প্রতীকী ছবি।
এ মন্দিরে ভক্তিভরে পুজো দিলে পূর্ণ হবে সন্তানলাভের আকাঙ্ক্ষা। এমন বিশ্বাসে সারা ভারত থেকেই সন্তানহীন দম্পতিরা আসেন পুজো দিতে। সতীর ৫১ পীঠের অন্যতম উত্তরাখণ্ডের এই চূড়ামণি দেবীর মন্দির। স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা, সতীর বিয়ের 'চূড়া' এসে পড়েছিল এখানে। দেবীর মন্দির গড়ে উঠেছে সেখানেই। অনেকের বিশ্বাস, উত্তরাখণ্ডের রুড়কি জেলার চুড়িওয়ালা গ্রামে এই মন্দিরে সতীর আশীর্বাদ রয়েছে।
এ মন্দিরের আসল আকর্ষণ কিন্তু অন্য জায়গায়। এখানকার ধর্মীয় রীতি হল মন দিয়ে চুরি করা! দেবীর পুজো করতে গেলে চুরি করতেই হবে এখানে! দেবীমূর্তির পায়ের কাছে লুকোনো থাকে কাঠের পুতুল। সুস্থ সন্তান লাভের মনোবাঞ্ছা পূরণে সেই পুতুল চুরি করতে হবে সকলের নজর এড়িয়ে। তাকেই পুজোর আচার হিসেবে ধরা হয়।
এখানেই শেষ নয়। পুজো দেওয়ার পর সত্যিই সন্তান জন্ম নিলে চুরি করে নিয়ে যাওয়া কাঠের পুতুল ফেরত দিয়ে যেতে হয়। সন্তানের নিরোগ ও দীর্ঘ জীবনের কামনায় তখন আরও একটি কাঠের পুতুল দিয়ে পুজো দিয়ে যান পূণ্যার্থীরা।
জাগ্রত দেবী চূড়ামনির মন্দিরে ভক্তের বিরাম নেই। দূর দূর থেকে পূণ্যার্থীরা আসেন এখানে 'চুরি করতে'! সারা বছরই ভিড় লেগে থাকে। কথিত ১৮০০ শতকে রাজা লান্ধুয়ারা এখানকার জঙ্গলে শিকার বেরিয়েছিলেন। প্রাচীন এই চূড়ামনি মন্দিরে সে সময়ে তিনি দেবী পিণ্ডির দর্শন পান। নিঃসন্তান রাজাকে সন্তানলাভের আশীর্বাদ করে অদৃশ্য হয়ে যান দেবী। হতবাক রাজা দেখেন সেই জায়গায় একটি কাঠের পুতুল পড়ে রয়েছে। সেই পুতুল নিয়ে রাজধানীতে ফিরে আসেন রাজা লান্ধুয়ারা। ঠিক এক বছর পরে মহারানীর কোল আলো করে আসে রাজবংশের উত্তরাধিকারী। সেই থেকেই সন্তান লাভের আশায় এই মন্দিরে কাঠের পুতুল চুরি করার প্রথা শুরু।
(এই মন্দির সম্পর্কে প্রচলিত কাহিনিতে জীবন যাপন নিয়ে যে দাবি করা হয়ে থাকে, তা নিয়ে আনন্দবাজার অনলাইন দায়ী নয়।)
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।