আড্ডা আর বাঙালি। একপ্রকার সমনাম। বাঙালির আড্ডা বসে যেখানে সেখানে। খেলার মাঠে, পাড়ার রকে, চায়ের দোকানে,কফি হাউসেসর্বত্র। অন্দরমহলে বাঙালি সাধারণত বেছে নেয় বসার ঘরকে। খুব কাছের বন্ধু কিংবা আত্মীয় হলে শোবার ঘরের খাট,নিদেনপক্ষে ঘরের মেঝে।বাঙালির আড্ডা জমতে পারে যে কোনও মজলিশি পরিবেশে। তাই অন্দরসজ্জায় আলাদা করে বাসর ঘরেরগুরুত্ব পুরোন যুগ থেকেই ছিল। ইদানীং আর একটু আধুনিক হয়ে তা-ই আড্ডাঘর বা ডেন-এর রূপ নিয়েছে।
এই আড্ডাঘরের মাপ বড় কিংবা ছোট, যেমন ইচ্ছে হতে পারে। সোফাসেট, সঙ্গে একটা ছোটখাটো লাইব্রেরি,বাচ্চাদের জন্য একটা প্লে স্টেশন,দেওয়ালে এলসিডি বা প্রজেক্টর কিংবা সিনেমা দেখার কোনও রকম ব্যবস্থা, একটা ইলেকট্রিক কেটল,চা-কফির ব্যবস্থা। এটুকুই চাই আরকি।
একটু বুদ্ধি খাটালে বাড়ি কিংবা ফ্ল্যাটের অতিরিক্ত ঘরটাকে আড্ডাঘর বানিয়ে তোলা যায়। ছাদের ঘর কিংবা মেজেনাইন ফ্লোরের ঘরও আড্ডাঘরের জন্যে বেশ ভাল। এই ঘরের মেঝে নিয়েও অন্যরকম ভাবনাচিন্তা চলতে পারে। সলিড কাঠের মেঝে বা উডেন ফ্লোরিং আড্ডাঘরের জন্যে ভাল পছন্দ হতে পারে। আলো হবে পরিমিত এবং রিফ্লেকটেড। সরাসরি আলোর উৎস যেন দেখা না যায়। খুবই অল্প আলোয় স্বপ্নপুরী হয়ে উঠবে আড্ডাঘর।
তবে হ্যাঁ, এ কথাটা মনে রাখা দরকার, যথেষ্ট আলোর ব্যবস্থা যেন থাকে আড্ডাঘরে। প্রয়োজন হলে সেগুলো জ্বালিয়ে নিলেই হবে। না প্রয়োজন হলে জ্বালাবেন না। সে ক্ষেত্রে অল্প আলোতেই আড্ডা জমবে ভাল। কিন্তু আলোর অভাব রেখে এই ঘর তৈরি করবেন না।
আড্ডা ঘরে বইয়ের লাইব্রেরির পাশেই থাকবে পড়ার ব্যবস্থা— স্টাডি টেবিল। কিংবা একটা আরামকেদারাও থাকতে পারে বইয়ের আলমারির পাশে। সঙ্গে থাকতে হবে একটা ডাউন লাইট। সব আলো বন্ধ রেখে ডাউন লাইটের আলোয় বই পড়তে বেশ ভালই লাগবে।
আরও পড়ুন :স্তম্ভই ধরে রাখে ঘর, কেমন হবে তার আধুনিক নকশা
এই ঘরের রংও রাখুন হালকা, যা চোখে লাগে না। ওয়ালপেপার ব্যবহার করলে তাতে নকশা রাখুন পাহাড়, সমুদ্র বা কোনও প্রাকৃতির নিসর্গের। কোনও শিল্পীকে দিয়ে আঁকিয়েও নিতে পারেন।
বাঙালির আড্ডা সিনেমা ছাড়া হয় নাকি? তাই স্মার্ট টিভি রাখা যেতেই পারে আড্ডা ঘরে।ফলস সিলিংয়ে সারাউন্ডিং সাউন্ডের ব্যবস্থা করা থাকলে বেশ হয়। থ্রি ডি সিনেমার সঙ্গে ডিজিটাল সাউন্ড এফেক্টেশিশুরা কেন, বড়রাও আনন্দ পাবে। ইলেকট্রিশিয়ান ও আর্কিটেক্টের সাহায্যে মাল্টিপ্লেক্সের আনন্দও কিন্তু হাজির করা যেতে পারে আড্ডা ঘরে।
আরও পড়ুন:পুজোর আগেই সন্তানের ঘরকে সাজিয়ে তুলুন এ ভাবে
আড্ডায় চা বা কফি মাস্ট। আর সে চা যদি আড্ডা দিতে দিতেই নিজেরা তৈরি করে নেওয়া যা, তাহলে তো কথাই নেই। একটা ইলেকট্রিক কেটল এবং চা করার সমস্ত সরঞ্জাম রেখে দেবেন আড্ডাঘরে। আড্ডা চলুক সঙ্গে চলুক চাপানউতোর।