাস জঙ্গলে। জোড়ায় থাকে, আবার শিকারও করে। জঙ্গলে একা পেলেই সর্বনাশ। তাই রাতে কিন্তু একা জঙ্গলে গেলে খুব সাবধান।

ছবি: সংগৃহীত

০৬ ১৯

মেছো ভূত- এঁরা যেন আদতেই বাঙালি ভূত। মাছে ভূতে বাঙালি। গ্রামে যে সব পুকুরে বা জলাশয়ে ভাল মাছ পাওয়া যায় তার আশে পাশেই এঁদের বাস। পুকুরের মাছ প্রধান খাদ্য। আবার অনেক সময় বাড়ির রান্না ঘর বা জেলেদের নৌকা থেকেও মাছ চুড়ি করে খায়। মানুষের ক্ষতি না করলেও, একা মাছ নিয়ে রাতে ফিরলে সাবধান।

ছবি: সংগৃহীত

০৭ ১৯

নিশি- ভূতেদের মধ্যে এঁরা কিন্তু খুব সাংঘাতিক। রাতের বেলা আপনার প্রিয় মানুষের গলা কণ্ঠ স্বরে আপনাকে ডাকে। সেই ডাক শুনে যদি একবার আপনি বাইরে বেরিয়ে আসেন বা সাড়া দিয়েছেন, তা হলেই কিন্ত বিপদ। কথিত, তান্ত্রিকরা অন্যের ক্ষতি করার জন্য অনেক সময় নিজেরাই নিশি হয়ে ডাকে। তবে নিশি নাকি তিন বারের বেশি ডাকতে পারে না। তাই গভীর রাতে কেউ ডাকলে সাড়া দেওয়ার আগে ভেবে নেবেন।

ছবি: সংগৃহীত

০৮ ১৯

ব্রহ্মদৈত্য- উপকারি ভূতের কথা উঠলে এঁদের নাম আসবেই। একদা ব্রাহ্মণ সন্তান এই ভূতেদের পরনে ধুতি আর পৈতে। কথিত, পবিত্র এই ভূত নাকি খুব দয়ালু এবং মানুষের অনেক উপকার করে।

ছবি: সংগৃহীত

০৯ ১৯

গেছো ভূত- কথিত যে সব মানুষ গলায় ফাঁস দিয়ে গাছ থেকে ঝুলে মারা যান তারাই পরে গেছো ভূত হয়ে সেই সব গাছে থেকে যায়। বড় গাছ এঁদের বেশি প্রিয়। কেউ কেউ বলেন, এঁদের দেখতে নাকি বানরের মতো। আবার কেউ বলেন টিকটিকির মতো। মাথা নীচে এবং পা উপরে করে গাছ থেকে ঝুলে থাকে এঁরা। তাল গাছ এঁদের প্রিয় বাসস্থান।

ছবি: সংগৃহীত

১০ ১৯

মামদো ভূত- হিন্দু মতে মুসলমান ব্যক্তির আত্মাকে মামদো ভূত বলা হয়। সাধারণত কবর স্থানের আশেপাশেই এঁদের বাস। মামদোদের কোনও পা নেই, হাওয়ায় ভেসে থাকে। এঁদের মধ্যে কেউ কেউ মাথায় টুপিও পরে, তো আবার কাউর মাথায় থাকে দাঁড়ি। মানুষকে ভয় দেখিয়ে খুব আনন্দ পায় এই সব ভূত।

ছবি: সংগৃহীত

১১ ১৯

জোকা ভূত- পুকুর, ডোবা, নদী বা জলাশয়ে এঁদের বাস। জোকা ভূত বেশি লম্বা নয়, গায়ের রং কালো। কথায় বলে ভাল জোকা ভূত হলে নাকি অন্য ব্যক্তিদের ধন সম্পত্তি দান করে থাকে।

