পুজো মানেই কত লাগামছাড়া খরচ। কিন্তু তার মধ্যেও ঘর সাজানোর বিষয়টাকে ভুললে চলে নাকি? বাজেট কম? পরোয়া নেই। কম খরচেও পুজোর আগে ঘরদোর ঝলমলে করে ফেলতে পারেন। দেখে নিন কী ভাবে?
প্রথমেই খুব দামি কুশন কভার বা চাদরের বদলে বেছে নিন উজ্জ্বল রঙের মাঝারি দামের চাদর ও কুশন কভারের সেট। আলাদা আলাদা ভাবে কিনলে অনেক সময়ই বেশি খরচ হয়ে যায়। তাই এক সঙ্গে কিনুন, যাতে পকেটে খুব চাপ না পড়ে। আর উজ্জ্বল রঙের সাহায্যে ঘরদোর অনেক বেশি সাজানো গোছানো মনে হয়।
ঘরকে পুজোর দিনের আড্ডার জন্য আরও উজ্জ্বল ও সুন্দর দেখানোর জন্য ঘরের আলো বদলে ফেলুন। হাতে বানানো বেতের ল্যাম্প হোল্ডার বা আলোর স্ট্যান্ড কিনে নিন। তাতে হলদে আলোর বাল্ব লাগিয়ে নিন। তাতেই দেখবেন কেল্লাফতে।
বাড়িতে এ দিক ও দিক প্রচুর দেওয়ালে টাঙানোর সামগ্রী বা ছবি ইত্যাদি তোলা রয়েছে? এ বার সেগুলি বের করে ঘরের দেওয়াল সাজিয়ে ফেলুন। হস্ত শিল্প মেলা থেকে কেনা নানা রকমের হাতের কাজের এমন জিনিসের সংগ্রহ প্রায় সবার বাড়িতেই থাকে।
পাশাপাশি ছোট বড় নানা মাপের রঙবেরঙের ছবিও থ্যাকে। তা দিয়ে বসার ঘর ও শোওয়ার ঘরের দেওয়াল সাজিয়ে ফেলুন।
আয়নার ব্যবহার করে খুব সহজেই ঘরের ভোল বদলে ফেলা যায়। এর জন্য যে খুব দামি ফ্রেমের আয়না দরকার, তা কখনওই নয়।
বাড়িতে পুরনো কাঠের কারুকাজ করা আয়না থাকুক, কী দীঘার সমুদ্রসৈকত থেকে কিনে আনা ঝিনুকের ফ্রেমের আয়না, সব কিছু দিয়েই অনায়াসে ঘর সাজিয়ে ফেলা যায়। বসার ঘরের আলোর প্রতিফলন এতে আরও বেড়ে যায়, ঘর অভিজাত ও উজ্জ্বল দেখায়।
বসার ঘরের টিভি ইউনিট সাজিয়ে নিন। ছোট ছোট শো পিস, যা সারা বছর আপনার ঘরে রাখেন না, তা বের করে সাজিয়ে নিন। এমন কি ছবির ফ্রেমের ছবিও বদলে নিন। উৎসবের আমেজে নিজেদের নতুন কোনও মুহূর্ত ফ্রেমবন্দি করে রাখুন টিভি ইউনিটের পাশে।
গাছ দিয়ে ঘর সাজানোর পদ্ধতি নতুন নয়। এর জন্য আলাদা করে কোনও কেনাকাটারও দরকার পড়ে না। বাড়ির ছাদে বা বাগানে হওয়া ছোট বড় গাছ, বনসাই দিয়েই চোখ বুজে ঘর সাজানো যায়।
তবে পুজো উপলক্ষে অন্য রকম কিছু করতে চাইলে আশেপাশের কোনও হাতের কাজের দোকানে চলে যান। খুঁজে পেয়ে যাবেন হাতে আঁকা নকশাদার নানা টব, যা উৎসবের দিনে ঘর সজানোর জন্য একেবারে মানানসই।
বসার ঘরের সোফাসেট ভাল করে পরিষ্কার করে নতুন কোনও সোফা কভার পরিয়ে রাখুন। যাতে ঘরটা অন্য রকম দেখায়। বেশ কিছু কুশন রাখুন। অতিথিদের আরামের জন্য।
ঘরের কার্পেট আর পাপ বহুদিন ধরে বদলাবেন ভাবছেন, কিন্তু সময় হয়ে উঠছে না? এই পুজোর আগেই নতুন পাপোশ আর কার্পেট নিয়ে নি। দুধসাদা পশমের মতো কার্পেট ভাল করে অনলাইনে খুঁজলেই পেয়ে যাবেন। এর সাহায্যে খুব সহজে আপনার ঘর বড় আর অভিজাত দেখাবে পুজোর সময়।
বন্ধুদের আড্ডার জন্য নিজের ঘরেই একটা ধারে সোফার বদলে মাটিতে ফরাশ পেতে নিন। উজ্জ্বল চাদরে মুড়ে সেই ফরাশটাকে ব্যবহার করুন বসার জায়গা হিসেবে। রাখুন রঙবেরঙের নানা নকশা করা, আলাদা আলাদা ধরনের কুশন রাখুন তার ওপর। ছোট পাশ বালিশ বা কোল বালিশও রাখতে পারেন। সঙ্গে উষ্ণ হলুদ আলো।
বসার ঘরে আড্ডার আমেজ আরও ভাল করে বজায় রাখতে বেতের মোড়া আর ফোল্ডিং কাঠের চেয়ার ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনার ঘর হয়ে উঠবে খুব নিজস্ব ও সুন্দর।
মাঝে রাখা টেবিল, এমনকি ঘরের অন্যান্য কোণায় কাজ করা বা কাঁচের, পিতলের ফুলদানি রাখুন। তাতে মনে হলে দোকান থেকে কিনে আনা প্লাস্টিকের সুন্দর সুন্দর উজ্জ্বল রঙের ফুল রাখতে পারেন। রোজ বদলানোর ঝামেলা বা খরচ কোনওটাই না হলেও আপনার ঘর সাজানোয় কোনও খামতি থাকবে না।
ঘরময় ফুলেল সুগন্ধ ও পুজোর আমেজ ছড়িয়ে দিতে কিন্তু আসল ফুলের জুড়ি নেই। তাই ঠাকুর ঘরের পাশাপাশি ঘরের মাঝের টেবিলের উপরেও কাঁচের বা পিতলের বাটিতে করে তাজা ফুল রাখুন। যেমন, জুঁই, বেল বা গোলাপ। গাঁদা ফুলের মালা দিয়ে ঘরের দরজার উপরের অংশ সাজিয়ে নিন। পুজোর দিনের জন্য আদর্শ।