দশ মহাবিদ্যা হল হিন্দু ধর্মের তান্ত্রিক শাখার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা। এরা হল দশটি দেবীর সমষ্টি যাঁদের মহাসিদ্ধি ও মহাশক্তির প্রতীক হিসেবে পূজা করা হয়। এই দেবীরা মহাশক্তির বিভিন্ন রূপের প্রতিনিধিত্ব করেন এবং তাঁদের প্রত্যেকের নিজস্ব বিশেষ শক্তি ও গুণাবলি রয়েছে।
দশ মহাবিদ্যার নাম সাধারণত নিম্নলিখিত ক্রমানুসারে উল্লেখ করা হয়:
কালী: সময় ও মৃত্যুর দেবী। তিনি সর্বনাশিনী, কিন্তু একইসঙ্গে জীবনদাত্রীও।
তারা: তিনি একাধারে ক্রোধ এবং সৃষ্টির দেবী। তিনি মহাবিশ্বের সৃষ্টি ও ধ্বংসের শক্তিকে প্রতিনিধিত্ব করেন।
ত্রিপুরা সুন্দরী: সৌন্দর্য এবং সৃষ্টিশীলতার দেবী। তিনি মহাবিশ্বের তিনটি লোককে শাসন করেন।
ভুবনেশ্বরী: সমস্ত জগতের রানী। তিনি মহাবিশ্বের সকল শক্তিকে নিজের মধ্যে ধারণ করেন।
ভৈরবী: ভয়ানক এবং রাগান্বিতা দেবী। তিনি মহাবিশ্বের নানা বিপর্যয় ও দুর্ঘটনার প্রতিনিধিত্ব করেন।
ছিন্নমস্তা: এক অত্যন্ত ভয়ানক দেবী যিনি নিজের মাথা কেটে ফেলেছেন। তিনি মহাবিশ্বের অসীম শক্তির প্রতিনিধিত্ব করেন।
ধূমাবতী: ধূমকেশী দেবী। তিনি মহাবিশ্বের ধ্বংস ও পুনর্জন্মের প্রতিনিধিত্ব করেন।
বগালামুখী: বাকশক্তির দেবী। তিনি মহাবিশ্বের সকল ভাষা ও বাক্যকে নিজের মধ্যে ধারণ করেন।
মাতঙ্গী: তিনি সিদ্ধির দেবী। তিনি মহাবিশ্বের সকল সিদ্ধি ও সাধনাকে প্রতিনিধিত্ব করেন।
কমলাত্মিকা: সমৃদ্ধি ও সুখের দেবী। তিনি মহাবিশ্বের সকল ধনসম্পদ ও সুখকে নিজের মধ্যে ধারণ করেন।
দশ মহাবিদ্যার গুরুত্ব: দশ মহাবিদ্যা তান্ত্রিক সাধনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। তাঁদের পূজা করার মাধ্যমে সাধকরা মহাশক্তি লাভ করতে পারেন। এবং মোক্ষ প্রাপ্তিও ঘটতে পারে। এই দেবীরা মহাবিশ্বের সকল শক্তিকে নিজের মধ্যে ধারণ করেন এবং তাঁদের আরাধনা করে সাধকরা এই শক্তিকে নিজের জীবনে আনতে পারেন। এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।