ছবি: সংগৃহীত

১২ ১৯

বেঘো ভূত- সাধারণত বাঘের হাতে মারা গিয়েছেন যে সব মানুষ, তাঁদের আত্মাকেই বেঘো ভূত বলা হয়। সুন্দরবন অঞ্চলে এই ভূতের আধিক্য বেশি। জঙ্গলে মধু আনতে যাওয়া শ্রমিকদের এঁরা ভয় দেখিয়ে বাঘের কাছে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আবার অনেক সময় বাঘের স্বরে ডেকে ওঠে।

ছবি: সংগৃহীত

১৩ ১৯

স্কন্ধকাটা ভূত- এই ভূতেরা দেখতে ভয়ঙ্কর। এদের মাথা নেই। মৃত্যুর সময় যাদের মাথা কাটা পড়ে তাঁরাই পরে স্কন্ধকাটা ভূতে পরিণত হয়। সাধারণত দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে এই ধরনের ঘটনা ঘটে। এঁরা ভূত হয়েও তাদের মাথা খুঁজে বেড়ায়। মানুষ মেরে তাদেরকেও নিজেদের দাসে পরিণত করে।

ছবি: সংগৃহীত

১৪ ১৯

কানাভুলো ভূত- এই ভূতেরা রাস্তার দল ছুট বা একাকী মানুষকে পথ ভুলিয়ে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় নিয়ে গিয়ে শিকার করে। মাঠের ধারে বা পথের মধ্যে এই ভূত দেখা যায়।

ছবি: সংগৃহীত

১৫ ১৯

দেও- এই ধরনের ভূত পুকুর বা ডোবা বা নানা নদীর আশে পাশে থাকে। কথিত, এঁরা নাকি জলে ডুবিয়ে মানুষকে হত্যা করে। একা স্নান করতে আসা ব্যক্তিকে পা ধরে টেনে নিয়ে যায় জলের তলায়। আর তাতেই শ্বাস রোধ হয়ে মারা যায় মানুষ।

ছবি: সংগৃহীত

১৬ ১৯

ডাইনি- ডাইনি কিন্তু আদৌ কোনও ভূত নয়। জলজ্যান্ত নারী। কথিত, যে সব বাঙালি বয়স্ক নারী কালো যাদু এবং ডাকিনী বিদ্যাতে পারদর্শী, তাঁদের ডাইনি বলে। বাংলা সাহিত্য অনুযায়ী, এঁরা ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের মেরে তাঁদের হাড় এবং মাংস খেয়ে নাকি একশো বছর বেঁচে থাকে। অনেক সময়, খবরের কাগজে দেখতে পাওয়া যায় ডাইনি অপবাদে পিটিয়ে মারা হয়েছে কোনও বৃদ্ধাকে।

ছবি: সংগৃহীত

১৭ ১৯

গো ভূত- স্কন্ধকাটার মতোই গো ভূতেরও মাথা নেই। গলায় দড়ি জড়িয়ে অপঘাতে কোনও গরুর মৃত্যু হলে, তখন তারা গো ভূত হয়।

ছবি: সংগৃহীত

১৮ ১৯

ডাকিনী- কালী ঠাকুরের পাশে ডাকিনিকে দেখেছেন তো অনেকেই। আসলে ডাইনি বুড়িদের অনুগত এই ভূতেরা। এরা পাতি হাঁস খেতে খুব ভালবাসে। তাই জলাশয়ের আসেপাশেই বেশি দেখতে পাওয়া যায় ডাকিনীদের।

ছবি: সংগৃহীত

১৯ ১৯

চোরাচুন্নি- সিঁধেল চোর জানেন তো? সেই চোরই যদি চুরি করতে গিয়েই কোনও কারণে মারা যায়, তখন তাঁরা চোরাচুন্নিতে পরিণত হয়। মৃত্যুর পরেও এঁদের চুরির অভ্যাস যায় না। তবে গঙ্গা জল এঁদের যম। এঁদের তাড়াতে গঙ্গা জল ছিটোলেই হবে। এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

ছবি: সংগৃহীত

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement